আবরারকে মারধরের সময় কয়েকটি বাড়ি মারেন মনির
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বীকে শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে মারধরের একপর্যায়ে স্টাম্প দিয়ে কয়েকটি বাড়ি মারেন মো. মনিরুজ্জামান মনির।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরাফুজ্জামান আনসারির খাসকামড়ায় দেওয়া জবানবন্দিতে মামলার ৬ নম্বর আসামি ও বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাহিত্য সম্পাদক মনির এ স্বীকারোক্তি দেন। মামলার একটি তদন্ত সূত্র এ কথা নিশ্চিত করেছেন।
মনিরের জবানবন্দির বরাত দিয়ে তদন্ত সূত্রটি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বড় ভাইদের নির্দেশে আমিসহ কয়েকজন আবরার ফাহাদকে ১০১১ নম্বর রুম থেকে ডেকে আনি। এরপর আবরারকে যখন ২০১১ নম্বর রুমে এনে মারধর করা হচ্ছিল সে সময় স্টাম্প দিয়ে আমিও কয়েকটি বাড়ি মারি।’
এরপর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবরার হত্যা মামলার আসামি শামসুল আরেফিন রাফাতকে সাত দিনের রিমান্ড ও আসামি মো. আকাশ হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক আসামি রাফাতকে ফের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং আসামি আকাশকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
স্বীকারোক্তি দেওয়া আসামি মনির শেরেবাংলা হলের ছাত্র। তিনি ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ভাংগাড়ীপাড়ার মো. মাহতাব আলী ও এলিজা বেগমের ছেলে। রিমান্ডে পাঠানো আসামি রাফাত মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় পরের দিন ৭ অক্টোবর আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ চকবাজার থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১২ জনকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে আজকে ১৫ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি এ এস এম নাজমুস সাদাতকে দিনাজপুর থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। মামলার এজাহারে তাঁর ঠিকানা ও বাবা-মায়ের নাম অজ্ঞাত লেখা আছে। তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচ ও শেরেবাংলা হলের ছাত্র।
এদিকে আবরার হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এর আগে আরো পাঁচজন জবানবন্দি দিয়েছেন। এঁরা হলেন মামলার ৫ নম্বর আসামি বুয়েটের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, ৭ নম্বর আসামি ও বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, ৩ নম্বর আসামি ও বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার , ৯ নম্বর আসামি মুজাহিদুর রহমান ও ৪ নম্বর আসামি মেহেদী হাসান রবিন।