গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট
গাজীপুরে বন্ধ হয়ে যাওয়া এক পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতন-ভাতাসহ পাওনাদি পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা আজ বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে মহাসড়কে অসহনীয় জাটজটের সৃষ্টি হয়।
ওই কারখানার জিএম (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) সৈয়দ মাহমুদ ফয়সাল জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে বাদে কলমেশ্বর এলাকার ক্রিয়েটিভ গ্রুপের ব্যান্ডো ফ্যাশন কারখানাটি ঈদের ছুটির একদিন পর বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ কারখানায় প্রায় দুই হাজার শ্রমিক রয়েছে। কারখানা বন্ধের নোটিশে ১২ আগস্ট শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে কলকারখানা অধিদপ্তরের টঙ্গী কার্যালয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক প্রতিনিধিদের বৈঠক ও একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
পরে ৩১ আগস্ট অপর একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে শ্রমিকদের পাওনা সার্ভিস বেনিফিট, নোটিশ পে ও অর্জিত ছুটির ভাতা পরিশোধের কথা উল্লেখ রয়েছে।
শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসলাম হোসেন ও শাহ মো. হারুন অর রশীদসহ স্থানীয়রা জানায়, আজ বুধবার সকাল থেকে শ্রমিকরা তাদের পাওনাদির দাবিতে কারখানার গেইটে জড়ো হতে থাকে। বেলা ১১টার দিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের আংশিক পাওনাদি পরিশোধের ঘোষণা দেয়। এতে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে এবং বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এ সময় তারা পুরো পাওনাদি পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার পার্শ্ববর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। অবরোধের কারণে ব্যস্ত ওই মহাসড়কের উভয়দিকে কয়েকশ যানবাহন আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধকারীদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
সন্ধ্যায় গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। আলোচনার এক পর্যায়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরা সন্ধ্যা ৭টার দিকে মহাসড়কের অবরোধ তুলে নেয়। প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা পর ওই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
কারখানার জিএম সৈয়দ মাহমুদ ফয়সাল আরো জানান, শ্রমিকদের মোট ছয় কোটি ১৮ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। কিন্তু সম্পূর্ণ টাকার ব্যবস্থা করতে না পারায় আজ শ্রমিকদের আংশিক পাওনা পরিশোধের ঘোষণা দেওয়া হয়। অবশিষ্ট টাকা আগামী ২৫ অক্টোবরের মধ্যে পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু শ্রমিকরা তা না মেনে বিক্ষোভ শুরু করে এবং মহাসড়ক অবরোধ করে। তবে কর্মচারীদের পাওনাদি এরই মধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে।