স্কয়ার ড্রাইভ
কিউই-ঝড়ে ইংল্যান্ডের অসহায় আত্মসমর্পণ
ভেবেছিলাম, এই ম্যাচে ইংল্যান্ড মরণপণ লড়াই করবে। প্রথম ম্যাচ হেরে যাওয়ায় এই ম্যাচ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল তাদের জন্য। কিন্তু ঠিক উল্টো চিত্র দেখলাম। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের সামনে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা একেবারে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে। বিশেষ করে টিম সাউদি একাই ধস নামিয়েছেন ইংলিশদের ব্যাটিংয়ে।
স্বাগতিক বোলারদের সামনে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা দাঁড়াতেই পারেনি। সাউদির বোলিং এবারের বিশ্বকাপে আমার দেখা সেরা। গতির সঙ্গে সুইং মিশিয়ে কী চমৎকার বলই না করল ছেলেটা! মইন আলি ও জেমস টেলরকে বোকা বানিয়ে যেভাবে বোল্ড করল, তা এককথায় অসাধারণ।
শুরুতে ইংল্যান্ডের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের খেলা দেখে আমি ভেবেছিলাম, হয়তো তারা ভালোই করবে। কিন্তু আমার ভাবনার সঙ্গে তাদের খেলার কোনো মিলই খুঁজে পেলাম না। অধিনায়ক ওয়েন মরগানের উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসা ইংল্যান্ডের ব্যাটিং-দীনতাই প্রকাশ করেছে। প্রয়োজনের সময় তাঁর কাছ থেকে দৃঢ়তা আশা করেছিল ইংল্যান্ড। অথচ দলকে হতাশায় ডুবিয়ে তিনি চরম ব্যর্থ।
শুধু ব্যাটিং ব্যর্থতা নয়, ইংল্যান্ডের মতো দলের অধিনায়ক হিসেবেও মরগান যোগ্য নন। মাঠের মধ্যে সতীর্থদের সঙ্গে আলোচনা, ফিল্ডিং সাজানো, বোলিং পরিবর্তন—কোনো কিছুতেই তাঁর মধ্যে পরিপক্বতার ছাপ দেখিনি।
ওয়েলিংটনের এই উইকেটে কিছুটা গতি আছে। এখানে বোলাররা সাধারণত সুবিধা পেয়ে থাকে। কিন্তু সে ধারণাকে ভুল প্রমাণ করলেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। মাত্র ২৫ বলে ৭৭ রানের অসাধারণ ইনিংসটি চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। তাঁর ব্যাটিং দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল যেন ‘হাইলাইটস’ দেখছি! যাঁরা মাঠে বসে ম্যাককালামের ইনিংসটি দেখেছেন, তাঁরা সত্যি ভাগ্যবান। এমন ইনিংস সহজে দেখা যায় না। এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত এটাই সেরা ইনিংস।
আসলে এই ম্যাচে ইংল্যান্ড প্রতিটি বিভাগেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। টানা দুই ম্যাচ হেরে তারা অনেকখানি পিছিয়ে পড়েছে। বাকি চার ম্যাচের ওপরে তাদের কোয়ার্টার ফাইনালে উত্তরণ নির্ভর করছে। অন্যদিকে, টানা তৃতীয় জয়ে নিউজিল্যান্ডের শেষ আট প্রায় নিশ্চিত।
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু : জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচক। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচ।