চট্টগ্রামকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ান মাহমুদউল্লাহর খুলনা
১৫৬ রানের মাঝারি লক্ষ্য। তাড়া করতে নেমে লড়াই জমিয়ে তোলেন সৈকত আলী ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। কিন্তু শহীদুল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিংয়ে শেষ করতে পারলেন না। শেষ ওভারের রোমাঞ্চে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামকে পাঁচ রানে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের চ্যাম্পিয়ান হয়েছে মাহমুদউল্লাহর জেমকন খুলনা।
শেষ ওভারে ছয় বলে জয়ের জন্য চট্টগ্রামের দরকার ছিল ১৬ রান। প্রথম বলে এক রান দেন শহীদুল। পরের বলে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত নেন দুই রান। তৃতীয় বলে শট খেলতে গিয়ে আউট হয়ে যান তিনি। চতুর্থ বলে আরেক সৈকতকেও বোল্ড করেন শহীদুল। এরপর নাহিদুল ছক্কা হাঁকালেও চট্টগ্রাম হেরে যায় পাঁচ রানে।
আজ শুক্রবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সাত উইকেটে ১৫৫ রান করে জেমকন খুলনা। জবাবে নির্ধারিত ওভারে ১৫০ রানে থামে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। গুরুত্বপূর্ণ দিনে ব্যাট হাতে অপরাজিত ৭০ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হয়েছেন খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে খুলনার দেওয়া ১৫৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন চট্টগ্রামের দুই ভরসার মুখ সৌম্য সরকার ও লিটন দাস। দায়িত্ব নিতে পারেননি অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনও।
দলীয় ২৬ রানের মাথায় ওপেনার সৌম্যকে হারায় চট্টগ্রাম। ৩.৩ ওভারে বাঁহাতি ওপেনারকে বোল্ড করেন শুভাগত হোম। ১০ বলে ১২ রান করেন তিনি। পরের ওভারে মিঠুনকে এলবির ফাঁদে ফেলেন আল আমিন। এরপর ২৩ রানের মাথায় রান আউট হয়ে ফিরেন লিটন।
দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েন শামছুর রহমান ও সৈকত আলী। দুজন মিলে গড়েন ৪৫ রানের জুটি। ১৪.২ ওভারে হাসান মাহমুদের বলে লং অনে শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন শামছুর। ২১ বলে ২৩ রান করেন তিনি।
এরপর চট্টগ্রামকে টানেন সৈকত। ১৭তম ওভারে রান আউট হতে পারতেন। কিন্তু জীবন পেয়েও শেষ করতে করতে পারেননি সৈকত আলী। তিনি আউট হয়ে ফিরলে ১৫০ রানে থেমে যায় চট্টগ্রাম।
এর আগে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরুতেই বিপদে পড়ে খুলনা। প্রথম বলে শট খেলতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ তুলে দেন ওপেনার জহুরুল ইসলাম অমি। একই বোলার নাহিদুল ইসলামের ডেলিভারিতে লং অফে কাটা পড়েন ইমরুল কায়েস।
তবে শুরু থেকে ভালোভাবে এগোচ্ছিলেন জাকির হাসান। কিন্তু পারেননি বেশি দূর যেতে। ৬.৩ ওভারে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বলে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে ২৫ রানে ফেরেন এই ওপেনার। এরপর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে প্রতিরোধ গড়েন আরিফুল হক। ১১.৫ ওভারে ওই প্রতিরোধ ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ২১ রানে ফেরেন আরিফুল।
সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হন শামীম। ১৮.১ ওভারে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকে নিজের শিকার বানান মুস্তাফিজ। ওই ওভারেই মুস্তাফিজের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৩৯ বলে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি স্পর্শ করেন মাহমুদউল্লাহ। এই টুর্নামেন্টে এটাই তাঁর প্রথম হাফসেঞ্চুরি। ব্যাটসম্যানদের হতাশার দিনে শেষ পর্যন্ত খুলনাকে ১৫৫ রানের সংগ্রহ এনে দেন মাহমুদউল্লাহ।
বল হাতে সমান দুটি করে উইকেট নিয়েছেন নাহিদুল ও শরিফুল। একটি করে নিয়েছেন সৈকত ও মুস্তাফিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জেমকন খুলনা : ২০ ওভারে ১৫৫/৭ (জাকির ২৫, জহুরুল ০, ইমরুল ৮, আরিফুল ২১, মাহমদউল্লাহ ৭০, শুভাগত ১৫, শামীম ০, মাশরাফী ৫, শহীদুল ১; রাকিবুল ৪-০-১৯-০, শরিফুল ৪-০-৩৩-২, নাহিদুল ৩-০-১৯-২, মুস্তাফিজ ৪-০-২৪-১, সৌম্য ৩-০-৩৯-০, সৈকত ২-০-২০-১)।
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম : ২০ ওভারে ১৫০/৬ ( লিটন ২৩, সৌম্য ১২, মিঠুন ৭, সৈকত আলী ৫৩, শামছুর ২৩, সৈকত ১৯, নাহিদুল ৬; মাশরাফী ৪-০-৪০-০, শুভাগত ২-০-৮-১, আল আমিন ৪-০-১৯-১, শহীদুল ৪-০-৩৩-২, আরিফুল ২-০-১৮-০, হাসান ৪-০-৩০-১)।
ফল : পাঁচ রানে জয়ী খুলনা।