আত্মত্যাগী সোহেলকে মাশরাফির আবেগঘন শ্রদ্ধা

গত ২৮ মার্চ বনানীর এফ আর টাওয়ারে ঘটে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ড। ভবনের ভেতর আটকেপড়া লোকজনকে বের করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন ফায়ার ব্রিগেডের সদস্য সোহেল রানা। অন্যের জীবন বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হওয়া এই ফায়ার ব্রিগেড কর্মীকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু দেশবাসীকে কাঁদিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৮ এপ্রিল না ফেরার দেশে চলে যান সোহেল।
মানবতার জন্য এভাবে নিজের জীবন উৎসর্গ করার ঘটনাটা সবার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। সোহেলের বিদেহী আত্মার জন্য প্রার্থনা আর তাঁর পরিবারের জন্য সমবেদনা জানানোর মিছিলে শামিল হন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। এই তালিকা থেকে বাদ পড়েননি বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও সাংসদ মাশরাফি বিন মর্তুজাও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আত্মত্যাগী সোহেলের প্রতি আবেগঘন শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন মাশরাফি।
নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে দেশসেরা পেসার লিখেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত গল্পের সুপারহিরোদের নিয়ে কথা বলি, তাদের নিয়ে জমে ওঠে আমাদের চায়ের আড্ডা। স্পাইডার ম্যান, সুপারম্যান এরা আমাদের জীবনকে প্রতিনিয়ত প্রভাবিত করে। কিন্তু আমাদের আশপাশে এমন কত যে সুপারহিরো আছে আমরা জানিও না। তাদের নিয়ে জমে উঠে না আমাদের চায়ের আড্ডা। আমরা স্মরণ করি না তাদের ত্যাগের কথা। আজ এমনি একজন সুপারম্যানের কথা বলব। এই সুপারম্যানের নাম হচ্ছে সোহেল রানা।’
স্ট্যাটাসের পরের অংশে মাশরাফি লিখেন, ‘তিনি বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের একজন ফায়ারম্যান ছিলেন। গত ২৮ মার্চ বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নি নির্বাপণ ও উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছিলেন। মরনের ভয় না করে উদ্ধার করতে গিয়েছিলেন এফ আর বিল্ডিংয়ে আটকেপড়া মানুষদের। কিন্তু উদ্ধার কাজ করতে গিয়ে তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ১৭ মিনিটে তার মৃত্যৃ হয় তার। আমরা গভীরভাবে স্মরণ করছি সোহেল রানার মতো সকল সুপারম্যানদের।’
মানবতার জন্য প্রাণ উৎসর্গকারী সুপারহিরোর প্রতি ক্রিকেট মাঠের সুপারহিরোর এই শ্রদ্ধাঞ্জলির ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। সোহেলের প্রতি এমন হৃদয়স্পর্শী সহানুভূতি প্রকাশের জন্য মাশরাফির প্রশংসা করেন সবাই।