সামনেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের আগে কেনাকাটা, ব্যবসা-বাণিজ্য, আর্থিক লেনদেন ও অর্থ স্থানান্তর বেড়ে যায়। সেইসঙ্গে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির ঘটনাও বাড়ে। তাই নাগরিকদের টাকা যাতে ছিনতাই না হয় সেজন্য নিরাপত্তা দিবে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

ডিএমপি বলছে, টাকা স্থানান্তর করার সময় যেকোনো শঙ্কাবোধ জাগলেই ডিএমপির সহায়তা নেওয়ার জন্য। আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঈদের সময় বেশি অর্থ লেনদেনের ফলে চুরি-ছিনতাই, দস্যুতাসহ মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টির অপতৎপরতাও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া করোনাকালে ঢাকার রাস্তাঘাট অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেকটাই ফাঁকা। একটু অসতর্কতার জন্য আপনার কষ্টে উপার্জিত অর্থ ছিনিয়ে নিতে পারে দুষ্কৃতকারীরা। তাই অর্থ বহন ও উত্তোলনে সতকর্তা অবলম্বন করুন। বড় অংকের অর্থ বহনের ক্ষেত্রে আপনার অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মানি এসকর্ট সেবা দিচ্ছে ডিএমপি।

মানি এসকর্ট সেবা যেভাবে পাবেন

ডিএমপি বলছে, সহায়তা প্রত্যাশী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট থানা অথবা পুলিশ কন্ট্রোলরুমে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হলো। উল্লেখ্য, পুলিশ এস্কর্ট সেবা প্রত্যাশী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে যানবাহনের ব্যবস্থা করতে হবে।

পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নম্বরসমূহ

ফোন : ৯৫৫১১৮৮, ৯৫১৪৪০০, ৫৫১০২৬৬৬, ০১৩২০০৩৭৮৪৫

এ ছাড়া প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা : ৯৯৯ এ কল করে আপনার প্রয়োজনীয় সহায়তা চান।

দুষ্কৃতকারীর হাত থেকে আপনার কষ্টে উপার্জিত অর্থের নিরপত্তা দিতে ডিএমপি কিছু পরামর্শ দিয়েছে। পরামর্শগুলো হলো-

১. বড় অংকের অর্থ একা বহন করবেন না। সঙ্গে একাধিক বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে রাখুন। আপনার অর্থ বহন সংক্রান্ত কোনো তথ্য আগেই অন্যকে জানানো থেকে বিরত থাকুন।

২. পায়ে হেঁটে অথবা রিকশায় অর্থ বহনের পরিবর্তে মোটরসাইকেল কিংবা গাড়িতে অর্থ বহন করুন।

৩. নগদ অর্থ বহনের আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যেন আপনার দোকান বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কেউ যেন দুষ্কৃতকারীদের তথ্য না জানিয়ে দেয়।

৪. দৈনিক নগদ অর্থ বহনের প্রয়োজন হলে মাঝে মাঝে ভিন্ন পথ ব্যবহার করুন যেন দুষ্কৃতকারীরা আগেই ওত পেতে থাকার সুবিধা নিতে না পারে।

৫. অর্থ বহনের সময় ব্যাগ এমনভাবে ব্যবহার করুন যেন বাইরে থেকে বোঝা না যায়। এতে দুষ্কৃতকারীরা প্রলুব্ধ হওয়ার সুযোগ পাবে না।

৬. বড় নোট ব্যবহারে সচেষ্ট হন।

৭. সব টাকা একসঙ্গে না রেখে বিভিন্ন জায়গায় যেমন- পকেটে, ব্যাগে, সঙ্গে থাকা ব্যক্তির কাছে ভাগ করে রাখুন।

৮. গলি পথ কিংবা নির্জন পথ ব্যবহারের পরিবর্তে অপেক্ষাকৃত ব্যস্ত সড়ক ব্যবহার করুন।

৯. ট্রাফিক সিগন্যাল বা জ্যামে পড়লে অতিরিক্ত সতর্ক থাকুন।

১০. সিসি ক্যামেরা আছে এমন ব্যাংকে লেনদেন করুন। ব্যাংক থেকে বের হওয়ার পর বুঝতে চেষ্টা করুন সন্দেহজনক কেউ আপনাকে অনুসরণ করছে কি না।

১১. বড় অংকের অর্থ পরিবহনের কাজটি রাতে না করে দিনেরবেলায় সম্পন্ন করার চেষ্টা করুন।

১২. এটিএম বুথে টাকা তুলতে গেলে বুথের ভেতরে কেউ আছে কি না নিশ্চিত হয়ে নিন। কেউ থাকলে তিনি বের হওয়ার পর আপনি বুথে প্রবেশ করুন।

১৩. এটিএম বুথের অভ্যন্তরে আর্থিক লেনদেনে ব্যবহৃত পিন নম্বরটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন।

১৪. সম্ভব হলে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফারের কাজটি চেকের মাধ্যমে সম্পন্ন করুন।

১৫. বড় অংকের টাকা পরিবহনে প্রয়োজনে পুলিশ এসকর্ট ব্যবহার করুন।