কোচের কাছে রোনালদো হলেন ‘পোর্ট ওয়াইন’!
পর্তুগালের এক ধরনের বিশেষ ওয়াইনকে বলা হয় পোর্ট ওয়াইন। যত সময় যায়, ততই যেন খুলতে থাকে তার স্বাদ। পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও যেন ঠিক সেই ওয়াইনেরই মতো। বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রতিনিয়ত নিজেকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন এ সময়ের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার। পর্তুগালের কোচ ফার্নান্দো সান্তোস তাই রোনালদোকে দেখছেন পোর্ট ওয়াইনের মতো করেই।
রোনালদো এবারের বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছেন ৩৩ বছর ছাড়িয়ে। যে বয়সে অন্য খেলোয়াড়দের ফর্ম পড়তির দিকে যেতে থাকে, সে বয়সে রোনালদো যেন হয়ে উঠছেন আরো তরুণ। বয়সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আরো বেশি পরিপক্ব হয়ে উঠছেন, দলকে একাই টেনে নিচ্ছেন সামনের দিকে। দুই ম্যাচে চার গোল করে দলের পর্তুগিজ কোচ ফার্নান্দো সান্তোসের চোখের মণি এখন রোনালদো। শিষ্যের এমন দারুণ পারফরম্যান্সে মুগ্ধ কোচ রোনালদোকে ‘পোর্ট ওয়াইন’ আখ্যা দিয়েছেন, যা যত সময় গড়াতে থাকে ততই সুপেয় হয়।
‘বি’ গ্রুপের প্রথম ম্যাচে ২০১০ সালের বিশ্বকাপজয়ী স্পেনের বিপক্ষে মুখোমুখি হয়েছিল রোনালদোর পর্তুগাল। কে জানত ফেভারিট স্পেনকে একাই রুখে দেবেন রোনালদো! এবারের বিশ্বকাপের আসরের প্রথম হ্যাটট্রিকের মাধ্যমে তারকাসমৃদ্ধ স্পেনের বিপক্ষে ৩-৩ গোলের ব্যবধানে ড্র করতে সমর্থ হয় রোনালদো। পরের ম্যাচে রোনালদোর একমাত্র গোলে মরক্কোকে হারিয়ে নকআউট পর্বে ওঠার জোরালো সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখে রোনালদো।
মরক্কোর বিপক্ষে পর্তুগালের জয়ের ম্যাচে দারুণ একটি কীর্তি গড়েছেন রোনালদো। অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপে ছয় গোল করেন এই পর্তুগিজ তারকা। এই কীর্তি গড়ে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার পাশে চলে গেলেন তিনি। চলমান বিশ্বকাপে চারটি এবং এর আগে তিন বিশ্বকাপে তিনটি গোল করেছিলেন তিনি। ধারাবাহিক চার বিশ্বকাপ আসরে গোল পেয়ে তিনি ব্রাজিলের কিংবদন্তি পেলের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন। এ ছাড়া পুসকাসের ৮৪ গোলকে পেছনে ফেলে ৮৫ গোল নিয়ে ইউরোপিয়ান ফুটবলার হিসেবে পর্তুগিজ অধিনায়ক গড়লেন সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড।
শিষ্যের এমন দারুণ কীর্তিতে স্বাভাবিকভাবেই বেশ উৎফুল্ল কোচ সান্তোস। তিনি বলেন, ‘রোনালদো আগের চেয়ে আরো উন্নতি করছে। সমসাময়িক অন্য খেলোয়াড়ের তুলনায় সে এগিয়ে। নিজের সামর্থ্য সম্পর্কে তার পরিপূর্ণ ধারণা আছে এবং সে জানে তাকে কী করতে হবে। তিন-চার বছর আগের রোনালদোর চেয়ে এখন সে আরো বেশি পরিণত।’