সেরেনা বিতর্কে বিভক্ত টেনিস বিশ্ব
রোববার ইউএস ওপেনের ফাইনালে বড়সড় এক বিতর্কেরই জন্ম দিয়েছেন সেরেনা উইলিয়ামস। আম্পায়ারের সঙ্গে জড়িয়েছিলেন ভয়াবহ বাকবিতণ্ডায়। আম্পায়ারকে বলেছেন ‘মিথ্যাবাদী’, ‘চোর’। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে টেনিস বিশ্বে। বলা যায়, দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে টেনিস অঙ্গনের মানুষজন। এক দলের চোখে সেরেনা ঠিকই করেছেন। আরেক দল ব্যাপারটিকে বিবেচনা করছে নেতিবাচক দৃষ্টিতে।
নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে উত্তেজনার সূচনা হয় খেলার প্রথম সেট চলাকালীন। গ্যালারি থেকে সেরেনাকে কিছু একটা পরামর্শ দিচ্ছিলেন তাঁর কোচ। তা বিধিবহির্ভূত হওয়ায় আম্পায়ার এই মার্কিন তারকাকে সতর্ক করে দেন। আর এতেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন সেরেনা। অভিযোগ অস্বীকার করে আম্পায়ারকে তিনি বলেন, ‘দরকার পড়লে আমি হেরে যাব। কিন্তু আমি কখনো প্রতারণা করব না।’
শুধু তাই নয়, দ্বিতীয় সেটের সময় আরো একবার উত্তেজিত হন সেরেনা, সে সময় তিনি র্যাকেটও ভেঙে ফেলেন। তাই আম্পায়ার পেনাল্টি দেন এই মার্কিন তারকাকে। তাঁর পয়েন্টও কাটা হয়। তখন কোর্টে ঢুকতে চাননি সেরেনা। শেষ পর্যন্ত কোর্টে ফিরেন। পরে চরম ক্ষুব্ধ হয়ে আম্পায়ারকে ‘চোর’ বলতেও ছাড়েননি, “ছেলেদের তো পয়েন্ট কেড়ে নিতে পারে না, কারণ তাঁকে ‘চোর’ বলে।”
আম্পায়ারের ওপর চড়াও হয়ে সেরেনা আরো বলেন, ‘বলেন আপনি দুঃখিত। তা না হলে কোনোদিন আপনি আমার কোর্টে থাকবেন না। আসলে আপনি একজন মিথ্যাবাদী।’এই ম্যাচে জাপানের ওসাকা সহজেই ৬-২, ৬-৪ গেমে সেরেনাকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছেন। প্রথম জাপানি হিসেবে এই গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতেন তিনি।
সেরেনা উইলিয়ামসের পাশে দাঁড়িয়েছেন টেনিসের কিংবদন্তি বিলি জিন কিং। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘যখন একজন নারী আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন, তখন বলা হয় সে বেশি বেশি করছে। আর তাকে শাস্তি দেওয়া হয়। আর যখন এই একই কাজ কোনো পুরুষ করে তখন বলা হয় সে ঠিক কথা বলে ফেলে। এটা নিয়ে কোনো হইচই হয় না। সেরেনাকে ধন্যবাদ এভাবে এই দ্বিমুখী মনোভাবের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য। একই রকম কাজ আরো অনেকের করা উচিত।’
অন্যদিকে সেরেনার সমালোচনা করেছেন ৬০ ও ৭০-এর দশকে কোর্ট দাপিয়ে বেড়ানো অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি মার্গারেট কোর্ট। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সব সময়ই নিয়ম মেনে চলতে হয়েছে। এটা এই খেলাটার জন্য দুর্ভাগ্য যে, একজন খেলোয়াড় নিয়মের চেয়েও বড় হওয়ার চেষ্টা করছে। কারণ তরুণ এক খেলোয়াড় তাকে প্রথম সেটে হারিয়ে দিয়েছিল। আমার মনে হয় সেরেনা খুব চাপের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল।’