দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার ৭ ফিফা কর্মকর্তা
ফিফার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে অনেক দিন ধরেই। আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনা তো প্রায়ই তোপ দাগেন ফুটবলের এই সর্বোচ্চ সংস্থার নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফিফার উচ্চপর্যায়ের সাত কর্মকর্তাকে। বুধবার সুইজারল্যান্ডের পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। দুর্নীতির অভিযোগে তাঁদের যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।urgentPhoto
আগামী শুক্রবার ফিফার সভাপতি নির্বাচন। চতুর্থবারের মতো সভাপতি হওয়ার জন্য নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন সেপ ব্ল্যাটার। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জর্ডানের প্রিন্স আলী বিন আল হুসেইন। পর্তুগালের সাবেক তারকা ফুটবলার লুইস ফিগো নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও সরে দাঁড়িয়েছেন শেষ মুহূর্তে। এই নির্বাচন ঘিরে বার্ষিক সভায় মিলিত হওয়ার জন্য সুইজারল্যান্ডের জুরিখে জড়ো হয়েছিলেন ফিফার উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা। কোনো রকম ঘোষণা না দিয়ে একটি পাঁচতারা হোটেল থেকে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে সাদা পোশাকের সুইস পুলিশ।
গত দুই দশকে বহু দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ফিফার বিরুদ্ধে। বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার প্রতিযোগিতা, বিপণন ও সম্প্রচার স্বত্ব, টাকা পাচার ইত্যাদি বিষয়ে নয়-ছয় করেছেন বলে অভিযোগ ফিফার প্রচণ্ড ক্ষমতাশালী নির্বাহী কমিটির বিরুদ্ধে। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক এবার বড় ধরনের ঝামেলাতেই পড়ল। কারণ সুইজারল্যান্ডের পুলিশ ফিফার সাত কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে ১০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে।
সুইজারল্যান্ডের বিচার বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে তাঁদের ওপর তদন্ত করছিল যুক্তরাষ্ট্র। ফিফার প্রতিনিধি ও ফিফার অন্যান্য সহ-সংগঠনের কয়েকজন কর্মকর্তাকে ১০ কোটিরও বেশি ডলার ঘুষ দিয়েছে খেলাধুলাবিষয়ক গণমাধ্যম ও খেলাধুলা প্রসারে নিয়োজিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।’ তবে এ ব্যাপারে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি ফিফা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বিশেষভাবে তদন্ত করেছে কনকাকাফ অঞ্চল নিয়ে। উত্তর, মধ্য আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চল নিয়ে গঠিত ফিফার এই কনফেডারেশনের সাবেক প্রধান জ্যাক ওয়ার্নারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু ২০১১ সালে তিনি সরে দাঁড়ানোর পর থেমে যায় দুর্নীতির তদন্তও।
২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক নির্বাচনের সময়ও অনিয়ম করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল ফিফার বিরুদ্ধে। ২০১৮ সালে রাশিয়া ও ২০২২ সালে কাতারে হবে ফুটবল বিশ্বকাপ। এর পরিপেক্ষিতে একজন স্বাধীন তদন্ত কর্মকর্তাও নিয়োগ দিয়েছিল ফিফা। সেই তদন্ত প্রতিবেদনেও ছিল কিছু অনিয়মের কথা। তবে তা দিয়ে পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই বলে রায় দিয়েছিল ফিফার নৈতিকতাবিষয়ক বিচারক। এমন মন্তব্যের পর পদত্যাগ করেছিলেন সেই স্বাধীন তদন্ত কর্মকর্তা ও সাবেক আইনজীবী মাইকেল গার্সিয়া।