পাকিস্তানকে ২০২ রানের লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ
চট্টগ্রাম টেস্টে আজ সোমবার চতুর্থ দিনের শুরুটা ভালো হয়নি। তবে, চরম চাপের মুখ থেকে বাংলাদেশকে কিছুটা হলেও পথ দেখান লিটন দাস। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা লিটন দ্বিতীয় ইনিংসে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। তাঁর ব্যাটে চড়েই চট্টগ্রাম টেস্টে পাকিস্তান ২০২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ সোমবার টেস্টের চতুর্থ দিন দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৭ রান করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসের লিড ছিল ৪৪ রান। মোট ২০১ রানের পুঁজি পেয়েছে মুমিনুল হকের দল। দলের হয়ে সর্বাধিক ৫৯ রান করেছেন লিটন দাস।
গতকাল রোববার দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ। যা থেমেছে আজ দিনের দ্বিতীয় সেশনে। তবে, প্রথম ইনিংসের তুলনায় হতাশই করলেন ব্যাটাররা। কাল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে শেষ দিকে যতটুকু ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ, তাতে মিলেছে শুধুই হতাশা। ব্যাটিংয়ে নেমে বরাবরের মতো ব্যর্থ ওপেনিং জুটি।
দলীয় ১৪ রানেই ফেরেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। এরপর একে একে ফেরেন সাইফ হাসান, মুমিনুল হক এবং নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্রুত চার উইকেট হারানোর পর মুশফিক-ইয়াসিরে দিনের বাকি অংশ পার করে বাংলাদেশ।
দলীয় ৩৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ শুরুতেই হারায় মুশফিকুর রহিমকে। দিনের শুরুতেই বাজেভাবে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলেন অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিক। দিনের তৃতীয় বলেই মুশফিককে বোল্ড করেছেন হাসান আলী। ৩৩ বলে ১৬ রান করে বিদায় নিয়েছেন তিনি।
এরপর হেলমেটে বল লাগায় আহত হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ইয়াসির আলীকে। দারুণ ব্যাটিংয়ের আভাস দেওয়া ইয়াসিরকে থামকে হয় ৩৬ রানে। মাঝে ফিরে গেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও ইয়াসিরের কনকাশন সাবে নামা নুরুল হাসান সোহান।
দ্রুত উইকেট হারানোর মধ্যে হাল ধরেন লিটন। তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১১তম টেস্ট হাফসেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ৫৯ রানে ভাঙে তাঁর প্রতিরোধ। লিটন ফিরলে ১৫৭ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
গতকাল রোববার চট্টগ্রাম টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ৩৯ রান নিয়ে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। ৮৩ রানে এগিয়ে থেকে আজ চতুর্থ দিন শুরু করে বাংলাদেশ।
টেস্টের দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশকে ভুগিয়েছেন পাকিস্তানি ব্যাটররা। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করে সফরকারীরা। দিন শেষে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান আবিদ আলী এবং আবদুল্লাহ শফিক। তবে, কাল দিনের শুরুতেই এ শক্ত জুটি ভাঙেন তাইজুল। ফিরিয়ে দেন শফিককে। আগের দিন ৫২ করা শফিক কাল স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ করতে পারেননি।
তিনে ব্যাট করতে নামা আজহারকেও টিকতে দেননি তাইজুল। গোল্ডেন ডাকে তাঁকে সাজঘরে পাঠান এ স্পিনার।
পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমের প্রতিরোধ ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম সেশনেই মিরাজের করা বল অফ স্টাম্পে পড়ে সোজা যাওয়ায় লাইনে যেতে পারেননি বাবর। সরে গিয়ে খেলার চেষ্টা করেন। তবে, সফল হননি। বল চলে যায় স্টাম্পে। ভাঙে ২৩ রানের জুটি। ৪৬ বলে ১০ রান করেন বাবর। এরপর রিজওয়ানকে ফিরিয়ে প্রথম উইকেটের দেখা পান ইবাদত।
সতীর্থরা আসা-যাওয়ায় ব্যস্ত থাকলেও থিতু ছিলেন আবিদ। তুলে নেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি। ভয়ংকর হয়ে ওঠা এই ব্যাটারকে শেষ পর্যন্ত থামান তাইজুলই। দ্বিতীয় সেশনে আবিদকে এলবিডব্লিউ করেন তিনি। ২৮২ বলে ১৩৩ রান করে থামেন এ ওপেনার। শেষ দিকে ফাহিম আশরাফ ৩৮ রানের একটি ইনিংস খেলেন।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে বেশ উজ্জ্বল ছিলেন তাইজুল ইসলাম। ১১৬ রান দিয়ে সাত উইকেট নেন তিনি। ৪৭ রান খরচায় দুটি উইকেট নেন ইবাদত। আর মেহেদী হাসান মিরাজ পান একটি উইকেট।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ৩৩০ রান করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১১৪ রান করেন লিটন। মুশফিকুর রহিম করেন ৯১ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৩৩০
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস: ২৮৬
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৩৯/৪) ৫৬.২ ওভারে ১৫৭ ( সাদমান ১, সাইফ ১৮, নাজমুল ০, মুমিনুল ০, মুশফিক ১৬, ইয়াসির আহত অবসর ৩৬, লিটন ৫৯, মিরাজ ১১, সোহান ১৫, তাইজুল ০, আবু জায়েদ ০, ইবাদত 0*; আফ্রিদি ১৫-৮-৩২-৫, হাসান ১১-০-৫২-২, ফাহিম ৮-৩-১৬-০, নুমান ৯-৩-২৩-০, সাজিদ ১৩.২-১-৩৩-৩)।