বৃষ্টিতে ভেসে গেল ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন
মেঘ-বৃষ্টির লুকোচুরিতে ভেসে গেল বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন। আজ রোববার প্রথম সেশনে এক বলও মাঠে গড়ায়নি। লাঞ্চের পর শুরু হলেও আধা ঘণ্টার মাথায় ফের বৃষ্টি নামলে ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয় ক্রিকেটারদের। এরপর দিনের বাকি অংশ কেটে যায় ড্রেসিংরুমেই। দীর্ঘ অপেক্ষার পরও দিনের বাকি অংশে আর খেলা সম্ভব হয়নি।
দ্বিতীয় দিন শেষে দুই উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১৮৮ রান তুলেছে পাকিস্তান। আগের দিন ৬০ রানে অপরাজিত থাকা বাবর আজ যোগ করেছেন ১১ রান। তিনি অপরাজিত আছেন মোট ৭১ রানে। আরেক ব্যাটার আজহার আলী অপরাজিত আছেন ৫২ রানে।
গতকাল শনিবার প্রথম দিনের শেষ সেশন মাঠে গড়ায়নি। আজ প্রথম সেশনেও গড়ায়নি। বৃষ্টিতে ভেসে যায় প্রথম সেশনের খেলা। এর মধ্যে লাঞ্চ বিরতি আধা ঘন্টা এগিয়ে ১১টা ৩০ থেকে দেওয়া হয়। ৪০ মিনিট পর অর্থাৎ ১২ টা ১০ মিনিটে শেষ হয় লাঞ্চ বিরতি। এর পর আরো ৪০ মিনিট অপেক্ষা করে বেলা ১২ টা ৫০ মিনিটে মাঠে নামে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।
সেটাও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। খেলা শুরু হওয়ার ৩০ মিনিটের মাথায় ফের বৃষ্টি শুরু হয়। ৬.২ ওভার দুই বল খেলা হওয়ার পর ফের ড্রেসিং রুমে চলে যেতে হলো দুদলকে। এই সময়ে স্কোরবোর্ডে ২৭ রান যোগ করে পাকিস্তান। এরপর লম্বা সময় অপেক্ষার পর বিকেল ৩টায় দ্বিতীয় দিনের খেলা বন্ধ ঘোষণা দেয় দুই আম্পায়ার।
এর আগে গতকাল ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন আগে ব্যাট করতে নেমে দুই দুইকেটে ১৬১ রান নিয়ে দিন শেষ করে পাকিস্তান। দিন শেষে অপরাজিত ছিলেন বাবর আজম। তাঁর সঙ্গে অপরাজিত আজহার আলী। আজও তাঁরা অপরাজিত থেকেই ফিরেছেন।
গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ সাবধানী ব্যাটিং শুরু করে বাবর আজমের দল। আগের ম্যাচের মতোই দুই ওপেনার আবিদ আলী এবং আব্দুল্লাহ শফিকের জুটি মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
প্রথম ৯ ওভার সামলেছেন বাংলাদেশের দুই পেসার—খালেদ আহমেদ ও ইবাদত হোসেন। দুজনে প্রথম স্পেলে তেমন কোনো পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি পাকিস্তানকে। প্রথম ৯ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৩৪ রান তুলেছে অতিথিরা। এরপর স্পিন আক্রমণ আনে বাংলাদেশ। নিজের প্রথম স্পেলে আশা জাগান সাকিব আল হাসান। তবে, রিভিউ নিয়েও পারলেন না পাকিস্তানের শুরুর জুটি ভাঙতে।
পানি পানের বিরতির পর সাকিবের করা বল লেগে যায় শফিকের প্যাডে। জোরাল আবেদন তোলে বাংলাদেশ। আম্পায়ার এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, বল অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে যায়, ফলে রিভিউটি নষ্ট হয়। সে সময় ২১ রানে উইকেটে ছিলেন শফিক।
অবশেষে জমে যাওয়া পাকিস্তানের ওপেনিং জুটি ভাঙেন তাইজুল। ১৯তম ওভারে ওয়াইড ক্রিজ থেকে লেংথ বল ভেতরে ঢোকান তাইজুল। শফিকের ব্যাটের ফাঁক দিয়ে বল আঘাত হানে অফ স্টাম্পে। ১১১ বলে ভাঙে ৫৯ রানের জুটি। ৫০ বলে ২৫ রান করে ফিরেছেন শফিক। একইভাবে ৩৯ রানে আবিদকে বিদায় করেন তাইজুল। অভিজ্ঞ এ স্পিনারের জোড়া আঘাতে প্রথম সেশনে সমানে সমান লড়াই করে বাংলাদেশ।
তবে, শুরুর ধাক্কা সামলে দ্রুতই ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। দ্বিতীয় সেশনে দারুণ জুটি উপহার দেন বাবর আজম ও আজহার আলী। লাঞ্চের পর এই জুটি ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশ। মাঝে বৃষ্টির বাগড়ায় ২৫ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। এরপর মাঠে ফিরেও দারুণ ব্যাটিং করেন বাবর-আজহার। দ্বিতীয় সেশনে ২৬ ওভারে ৮৩ রান তুলেছে পাকিস্তান।
তৃতীয় সেশনে আলোকস্বল্পতার কারণে মাঠে নামতে পারেনি বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। বেলা ৩ টা ৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় অপেক্ষায় থাকে দুদল। এরপর আর মাঠেই গড়ায়নি তৃতীয় সেশনের খেলা। আলোকস্বল্পতার কারণে শেষ পর্যন্ত প্রথম দিনের খেলা বন্ধ হয়ে যায়।