ভৈরবে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি প্রদান
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পরিষদের রাজস্ব তহবিল থেকে পাওয়া অর্থে এই বৃত্তি দেওয়া হয়। উপজেলার ১৮২টি সরকারি প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ৭৭টি বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি থেকে একজন করে ছাত্র এবং একজন ছাত্রীকে এই বৃত্তি দেওয়া হয়।
প্রাথমিক পর্যায়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে এক হাজার টাকা এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীকে দুই হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। উপজেলা প্রশাসন ওই বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত সাদমীনের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ওই অনুষ্ঠান হয়। এতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. সায়দুল্লাহ মিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে বৃত্তির অর্থ তুলে দেন।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনোয়ারা বেগম, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ শাহরিয়ার মেনজিস, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আহমেদ, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জলি বদন তৈয়বা, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার স্বপ্না বেগম ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নাদিরা বেগম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ মো. সায়দুল্লাহ মিয়া বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের সরকার একযোগে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করে দেশের শিক্ষক ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে মর্যাদা দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শ্রেণির শিক্ষার্থীর মধ্যে বছরের প্রথমদিন বিনামূল্যে বই তুলে দিয়ে বিশ্বে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। শিক্ষা উপকরণসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার ভিতকে মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন। শিক্ষকদের বেতন দফায় দফায় বাড়িয়ে তাদের জীবনমানকে সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়েছেন। শিক্ষা ব্যবস্থার নানা পদক্ষেপের অংশ আজকের এই বৃত্তি। গত তিন বছর যাবত ভৈরবে চালু করা হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ শাহরিয়ার মেনজিস বলেন, শুধু শিক্ষা উপকরণ নয়, অর্থের জন্য যাতে কোনো শিক্ষার্থীর শিক্ষা থেমে না যায়, এই লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ। যা বাংলাদেশের খুব কম উপজেলাতেই চালু হয়েছে। এই বৃত্তি প্রদান ব্যবস্থা চালু করায় তিনি ভৈরব উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত সব প্রতিনিধিকে ধন্যবাদ জানান।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে নানামুখী প্রোগ্রাম প্রণয়ন করছে। কিন্তু এইসবকে সুচারুরূপে বাস্তবায়ন করতে হলে শিক্ষক ও অভিভাবকদের আন্তরিক সহযোগিতার প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন নিয়মিত বিদ্যালয়ে আগমণ এবং প্রতিদিনের পাঠ শিক্ষা এবং আদায়ে তিনি শিক্ষক ও অভিভাবকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ইউএনও বর্তমান সরকারকে শিক্ষাবান্ধব সরকার আখ্যা দিয়ে বলেন, সরকার যথাসাধ্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে চলেছে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে। এখন বেশি প্রয়োজন শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সমন্বিত উদ্যোগ। শিক্ষাকে সব উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে ভেবে নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাই কেবল পারবে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করতে। এ ক্ষেত্রে তিনি সমাজের প্রত্যেকটি মানুষকে শিক্ষার উন্নয়নে যার যার অবস্থান থেকে সরকারের পাশে এসে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।