‘বাংলাদেশে হিটার ব্যাটসম্যানের বড় অভাব’
বাংলাদেশের ক্রিকেটে পাওয়ার হিটারের খুব অভাব। টি-টোয়েন্টি কেন, কোনো ফরম্যাটেই ম্যাচ শেষ করার মতো পাওয়ার হিটার বাংলাদেশের নেই। সাত-আট নম্বর পজিশনে অনেককেই বারবার পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি কেউই।
পাকিস্তান সফরেও হিটারের অভাব অনুভব করছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ হারার পর বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও শোনালেন সেই অভাবের কথা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারালেও বাংলাদেশের রান ছিল ৩৫। ১০ ওভারে বিনা উইকেটে কেবল ৬২। দ্বিতীয় ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ তোলে ২ উইকেটে ৩৩। ১০ ওভারে ছিল ৩ উইকেটে ৫৭। কিন্তু এর পর থেকে প্রত্যাশিত ঝড় তুলে ইনিংস বড় করার মতো হিটার ছিল না।
একের পর ব্যাটসম্যানদের দিয়ে হিটিংয়ের কাজটা করাতে চাচ্ছে বাংলাদেশ। যেমনটা কাল চেষ্টা করানো হয়েছিল তরুণ ক্রিকেটার মেহেদী হাসানকে দিয়ে। ক্যারিয়ারে মাত্র একটি টি-টোয়েন্টি খেলা এই তরুণকে কাল তিনেই নামিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। যার নেপথ্যেও আছে সেই পাওয়ার হিটিং। কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘আমরা এমন কিছু খেলোয়াড় চাচ্ছি, যারা বলটাকে পিটিয়ে মাঠের বাইরে নিয়ে ফেলতে পারে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এ ধরনের হিটার ব্যাটসম্যানের বড় অভাব। সৌম্য এর আগে ব্যাটিং অর্ডারের ওপরে অনেক সুযোগ পেয়েছে। তবে এটা বলতে চাই, সে দুর্দান্ত এক ব্যাটসম্যান। দলে আমরা এখন ভিন্ন ভিন্ন কম্বিনেশন নিয়ে ভাবছি। দেখছি, এগিয়ে-পিছিয়ে নিয়ে কে পাওয়ার হিটিংয়ের ভূমিকা খুব ভালো করে পালন করতে পারে।’
এ ছাড়া পাকিস্তান সফরের আগেই কোচ জানিয়েছিলেন, প্রথম সিরিজে তামিমের ব্যাটিং কাছ থেকে দেখবেন তিনি। তিন ম্যাচ সিরিজের দুটি শেষে তামিমকে কেমন দেখলেন, সে সম্পর্কে জানালেন ডমিঙ্গো।
পাকিস্তান সফরে মোটামুটি সফল তামিম। তবে ব্যাটিংয়ের চেয়ে প্রশ্ন উঠেছে তাঁর ব্যাটিং ধরন নিয়ে। টি-টোয়েন্টিতে তামিমের মন্থর ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন ভক্ত সমাজেও। যেমন পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে তামিম করেন ৩৪ বলে ৩৯ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে করেন ৫৩ বলে ৬৫ রান। মূলত ধীরগতির ব্যাটিং নিয়েই প্রশ্নের মুখোমুখি তামিম।
দুই ম্যাচে তামিমের ব্যাটিং দেখে ডমিঙ্গো বলেন, ‘তামিমের সঙ্গে এটিই আমার প্রথম সিরিজ। আমার মতে, দুই ইনিংসেই সে ভালো খেলেছে। তবে অবশ্যই সে উন্নতি করতে পারে। প্রথম ম্যাচে আমরা বিনা উইকেটে ৬৮ করেছিলাম (১০ ওভারে ৬২), যা মোটামুটি ঠিকঠাক ছিল। আজকে (শনিবার) আমরা ক্রমাগত উইকেট হারিয়েছি। দ্বিতীয় ওভার, চতুর্থ ওভার, অষ্টম ওভারে উইকেট হারিয়েছি। তাই হাত তুলে খেলা কঠিন ছিল, কারণ আরেক পাশের ব্যাটসম্যানও একই গতিতে রান করছিল।’
তবে তামিমকে যে আরো উন্নতি করতে হবে, সেটাও জানিয়ে গেলেন কোচ, ‘আরো কাজ করতে হবে। ওর সঙ্গে আমার প্রথম সিরিজ, দেখছি সে কীভাবে টি-টোয়েন্টি খেলে। আমাদের সবারই উন্নতির জায়গা আছে এবং অনেক আলোচনার সুযোগও আছে। আশা করি, নিজের খেলা সে পরের পর্যায়ে নিতে পারবে। তবে সব বিভাগেই কাজ করতে হবে।’
এ ছাড়া টানা দুই ম্যাচে হারের হতাশা নিয়ে কোচ বলেন, ‘এমন ফলাফল আসলে খুবই হতাশার। আর এই উইকেটটাও সহজ ছিল না। তবুও ১৫০-এর কম রান নিয়ে লড়াই করা কঠিন। প্রথম ম্যাচে আমাদের ১৫ রানের মতো কম হয়েছে। এই ম্যাচে ২৫ রানের মতো কম ছিল। এটা নিয়ে তাদের সঙ্গে লড়াই করা কঠিন। তারা (পাকিস্তান) এই ফরম্যাটের এক নম্বর দল। আর আমাদের অবস্থান ৯ নম্বরে। এটাই বলে দেয় দুই দলের মতো কতটা পার্থক্য। এত কম রান নিয়ে লড়াই সম্ভব নয়।’