ভোলা যাবে না মিঠুনকেও

নাটকীয়তা দিয়ে শুরু হয়েছে এশিয়া কাপ। ১৬ মাস পর ক্রিকেটে ফিরে প্রথম ওভারে বল করতে আসেন লাসিথ মালিঙ্গা। পঞ্চম বলে লিটন দাসকে শিকার করেন তিনি। এরপর মাঠে নামেন সাকিব আল হাসান। ঠিক পরের বলেই অসাধারণ এক ইয়োর্কারে ভেঙে দেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডারের মিডল স্টাম্প। পরপর দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে দিশেহারা বাংলাদেশ। পরের ওভারে সুরাঙ্গা লাকমালের এক বাউন্সারে পুল করেন তামিম। কিন্তু বল তাঁর কব্জিতে লাগে। আহত হয়ে ফিরে যান তামিম। এর পর মাঠে নামেন মোহাম্মদ মিঠুন। অপর প্রান্তে তখন মুশফিকুর রহিম। স্কোর বোর্ডে ২ উইকেট দেখালেও আদতে নেই তিনজন ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশকে ব্যাটিং বিপর্যয় থেকে টেনে তোলা তৃতীয় জুটিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তরুণ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন।
ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের অভিষেক হয় ভারতের বিপক্ষে, ২০১৪ সালে। গতকাল শনিবার এশিয়া কাপে মিঠুন তাঁর ক্যারিয়ারের চতুর্থ ওয়ানডে খেলতে নামেন। গড়ে তোলেন মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ১৩৪ রানের অসাধারণ এক জুটি। যখন মালিঙ্গার বলের সামনে কেউ দাঁড়াতে পারেননি, তখন বুঝে শুনে ব্যাটিং করেছেন এই ব্যাটসম্যান। পাঁচটি চার এবং দুটি ছক্কার মারে ৬৮ বলে করেছেন ৬৩ রান। অর্ধশতক পেয়েছেন সতীর্থ মুশফিকুর রহিমের আগেই।
শুরু থেকেই প্রশ্ন উঠছিল, মাশরাফি-সাকিব-তামিমদের মতো সিনিয়র খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতিতে তরুণরা দলকে এগিয়ে নিতে পারবেন কি না। সেই প্রশ্নের জবাব প্রয়োজনের দিনে দিয়েছেন মিঠুন। দেখিয়েছেন তরুণ ক্রিকেটার হয়েও কীভাবে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে হয়। কখন ধরে খেলতে হয়, কখন সুযোগ বের করে বাউন্ডারি হাঁকাতে হয়। লাসিথ মালিঙ্গার বলে আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশকে একটি শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান মিঠুন-মুশফিক জুটি।
৪৭তম ওভারের শেষ বলে নাটকীয়ভাবে ভাঙা হাত নিয়েই ক্রিজে নামেন তামিম ইকবাল। হাতে ব্যান্ডেজ নিয়েই একটি বল খেলেন তিনি। সেই অনুপ্রেরণায় মুশফিক আরো ৩২ রান যোগ করেন মাত্র ১৬ বলে। তামিমের দেশের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেওয়া কিংবা মুশফিকের ১৪৪ রান কিংবা বাংলাদেশের জয়— সবকিছু মিলে তেমন আলোচনায় নেই মিঠুনের সেই ৬৩ রান। তবে আলোচনায় না থাকলেও মুশফিকের সঙ্গে ১৩৪ রানের জুটি থেকে অনেক শেখার আছে তরুণ ক্রিকেটারদের।
সামনের দিনগুলোতেও বাংলাদেশ তাকিয়ে থাকবে এমন তরুণদের দিকে, যারা মিঠুনের মতো দলের অসময়ে হাল ধরবেন।