যোগ্য গুরুর যোগ্য শিষ্যরা!
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/06/19/photo-1434698536.jpg)
স্পিনারের অভাবে বাংলাদেশকে খুব বেশি ভুগতে হয়নি। মোহাম্মদ রফিক, আব্দুর রাজ্জাক, সাকিব আল হাসান, তাইজুল-সোহাগ গাজীরা আসছেন, গেছেন নিয়মিতভাবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের পেস বোলিংয়ের ঝাণ্ডা অনেক দিন একলা হাতেই টানতে হয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। দেশের স্বার্থে বিরতিহীন বোলিং করতে করতে ইনজুরিতে জর্জরিত হয়েছেন ডানহাতি এই পেসার। ওয়ানডে ক্যারিয়ার আরেকটু দীর্ঘায়িত করার জন্য ছেড়েছেন টেস্ট ক্রিকেটও। তবে ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে এসে হয়তো একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবেন বাংলাদেশের অন্যতম সফল এ অধিনায়ক। কারণ তাঁর চোখের সামনে, তাঁর প্রত্যক্ষ নির্দেশনা-পরামর্শে গড়ে উঠছে ক্ষুরধার এক পেস আক্রমণ।
২০০৯ সালে ওয়ানডে ক্যারিয়ার শুরু করা রুবেল হোসেন তো বেশ পরিণতই হয়ে গেছেন। সাম্প্রতিককালে তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান। অভিষেকে পাঁচ উইকেট নিয়ে দুজনেই ইঙ্গিত দিয়েছেন সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের। দুই তরুণ পেসারের এই উত্থানে সবচেয়ে বেশি খুশি বোধহয় মাশরাফিই হয়েছেন। পেস আক্রমণে পেয়েছেন যোগ্য সঙ্গীদের। যে সঙ্গীরা গড়ে উঠেছে তাঁর শাসন-আদর-দুষ্টুমিতে। সঙ্গীর সঙ্গে শিষ্য বললেও খুব একটা ভুল হবে না। তাসকিন আর মুস্তাফিজ যোগ্য শিষ্যের মতো বেড়ে উঠছেন মাশরাফির ছায়ায়।
ঠিক এক বছর এক দিন আগে, ২০১৪ সালের ১৭ জুন ঢাকার মিরপুরেই ভারতের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল তাসকিনের। সে ম্যাচেই পাঁচ উইকেট নিয়ে আলো ছড়িয়েছিলেন এই ডানহাতি পেসার। এবার মুস্তাফিজও দারুণ বোলিংয়ে সবার নজর কেড়ে বসে গেছেন তাসকিনের পাশে। ওয়ানডেতে অভিষেকে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট পাওয়ার ঘটনা আছে মাত্র ১০টি। এর মধ্যে দুটি নামই বাংলাদেশের। দুজনেই যেন আঁকছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্বর্ণালী ভবিষ্যতের ছবি।
তাসকিনের সঙ্গে মাশরাফির চেস্ট বাম্প বা লাফিয়ে বুক মেলানোর ছবি ভালোই সাড়া ফেলে ক্রিকেট অঙ্গনে। প্রথম প্রথম তাসকিন তাল মেলাতে পারতেন না মাশরাফির সঙ্গে। একবার পড়েও গিয়েছিলেন। সেই তাসকিনকে বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে দেখা গেল সমানে সমানে বুক মেলাতে। তাসকিনের বুকের সঙ্গে বুক মিলিয়ে এবার মাশরাফিকেই পিছিয়ে যেতে হলো কয়েক ধাপ। তাসকিন যেন বুঝিয়ে দিলেন যে, তিনিও এখন প্রস্তুত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ার জন্য।
মুস্তাফিজ যেন মাশরাফির আদরের সর্বকণিষ্ঠ ভাই। অভিষেক ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেওয়ার বিরল কৃতিত্ব অর্জন করা মুস্তাফিজকে পরম মমতায় চুমু খেলেন মাশরাফি। জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ আদর করলেন। ২০ ও ১৯ বছর বয়সী তাসকিন-মুস্তাফিজ যেন আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারেন এমন আশীর্বাদও হয়তো মিশে থাকে উদ্দাম, আদরভরা এসব উদযাপনে।