কাল দুদকে যাচ্ছে বিব্রত ইসি!
৩৩ মামলার আসামি আবু সালেক নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনস্থ একজন কর্মী ছিলেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দাবি করলেও সেই তথ্য অসত্য বলে মন্তব্য করেছে ইসি। গণমাধ্যমে দুদকের দেওয়া ভুল তথ্যে বিব্রত হয়ে আগামীকাল বুধবার বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে দুদকের কার্যালয়ে যাচ্ছে ইসির একটি টিম।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে এই তথ্য জানান।
সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আগামীকাল বুধবার তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল দুদকে যাবেন বিষয়টি নিয়ে ভালোভাবে জানতে। আমরা বলছি, আবু সালেক কখনোই ইসির অধীনস্ত কর্মকর্তা ছিল না। দুদক বলছে সে এখানকার কর্মকর্তা। তাহলে এখানে কোথাও একটা ঝামেলা আছে। হতে পারে ভুল বোঝাবুঝির ব্যাপার। বিষয়টি আসলেই কী সেটা জানতেই মূলত দুদকে যাওয়া।’
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বলেন, ‘কাল দুদক থেকে তথ্য জেনে এসে আমরা বিষয়টি কমিশনে জানাব। এরই মধ্যে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদকে জানানো হয়েছে। দুদক যদি সঠিক তথ্য না দিতে পারে তাহলে আমরা লিখিতভাবে দুদককে চিঠি দেব। চিঠিতে গণমাধ্যমে তাদের বরাত দিয়ে যে অসত্য তথ্য প্রচারিত হয়েছে সে বিষয়েও জানাব।’
তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলটি কাল বেলা ১১টার দিকে দুদকে যাবে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের অপারেশন প্লানিং এ্যান্ড কমিউনিকেশনের ইনচার্জ মাহমুদ আরাফাতের নেতৃত্বে দলটি যাবে। বাকি দুজন হলেন এনআইডির বৈধ ও সঠিকতা যাচাইকরণ ইউনিটের সহকারী পরিচালক মুহা. সারওয়ার হোসেন ও কমিনিউকেশন কনসালটেন্ট শাখাওয়াত হোসেন।
মাহমুদ আরাফাত এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা মূলত জানা-বোঝা করতেই দুদকে যাব। আমাদের কাছে সালেককে নিয়ে তথ্য চেয়েছিল, আমরা দুদককে জানিয়েছি সে ইসির সঙ্গে জড়িত ছিলো না। তারপরও কেন তারা বলছে, তাদের এই কথার ভিত্তি কি, ভিত্তি না থাকলে কেন বলছে এসব জানতেই আসলে আমরা যাব সেখানে।’
সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির রহস্য উদঘাটনে গত বছরের ৭ আগস্ট আবু সালেক ও জাহালমসহ মোট পাঁচজনের বিষয়ে ইসির কাছে তথ্য চেয়ে দুটি চিঠি দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা। চিঠিতে পাঁচজনের পৃথক পৃথক তথ্য চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে আবু সালেক নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ে এবং কমিশনের কোনো প্রকল্পে কর্মরত ছিলেন বা আছে কিনা জানতে চাওয়া হয়।
এরপর ১৪ আগস্ট দুদকের দেওয়া চিঠির জবাবে ইসি জানিয়েছিল, ‘জনাব আবু সালেক বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ে এবং কমিশনের কোনো প্রকল্পে কর্মরত ছিলেন বা আছে কিনা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট জনবল ও আইডিইএ প্রকল্পের মানবসম্পদ শাখায় তথ্য চাওয়া হয়। প্রাপ্ত তথ্যানুসারে উক্ত নামের কোনো ব্যক্তি অতীতে বা বর্তমানে কোনো কালেই কর্মরত ছিল না/নেই।’
ইসির দেওয়া তথ্যের পরও গত ৬ ফেব্রুয়ারি দুদক কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আবু সালেক এক সময় এনআইডি কার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) প্রকল্পে কাজ করতেন। সেখান থেকেই কীভাবে আইডি কার্ড জাল করা যায় সেসব রপ্ত করেছেন। জাল পরিচয়পত্র তৈরি করে তিনি শুধু ছবি পরিবর্তন করে ব্যাংকে ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ঘটান।