বিশ্বকাপে সেরা পারফর্মার হতে চান মিঠুন
২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলেছিলেন। দলে নিজের জায়গাটা একেবারেই পাকাপোক্ত ছিল না তখন। সেই আসরে ব্যর্থ হওয়ার পর লম্বা সময়ের জন্য দল থেকে ছিটকেও যান। তবে গত বছর এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই ব্যাট হাতে দারুণ কিছু ইনিংস খেলে জাতীয় দলের অন্যতম ব্যাটিং ভরসার নাম হয়ে গেছেন মোহাম্মদ মিঠুন। এরই ধারাবাহিকতায় এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপ দলেও অনুমিতভাবেই সুযোগ পেয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তবে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে যাবেন ভেবে কিছুটা রোমাঞ্চিত হলেও খুব বেশি উচ্ছ্বাসে ভেসে যেতে নারাজ মিঠুন। বরং বিশ্ব আসরে নিজের সেরা পারফরম্যান্সটা করার দিকেই বেশি মনোযোগী হতে চান তিনি।
বাংলাদেশ দলের এবারের স্কোয়াডের সাতজন খেলোয়াড় প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন, সেই দলে আছেন মোহাম্মদ মিঠুনও। তবে এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের উচ্ছ্বাস নেই মিঠুনের। দলে সুযোগ পাওয়ার খবরটাও নির্বাচকদের মাধ্যমে নয়, জানতে পেরেছেন সংবাদমাধ্যমের বরাতে। খুশির খবরটা প্রথম কীভাবে পেয়েছেন জানতে চাইলে বলেন, ‘নির্বাচকদের কারো সঙ্গে কথা হয়নি। আপনারা যেভাবে জানেন, আমিও সেভাবেই জেনেছি। আপনাদের কারো ফোন থেকেই মনে হয় প্রথম জানতে পারি যে আমি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে আছি। এর আগে কিছুই জানতাম না।’
দলে সুযোগ পাওয়ার প্রাথমিক অনুভূতি জানিয়ে অল্প কথায় মিঠুন বলেন, ‘এটা তো অবশ্যই অন্যরকম একটা অনুভূতি। তবে অনুভূতি তো আর বলে প্রকাশ করা যায় না, ভেতরেই থাকে। তেমন বিশেষ কিছু আসলে কাজ করেনি সেভাবে। আর আলাদাভাবে তেমন কিছু মনেও হয়নি।’
২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলেও দলে থিতু হয়েছেন বছরখানেক হলো। তবে ক্যারিয়ারের পেছনের হতাশার দিকে না তাকিয়ে ভবিষ্যতে চোখ রাখতে চান মিঠুন। বর্তমান অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘সব সময় বলেছি যে আমার ক্যারিয়ারটা কখনোই খুব সোজা পথে এগোয়নি। উত্থান-পতনের মধ্য দিয়েই এগিয়েছে। তবে আল্লাহর রহমতে গত কয়েকটা সিরিজ ভালো গেছে। ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করব যেন আগামী সিরিজগুলোতেও ভালো করতে পারি। দেখা যাক, সামনে কী হয়।’
এবারের বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় একটি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ দল। এরপর রয়েছে লম্বা সময় ধরে বিশ্বকাপের মতো মেগা আসরে খেলার চ্যালেঞ্জ। সব মিলিয়ে ধকল সামলানোর জন্য বড় ধরনের শারীরিক আর মানসিক প্রস্তুতি প্রয়োজন। বৈরী ইংলিশ কন্ডিশনে এমন চ্যালেঞ্জিং আসরের প্রস্তুতি নিয়ে মিঠুন বলেন, ‘অন্যদের তুলনায় বেশি প্রস্তুত কি না বলতে পারব না, তবে আমার দিক থেকে শতভাগ প্রস্তুত হয়ে যেতে চেষ্টা করব। আয়ারল্যান্ড সফরের পরেই বিশ্বকাপ। অনেক লম্বা সময়। এ সময়ে ফিটনেস অনেক বড় একটা বিষয়। তবে দলের সবাই পেশাদার ক্রিকেটার এবং জানে কীভাবে ফিট থাকতে হবে। তবে ইনজুরি তো আর কাউকে বলে আসে না, হঠাৎ করে চলে আসে। নিজেদের দিক থেকে আমরা শতভাগ চেষ্টা করতে পারি, বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।’
বিশ্বকাপে ব্যক্তিগতভাবে বিশেষ কোনো লক্ষ্য নির্ধারণ না করলেও দলের প্রত্যাশা ও পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে চান মিঠুন। তবে আসরে দলের সেরা পারফর্মার হলে মন্দ হবে না জানিয়ে ডানহাতি টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান বলেন, ‘অবশ্যই দলের প্রয়োজন পূরণ করা আমার প্রথম লক্ষ্য। দল আমার কাছে কী চায়, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। তবে যদি দলের সেরা পারফর্মার হতে পারি, তাহলে এর চেয়ে ভালো কিছু তো আর হতে পারে না আমার জন্য। যে পজিশনেই খেলি না কেন, সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব।’