বর্তমান নির্বাচন কমিশন সরকারের লেজুরবৃত্তি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। এই নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করাই বিএনপির আন্দোলনের অংশ বলেও তিনি জানান।

আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক মুক্ত আলোচনায় আবদুল্লাহ আল নোমান এসব কথা বলেন।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের মুক্তির দাবিতে এই মুক্ত আলোচনার আয়োজন করে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ নামের সংগঠন।

আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘জনসাধারণ যখন রাস্তায় নামবে তখন আমাদের নেত্রী বের হবেন। আমরা জয়লাভ করতে পারব। আমরা ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনব, খুলনা মার্কা নির্বাচন আর হতে দেব না। এজন্য এই নির্বাচন কমিশনকে বাতিল করে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ইস্তফা দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এটা আমাদের লক্ষ্য, আন্দোলনের একটা অংশ।’

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘খুলনার নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার জালভোটের পরিবর্তে ভোটদখল স্তরে চলে গেছে। এই অবস্থাকে সহযোগিতা করছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ। সরকার যা বলবে সেটাই কমিশন করবে। কমিশনের আইনে এবং সংবিধানে কমিশনের যে শক্তি, তাদের যে নির্বাচন পরিচালনায়, তারা যে নেতৃত্বপ্রদানকারী, সেটা তারা করছে না। তারা সরকারের লেজুরবৃত্তি করছে।’

আবদুল্লাহ আল নোমান আরো বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি আওয়ামী লীগ উলঙ্গ হয়ে গেছে। এটা বলার কারণ, যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে তারা লজ্জাবোধ করে না। তারা লজ্জাহীন, তারা উলঙ্গ। কাজেই আজকের এই উলঙ্গ সরকারকে শায়েস্তা করার জন্য, ভোটাধিকার বাস্তবায়নের জন্য, আন্দোলন সংগ্রামের কোনো বিকল্প নাই। খালেদা জিয়া, শফিউল বারী বাবু অথবা শিমুল বিশ্বাস এদের কারাগারে নিয়েছে কারাগার থেকে বের করার জন্য নয়। কারাগারে নিয়ে যায় শাসক, আর বের করে জনতা। আজকে সেই জনতা নেত্রীকে বের করবে।’

নোমান বলেন, ‘হাতে একটা লাঠি আর ইটের টুকরা ছিল। সেটা দিয়েই আইয়ুব খানের স্বৈরশাসন, ইয়াহিয়া খান, এরশাদকে পরাজিত করেছি। পরাজিত করেছি আরো অনেক শাসকগোষ্ঠীকে। আজকের পরিস্থিতিও ভিন্ন নয়। রাস্তায় না নামলে কোন আন্দোলনই সফল হবে না। আর রাস্তায় নেমে নেতৃত্ব বিএনপিকেই দিতে হবে। আমাদের কথা কম, কাজ অনেক বেশি। এটা আমরা সবাই অনুভব করছি। কিন্তু প্রয়োগে আছি কি না জানি না। আলোচনারও বেশি দরকার নেই।’

বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘কিছুদিন আগে আপনারা দেখেছেন একটা আইন প্রণীত হয়েছে যে, যখন মনে করবে দুর্যোগ আসছে, সমস্যা হচ্ছে, তখন সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা সমস্ত বাহিনী ও অরগানগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। তখন তারা যে ডিসিশন নেবে সেটা কার্যকর হবে। আর সেই ডিসিশন দিবেন দেশের প্রধান নির্বাহী অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী তাঁর যে সাংগঠনিক ক্ষমতা আছে এগুলো ছাড়াও তিনি যেকোনো সময় আমাদের ওপরে সাংবিধানিকভাবে সেটা চাপিয়ে দিতে পারবেন।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে এবং দপ্তর সম্পাদক গোলাম সরোয়ারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো কথা বলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন, জিনাফের সভাপতি লায়ন মিয়া মো. আনোয়ার, ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমা, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারি প্রমুখ।