আন্তর্জাতিক
আইএস ভয় পাচ্ছে যে নারীকে
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম জোয়ানা পালানি। এই নাম দিয়ে গুগলে সার্চ দিলেই ভেসে উঠবে ভারী অস্ত্র সমেত সুন্দরী এক তরুণীর ছবি। যাকে হত্যা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস। শুধু তাই নয়, আইএসের ঘুম উড়িয়ে দেওয়া তরুণীটির মাথার দাম ১০ লাখ ডলার ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ এই তরুণীর হাতের জোরেই বধ হয়েছে অনেক আইএস জঙ্গি।
এতদিন জঙ্গি সদস্যদের ধরিয়ে দিতে ঘোষণা হতো পুরস্কার, আর এখন খোদ জঙ্গিরাই পুরস্কারের ঘোষণা করছে। ঘটনার সূত্রপাত সম্প্রতি ভাইস ম্যাগাজিনে দেওয়া জোয়ানা পালানির এক সাক্ষাৎকার নিয়ে। যেখানে জোয়ানা বলেছেন, আইএস যোদ্ধাদের হত্যা করা নাকি খুবই সহজ বিষয়। এটি প্রকাশের পর আইএসের নজরে পড়ে যান তিনি।
কেন জোয়ানা অস্ত্র হাতে তুলে নিলেন, তার একটি ইতিহাস রয়েছে। ২৩ বছরের জোয়ানা পালানির জন্ম ইরাকের কার্দিশ এলাকায়। কিন্তু তিনি বেড়ে উঠেছেন ডেনমার্কে। ১৯৯৩ সালে ইরাকের রামাদিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের এক শরণার্থী শিবিরে জন্ম ইরানিয়ান-কুর্দ জোয়ানার। উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় পরিবার তাঁকে নিয়ে ডেনমার্কে আশ্রয় নেয়। জোয়ানা তখন খুবই ছোট। কিন্তু জোয়ানার মনের ভিতরে জ্বলছিল যন্ত্রণা ও প্রতিশোধের আগুন। ফলে কলেজের পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখেই নিজ জন্মস্থানে ফিরে আসেন তিনি। ইরাকি সেনার হয়ে শুরু করেন আইএস নিধনের মিশন। এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার নজর কেড়েছেন এই তরুণী। বিভিন্ন পত্রিকায় স্থান পাচ্ছে জোয়ানার কাহিনী।
বর্তমানে জোয়ানা ডেনমার্কে অবস্থান করছেন। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সিরিয়া ও ইরাক অঞ্চলে গিয়ে আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অভিযোগে তাঁর বিচার চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
তবে বিচারের বিষয়টি মানতে পারছেন না জোয়ানা। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ডেনমার্কের একজন নারী হিসেবে তিনি গণতন্ত্র, নারী অধিকার বিষয়ে ইউরোপের দর্শন থেকে শিক্ষা নিয়ে বড় হয়েছেন। সেই দর্শনে অনুপ্রাণিত হয়ে কুর্দিদের পক্ষ নিয়ে লড়েছেন তিনি।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য মিররের এক খবরে বলা হয়েছে, কুর্দিদের পক্ষে লড়াই করা এই তরুণী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে হুমকি পাচ্ছেন। সর্বশেষ আইএস তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন নিজস্ব ওয়েবসাইটে জোয়ানাকে হত্যার জন্য ১০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। তবে জোয়ানাকে হত্যা করা হয়তো সহজ হবে না। কারণ তাঁকে কোপেনহেগেন পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
লেখক : শিক্ষার্থী, স্টেট ইউনিভার্সিটি