এনটিভি : ভালোবাসার ১৭ বছর
পদ্মার উত্তাল ঢেউ আর ঘূর্ণিপাকে স্পিডবোটটা উল্টে যেতে যেতে বেঁচে গেলাম। আতাউস সামাদ ভাই, আমাদের তখনকার সিইও বললেন, জীবনের এই গল্পগুলো দর্শককে জানাও। একটা অনুষ্ঠান করো। যাপিত জীবন। শান্তিরক্ষার কাজ দেখে ফিরছি কঙ্গোর কিনশাসা থেকে। উগান্ডার এনটেবে হয়ে কেনিয়ার মোম্বাসায় এসে গভীর রাতে বিমানের উড্ডয়ন-চাকা ফুস। টায়ারের নাইট্রোজেন ফুরিয়ে গেছে। ঘটতে পারত বড় দুর্ঘটনা। অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় ফেরা। নিউজ কভার করতে কুষ্টিয়া যাচ্ছি। গভীর রাতে ডাকাতের কবলে। সড়কে গাছ ফেলা। ড্রাইভার ফজলুর বুদ্ধিমত্তায় সে যাত্রায় রক্ষা। এনটিভির সঙ্গে নিজের এমন এলোমেলো কত গল্প একাকার। কেউ কেউ মজা করে বলেন, আপনার তো শেকড় গজিয়ে গেছে এনটিভিতে। এত বছর টানা কাজ করার পর শেকড়টা যেন আরো গভীরে অনুভব করি। এ সত্যিই এক অনন্য অভিজ্ঞতা। এর মধ্যে আছে সুখের স্মৃতি। আছে বেদনারও। হারিয়েছি এখানে অনেক প্রিয় সহকর্মী। কেউ চিরবিদায় নিয়েছেন। কেউ বদল করেছেন কর্মস্থল। আসা-যাওয়ার এই পথে আমি রয়ে গেছি। এই অপার আনন্দে মাঝেমধ্যে বীণার সুরও বেজে ওঠে। অফিসে আমাকে খানিকটা রাগী, কঠিন মনে করে অনেকে। আমি ইচ্ছে করেই ভুলটা ভাঙাই না। ভাবি, কোথাও একটা হালকা ভয় থাকা ভালো। শৃঙ্খলা থাকে। পরিবারের প্রয়োজনে মা-বাবাও কঠোর হন। সোহাগের সঙ্গে শাসনও লাগে। অন্তরে সহকর্মীদের জন্য অনুভব করি নাড়ির টান।
এনটিভির ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। আঠেরোর পথচলা শুরু। অন্তরালের অনুভূতিগুলো ক্ষণে ক্ষণে মনকে নাড়া দেয়। ভেবে পাই না, সময়টা কীভাবে চলে গেল। জীবনের একটা বড় সময় থেকেছি এনটিভির সঙ্গে। ১৭ বছর আমারও। এনটিভির একজন কর্মী হিসেবে ১৮ বছরের সূচনায় অনুভবে আমিও স্পন্দিত।
আমার কাছে এনটিভি একটা অন্তর্গত টান। জীবনের একটা লম্বা জার্নি। পানিতে ঢিল ছোড়ার মতোই এনটিভি অনলাইনের অনুরোধ উসকে দিল এই স্মৃতিকাতরতা। কত অভিজ্ঞতা, কত ঘটনা-দুর্ঘটনা। কত বাধা-বিপত্তি, প্রতিবন্ধকতা। কত বিপদ। অনিশ্চয়তা। আবার কত সুখের স্মৃতি। কিছু আসে হামাগুড়ি দিয়ে। কিছু চকিত চমকে। কিছু কল্পনার ভেলায়। এখানে ভালোবাসার গান আছে। কর্মচাঞ্চল্য আছে। এ যেন বন্ধুত্বের নকশিকাঁথায় মোড়া একটা পরিবার। আছে উচ্ছ্বাস। প্রাণশক্তি। আছে অবসাদ, অনেক সহকর্মীর চলে যাওয়ার নিঃসঙ্গতা। তাই ভাবনাগুলো ছুটে চলে নিরুদ্দেশ।
বার্তাকক্ষই আমার প্রাণ। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট থেকে হলাম চিফ অব করেসপন্ডেন্টস, এরপর চিফ নিউজ এডিটর। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বর্তমানে পুরো নিউজ অ্যান্ড কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স দেখভালে আস্থা রেখেছেন আমার ওপর। কর্মজীবনে প্রিয় এনটিভিকে সার্ভ করার চেয়ে বড় সুযোগ আর কী হতে পারে। আর এই পথে বার্তাকক্ষের উদ্যমী, সৃজনশীল ও নিবেদিত প্রিয় সব সংবাদ-সহকর্মীর সহযোগিতা পেয়ে চলেছি অবিরত। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। কৃতজ্ঞতা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রতি।
