ক্রিকেটে যে বিরল কীর্তি গড়েন পতৌদি!
ভারতের অধিনায়ক হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তবে ওই সময় তিনি ভারতের হয়ে খেলবেন না বলে জানিয়ে দেন। ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেন সেঞ্চুরি। ওই ঘটনার ১৪ বছর পর ভারতের হয়ে খেলেন তিনি। লড়েন তাঁর সাবেক দল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। একসময় ভারতের অধিনায়কত্বও করেছেন তিনি!
তাঁর নাম ইফতিখার আলি খান পতৌদি। তিনি ভারতের একসময়কার অধিনায়ক মনসুর আলি খান পতৌদির বাবা। মনসুর আলির ছেলেই হচ্ছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সাইফ আলি খান।
১৯৩২ সালের ২ ডিসেম্বর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক হয় ইফতিখারের। তিনি ছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেন তিনি। ওই দলের হয়ে একটি সেঞ্চুরিও হাঁকিয়েছেন ইফতিখার। ওই ম্যাচে ইংল্যান্ড ১০ উইকেটে অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করে।
তবে ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন ইফতিখার আলি খান পতৌদি। ১৯৩২ সালে তাঁকে ভারতের অধিনায়ক করার ব্যাপারেও উঠেছিল গুঞ্জন। তবে ওই সময় ভারতের পক্ষে খেলতে অস্বীকৃতি জানান ইফতিখার।
১৯৩৪ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে শেষ টেস্ট খেলার পর ১৯৩৬ সালে ইংল্যান্ড সফরে আবারও ভারতের হয়ে খেলার সুযোগ পান ইফতিখার আলি। শুধু তাই নয়, তাঁকে অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত করে ভারত। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন তিনি।
তবে এত কিছুর পরও ১৯৪৬ সালে ঠিকই ভারতের হয়ে খেলেন এই ডানহাতি। ওই সময় তিনি ছিলেন ভারতের অধিনায়ক। মজার বিষয় হলো, নিজের সাবেক দল ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই খেলতে হয় তাঁকে।
ইংল্যান্ড ও ভারতের হয়ে মোট ছয়টি টেস্ট খেলেন ইফতিখার আলি খান পতৌদি। এই ছয় টেস্টে ১৯ দশমিক ৯ গড়ে করেন মোট ১৯৯ রান।
এদিকে, ইফতিখার আলি খান পতৌদির ছেলে মনসুর আলি খান পতৌদিও ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। একই দলের হয়ে ভিন্ন সময়ে বাবা-ছেলের অধিনায়ক হওয়ার এমন কীর্তি আর কোনো দলের নেই। ৪৬ টেস্টে ৩৪ দশমিক ৯ গড়ে মোট ২,৭৯৩ রান করেন মনসুর আলি। এর মধ্যে ১৭টি অর্ধশতকসহ ছয়টি শতকও রয়েছে তাঁর।
মনসুর আলি ১৯৬৯ সালে জনপ্রিয় অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরকে বিয়ে করেন। বাবা-দাদা দুজনই ক্রিকেটে বিশেষ অবদান রাখলেও মায়ের পথই বেছে নেন মনসুর আলি খান ও শর্মিলা ঠাকুরের দুই সন্তান সাইফ আলি খান ও সোহা আলি খান। আরেক সন্তান সাবা আলি খান অবশ্য কারো পথেই যাননি। জুয়েলারি ডিজাইনার হিসেবেই নিজের পেশাগত জীবনকে তুলে ধরেন তিনি।