স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ
স্বামীর পরকীয়ার কথা জেনে যাওয়ায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় ঐশি খাতুন (২০) নামের এক গৃহবধূকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী জাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে ওই বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।
নিহত গৃহবধূ ঐশি সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়ার চর-আওতাপাড়া ঈশ্বরদী ইপিজেডের শ্রমিক মাহাবুল আলমের বড় মেয়ে। ঐশির আট মাস বয়সী জান্নাত নামের একটি মেয়ে রয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ, স্বামীর পরকীয়ার কথা ঐশি জেনে যাওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করেছেন স্বামী।
এ ঘটনায় গতকাল রাতে নিহত গৃহবধূ ঐশির মা সাহানারা বেগম নিজে বাদী হয়ে জামাইসহ পরিবারের সদস্যদের নাম উল্লেখ করে ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে ঐশির মা বলেন, “২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারি আমার মেয়েকে সলিমপুর ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামের জাহিদের সঙ্গে বিয়ে দেই। বিয়ের সময় মেয়ের সুখের জন্য নগদ টাকাও দিয়েছিলাম। তবু যৌতুকের জন্য জামাইসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রায়ই আমার মেয়ের ওপর নির্যাতন করত। পরে প্রায় তিন লাখ টাকা দেই। এরপর আবার এক লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল কিনে দেই। কিছুদিন আগে আমার মেয়ে টের পায় তাঁর স্বামীর ‘স্বভাব-চরিত্র’ ভালো না। এ নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। গত বৃহস্পতিবার রাতে জামাই জাহিদের মানিব্যাগে এক নারীর ছবি দেখে ঐশি প্রতিবাদ করে। এ কারণে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে তার স্বামী। এ বিষয়টি ঐশি আমাদের জানালে গতকাল শনিবার বিকেলে আমার ভাইয়ের ছেলেকে ওই বাড়িতে পাঠাই মেয়েকে আনতে। এ সময় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন আসতে বাধা দেয়। আমার ভাইয়ের ছেলে সেখান থেকে ফিরে এলে জামাই জাহিদ মোবাইল ফোনে গালিগালাজ করে। এরপর শারীরিক নির্যাতন করে আমার মেয়েকে মেরে ফেলার কিছুক্ষণ পর সন্ধ্যায় আমাদের বাড়িতে খবর পাঠায় যে, ঐশি গলায় ফাঁস নিয়ে মারা গেছে। আমরা তাদের বাড়ি থেকে খাটের ওপর অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে মেয়েকে উদ্ধার করে পাবনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসক আমার মেয়েকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ওরা আমার সহজ সরল মেয়েটিকে মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।’
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাসীর উদ্দিন জানান, এই গৃহবধূ মৃত্যুতে মেয়েটির মা বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’