এনটিভিকে নিয়ে তার দর্শকই সবচেয়ে ভালো মূল্যায়ন করতে পারবেন। কেন এনটিভি ‘সময়ের সাথে আগামীর পথে’। আজ টিভিজগতে যা কিছু হচ্ছে সংবাদে, সংবাদ পরিক্রমায়, বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে; তার একটা বড় ভিত্তি ও রুচি রচনা করে দিয়েছে এনটিভি। ঝকঝকে ছবির প্রযুক্তি, সংবাদে দায়িত্বশীলতা, পরিবেশনায় নান্দনিকতা, পেশাদারত্ব—সবই এনটিভির গর্বের জায়গা। বহু ক্ষেত্রে আমরা পাইওনিয়ার। সে কারণে মনে মনে নিশ্চয়ই একটা অবনত অহংকার আছে। সেটা সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াই হোক; ঝড়, বন্যা, আগুন কিংবা করোনার মতো মহাদুর্যোগে। এনটিভির সাংবাদিকরা সব সময় নির্ভীক ছুটেছেন মাঠে-ময়দানে। প্রতিটি ঘটনা তুলে এনেছেন সবার আগে। ওয়ান-ইলেভেনের চ্যালেঞ্জ, ৫ মের আগে-পরের ইনফার্নো, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, রায় কার্যকর, শাহবাগের গণজাগরণ... এমন অসংখ্য আলোচিত ঘটনা সাহসের সঙ্গে কভার করেছে এনটিভি। সেখানে এনটিভি সবার কথা বলেছে। নির্মোহভাবে। রাজনৈতিকভাবে বিভাজিত সময় ও সমাজে দলকানা বা কোনো মহল বা গোষ্ঠীর প্রতি পক্ষপাত দেখিনি এনটিভির। এটি সম্পাদকীয় নীতির এক গভীর অন্তর্গত শক্তি। আমি নির্দ্বিধায় বলব, এ ক্ষেত্রে নিরন্তর সাহস, প্রেরণা ও নির্দেশনা দিয়েছেন এনটিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী। এনটিভি যা কিছু করেছে, সবকিছুর মধ্যে ছিল স্যাটেলাইট টিভিজগতে নতুন কিছু, যার এপ্রেসিয়েশন আমরা দর্শকের কাছ থেকে পেয়েছি। ‘সময়ের সাথে আগামীর পথে’ স্লোগানও আমাদের আরো ভালো কিছু করার স্বপ্ন ও প্রতিশ্রুতি। গেল পাঁচ বছরে এনটিভি অনলাইনও এখন একটি সফল খোলা জানালা। যেখানে দর্শক-পাঠক পুরো পৃথিবী দেখেন এনটিভির চোখে। আর তাই তো কোটি সাবস্ক্রাইবার নিয়ে গেছে অনলাইনকে নতুন উচ্চতায়। ১৭ বছর ধরে যে ব্র্যান্ডিং ও ফুটপ্রিন্ট আমরা তৈরি করেছি, সেটা আগামী দিনে আরো জোরালোভাবে এগিয়ে নিতে চাই। কোয়ালিটি, অবজেকটিভিটি বা নিউট্রালিটির ব্যাপারে কোনো কম্প্রোমাইজ না করে। প্রযুক্তির কল্যাণে এখন কথায়- কথায় সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে। দেড় যুগ আগে এসএনজি ব্যবহার করে মানুষের আগ্ৰহের ঘটনাগুলো সরাসরি তুলে ধরা সহজ ছিল না। অত্যন্ত ব্যয়বহুলও ছিল। আমরা তা করেছি। এনটিভির পর্দায় তুলে ধরেছি আলোচিত সব ঘটনা সরাসরি। সুস্থ বিনোদনে, নাটকে, সংগীতে, সফল রিয়েলিটি শো সবখানেই এনটিভি দর্শকের নীরব নির্ভরতা ও ভালোবাসার জায়গা করে নিয়েছে। ক্লোজআপ ওয়ানের মতো বিনোদন রিয়েলিটি শোতে আমরা যেমন এ-ওয়ান, কেমন বাজেট চাইয়ের মতো লাইভ সিরিয়াস প্রোগ্ৰামেও আমরা সব সময় সবার আগে। সামাজিক সব কাজে, ঝড়ে-দুর্যোগে-বন্যায়, কনকনে শীতে কিংবা রোগেশোকে বিপর্যস্ত অনেক সাহায্যপ্রার্থীর পাশে কোনো না কোনোভাবে দাঁড়িয়েছে এনটিভি। এভাবে এনটিভি হয়ে উঠেছে বহুমাত্রিক। অন্ধকার অবক্ষয়কে যেভাবে তুলে ধরেছে, অর্জনের গল্পও বলেছে সব সময়। প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর ধরে কতশত অনুষ্ঠান, খবর আমরা কভার করেছি তার কোনো হিসাব নেই। প্রতিটির পেছনেই আছে একটা না-বলা গল্প। সেই গল্প হয়তো আলাদা করে কোনোদিনই করা হবে না। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে এনটিভিই আমাদের সেই ভালোবাসার গল্প। আজকের এ অবস্থানে আসার সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রতিটি সহকর্মীর অক্লান্ত শ্রম ও ত্যাগ। সে কথা বলে শেষ করা যাবে না।
মনে পড়ে ক্যামেরাম্যান তারেক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২১ আগস্টের সেই বর্বরোচিত হামলার ফুটেজ সংগ্ৰহ করেছিল। তারই ফুটেজ কাজে লেগেছিল ওই মামলার তদন্তকাজে। কাজ থেকে ফেরার পথে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে জীবন দেয় ভিডিও এডিটর আতিক। ক্যানসারে মারা গেল লিনা। করোনায় প্রাণ দিলেন অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান মোস্তফা কামাল সৈয়দ, আমাদের প্রিয় কামাল ভাই। তাঁদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।
একসময় আগুনের লেলিহান শিখা আমাদের সাময়িক দিশেহারা করেছিল। আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। আগুন কেড়ে নিতে পারেনি এনটিভি কর্মীদের স্বপ্ন। সময়ের সঙ্গে স্বপ্নশিখা প্রজ্বলিত হয়েছে আরো বহুগুণ। কর্মীরা খাঁটি সোনা হয়েছে। প্রতিদিন বাংলা, ইংরেজি মিলিয়ে নয়টি বুলেটিন ও সমসাময়িক অনুষ্ঠানের একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ চলে এখানে। বার্তা বিভাগের এই কর্মচাঞ্চল্যের মালা গাঁথেন বার্তা সম্পাদকেরা। ঘরে-বাইরে সংবাদ সংগ্ৰহের কাজে চব্বিশ ঘণ্টা সক্রিয় থাকেন মেধাবী সংবাদকর্মী হিসেবে রিপোর্টার ও ক্যামেরাম্যানদের একটি চৌকষ দল। ঢাকা ছাড়াও এনটিভির কর্মীরা সক্রিয় আছেন জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে এবং ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ সংগ্ৰহ ও সম্প্রচারের কাজে নিউজ এডিটর, রিপোর্টিংয়ের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত থাকে ন্যাশনাল, ইন্টারন্যাশনাল, স্পোর্টস, টিকার ও অ্যাসাইনমেন্ট ডেস্ক। থাকে অপরিহার্যভাবে প্রোডাকশন, ভিডিও, স্টুডিও, গ্ৰাফিক্স, আর্কাইভ, কো-অর্ডিনেশন, প্রোমো, প্রেজেন্টেশন, কম্পাইলেশন, ক্যামেরা স্টোর, ট্রান্সপোর্ট, ফ্রন্ট ডেস্ক, মেকআপ, ইনজেস্ট এবং প্রেজেন্টারদের সুদক্ষ টিম। আর নিরবচ্ছিন্ন সম্প্রচারের সার্বক্ষণিক ভাবনায় সক্রিয় ও নিবেদিত থাকেন ব্রডকাস্ট, আইটি, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার, এমসিআর, ইলেকট্রিক্যাল টেকনিশিয়ানস ও মেইনটেন্যান্স সহকর্মীরা। অফিস সহকারী, কিচেন ও ক্লিনিং স্টাফ আর নিরাপত্তাকর্মীরা রয়েছেন অক্লান্ত সদস্য পুরো টিমের। আর এই বার্তাকক্ষ তথা গোটা এনটিভি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে প্রশাসন ও মানবসম্পদ, সেলস, মার্কেটিং, ফিন্যান্স কাজ করছে নীরবে, নেপথ্যের শক্তি হিসেবে। অনুষ্ঠান বিভাগের সৃজনশীল ও উদ্যমী সহকর্মীরা ব্যস্ত থাকেন দর্শকপ্রিয় সব অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও নির্মাণে। সেইসঙ্গে পর্দার বাইরে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় এনটিভির কাজকে ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্বটি পালন করে চলেছে এনটিভি অনলাইন।
এনটিভিকে ভুলে থাকেন না কর্মস্থল বদল করা সহকর্মীরাও। তাঁরা আসেন পুনর্মিলনীতে। আসেন এমনিতেও। তাঁদের বলতে শুনি, এনটিভি সবার সত্তায় মিশে যাওয়া এক নাম। আপনালয়। ভালো লাগে যখন দেখি এনটিভির একসময়ের সহকর্মীরাই এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে। অথবা কাজ করছেন নানা ক্ষেত্রে সফলতার সঙ্গে। এনটিভির সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক আত্মার। বলতে দ্বিধা নেই, সাংবাদিক হিসেবে এনটিভি আমার নিজেরও একটা পরিচয়। সময় স্রোত স্বপ্ন, কিছুই স্থায়ী নয়। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে সাংবাদিকতায় অনেকটা পথ পেরিয়েছি। সংবাদের জন্য দেশ-বিদেশে ছুটে বেড়িয়েছি। দীর্ঘ সময়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও টক শোতে তুলে ধরেছি সমসাময়িক নানা প্রসঙ্গ। ফ্র্যাঙ্কলি স্পিকিং নামে ইংরেজি অনুষ্ঠানে মুখোমুখি হয়েছি বহু বিদেশি অতিথির। পরিকল্পনা করেছি কেমন বাজেট চাই-এর মতো বহু আলোচিত অনুষ্ঠান। হয়েছে বার্তাকক্ষে নেতৃত্ব দেওয়ার পরম সৌভাগ্যও। চলার পথে পেয়েছি অগণিত দর্শক-শুভানুধ্যায়ীর ভালোবাসা। শুভ কামনায় হয়েছি সিক্ত। মনে পড়ে, প্রথম দিনের কথা। সংবাদপত্র থেকে এসে টিভি সাংবাদিকতায় যুক্ত হলাম। কঠিন কাজ। অভিজ্ঞতা ছিল না। প্রশিক্ষণ আর ধারাবাহিক চেষ্টায় রপ্ত করেছি। পেয়েছি সহকর্মীদের উজাড় সহযোগিতা। আজ চারপাশে অগণিত সম্প্রচার সাংবাদিকের সরব পদচারণা দেখে ভালো লাগে। তাঁদের পরিশ্রম ও মেধার সমন্বয়ে এই মাধ্যমের আরো উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী হই।
সবশেষে বলব, দেশে স্যাটেলাইট টিভি বিকাশের জগতে একটা শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি এনটিভি। আমার কাছে এনটিভি হলো একটি সুরভিত স্মৃতিময় ১৭ বছর। নতুন পথে পেশাগত নিষ্ঠায় এগিয়ে যাওয়ার, দায়িত্ব পালনের প্রেরণা। করোনার মতো এই নিষ্ঠুর মহামারির সময়ে এবং আরো বহুকাল মানুষের পাশে থাকবে এনটিভি। মাথা উঁচু করে। স্মৃতিখাতার এসব এলোমেলো, অর্থহীন ভাবনার সঙ্গে আবেগ, ভালোবাসার মিশেলে অবিরাম বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার নিয়ে এনটিভি হয়ে থাক আমাদের হৃদয়ের উষ্ণ অনুভব। শুভ জন্মদিন এনটিভি।
লেখক : চিফ নিউজ এডিটর, এনটিভি