ইংলিশদের স্বপ্ন ভেঙে সিরিজ অস্ট্রেলিয়ার
দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডকে ৩০০ ছাড়ানো ইনিংস উপহার দেন জনি বেয়ারস্টো। কিন্তু দুই অস্ট্রেলিয়ান তারকা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও অ্যালেক্স কেয়ারির সেঞ্চুরিতে ফিকে হয়ে গেল ইংল্যান্ডের সিরিজ জয়ের স্বপ্ন। দুই ব্যাটসম্যানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ইংলিশদের উড়িয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতল অ্যারন ফিঞ্চের দল।
গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ৯০ বলে ১০৮ রান করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন ম্যাক্সওয়েল। সিরিজ সেরার পুরস্কারও উঠেছে তাঁর হাতে।
ম্যানচেস্টারে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩০২ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। তবে ইংলিশদের শুরুটা ছিল খুব বাজে। ইনিংসের প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার জেসন রয়। মিচেল স্টার্কের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ হয়ে ফেরেন তিনি। পরের বলে জো রুটকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন স্টার্ক।
রানের খাতা খোলার আগে দুই ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় ইংল্যান্ড। সেখান থেকে দলকে পথ দেখান জনি বেয়ারস্টো। তৃতীয় জুটিতে অধিনায়ক ইয়াং মরগানকে নিয়ে ৬৭ রানের জুটি গড়েন তিনি। এরপর ২৩ রানে আউট হন মরগান। ৮ রানে সাজঘরে ফেরেন জস বাটলারও। এরপর স্যাম বিলিংসের সঙ্গে জুটি গড়েন বেয়ারস্টো। শত রানের এই জুটিতে প্রাণ ফেরে ইংলিশ শিবিরে।
এর মধ্যে ৫৭ রানে বিলিংসকে আউট করেন অ্যাডাম জাম্পা। বেয়ারস্টোর প্রতিরোধ ভাঙেন প্যাট কামিন্স। ফেরার আগে সেঞ্চুরিসহ ১১২ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ১২৬ বলে তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল ১২টি বাউন্ডারি ও দুটি ছক্কা দিয়ে। শেষের দিকে ক্রিস ওকসের দৃঢ়তায় অস্ট্রেলিয়াকে ৩০৩ রানের লক্ষ্য দেয় ইংল্যান্ড।
বল হাতে ৫১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন জাম্পা। দারুণ শুরু এনে দেওয়া বাঁহাতি পেসার স্টার্ক ৭৪ রান দিয়ে নেন সমান ৩টি উইকেট। ৫৩ রান দিয়ে একটি নেন কামিন্স।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে জোড়া সেঞ্চুরিতে ৪৯.৪ ওভারে জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের শুরুতে দ্রুত উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়াও। একে একে ফিরে যান অ্যারন ফিঞ্চ, মার্কাস স্টয়নিস, ডেভিড ওয়ার্নার। মাত্র ৭৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় সফরকারীরা।
সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন ম্যাক্সওয়েল ও কেয়ারি। ষষ্ঠ উইকেটে দুইশ রানের জুটিতে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেন দুজন। দুজনেই করেন সেঞ্চুরি। তাঁদের দারুণ ব্যাটিংয়ে জয় পেতে সমস্যা হয়নি অসিদের। সেঞ্চুরি করা ম্যাক্সওয়েল খেলেন নিজের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। ৯০ বলে ১০৮ রান করেন তিনি। তাঁর আগের সেরা ছিল ১০২ রান। এ ছাড়াও পৌঁছে যান তিন হাজার রানের মাইলফলকে। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন কেয়ারিও। নিজের আগের সেরা ৮৫ রান ছাড়িয়ে ১০৬ রান করেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩০২/৭ (রয় ০, বেয়ারস্টো ১১২, রুট ০, মরগান ২৩, বাটলার ৮, বিলিংস ৫৭, ওকস ৫৩*, কারান ১৯, রশিদ ১১*; স্টার্ক ১০-০-৭৪-৩, হেইজেলউড ১০-০-৬৮-০, কামিন্স ১০-০-৫৩-১, জ্যাম্পা ১০-০-৫১-৩, মার্শ ৬-০-২৫-০, ম্যাক্সওয়েল ৪-০-২৩-০)।
অস্ট্রেলিয়া: ৪৯.৪ ওভারে ৩০৫/৭ (ওয়ার্নার ২৪, ফিঞ্চ ১২, স্টয়নিস ৪, লাবুশেন ২০, মার্শ ২, কেয়ারি ১০৬, ম্যাক্সওয়েল ১০৮, কামিন্স ৪*, স্টার্ক ১১*; ওকস ১০-০-৪৬-২, আর্চার ৯-০-৬০-১, উড ৯-১-৪০-০, রুট ৮-০-৪৬-২, কারান ৬-১-৪০-০, রশিদ ৭.৪-০-৬৮-১)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ২-১ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ ও সিরিজ: গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।