রাশিয়া বিশ্বকাপ নিয়ে ব্ল্যাটারের ‘বোমা’
দুর্নীতির অভিযোগে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন ফিফা সভাপতি সেপ ব্ল্যাটার। বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধভাবে আদান-প্রদানের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তও চলছে। সময়টা তাই একদমই ভালো যাচ্ছে না ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার একসময়ের দণ্ডমুণ্ডের কর্তার। এরই মধ্যে বিস্ফোরক এক তথ্য দিয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে রাশিয়ায় হতে যাওয়া ফুটবল বিশ্বকাপের ভেন্যু অনেক আগেই ঠিক করে রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ব্ল্যাটার!
ফিফার সাম্প্রতিক দুর্যোগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপরে বেশ ক্ষুব্ধ ব্ল্যাটার। রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘২০১০ সালে আমরা (ফিফার ২২ সদস্যের নির্বাহী কমিটি) দুটো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমরা একমত হয়েছিলাম, ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ রাশিয়ায় হবে আর ২০২২ সালে বিশ্বকাপ ফিরবে যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্র ২০২২ বিশ্বকাপ আয়োজনের অধিকার পেলে আমরা এখন হয়তো রাশিয়ায় ২০১৮ বিশ্বকাপ কতটা দুর্দান্ত হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা করতাম। ফিফাতেও কেউ কোনো সমস্যা খুঁজে পেত না।’
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ২০২২ বিশ্বকাপ আয়োজনের ভার শেষ পর্যন্ত পেয়েছে কাতার। সে জন্য ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি ও উয়েফা সভাপতি মিশেল প্লাতিনিকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ব্ল্যাটার, ‘সারকোজি ও কাতারের যুবরাজ শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির মধ্যে এক বৈঠকের পর সবকিছু বদলে যায়।’ বৈঠক শেষে এ দুজন প্লাতিনির সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন ব্ল্যাটার। বৈঠকের পর ইউরোপের চারটি দেশের ভোট চলে যায় কাতারের ঘরে। বিশ্বকাপ আয়োজনের লড়াইয়ে মধ্যপ্রাচ্যের তেল-গ্যাসসমৃদ্ধ দেশটি ১৪-৮ ব্যবধানে হারিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্রকে।
ফিফার বর্তমান সংকটের জন্য প্লাতিনিকে দায়ী করেছেন ব্ল্যাটার। ৭৯ বছর বয়সী এই সুইস ফুটবল প্রশাসক বলেছেন, ‘প্লাতিনি ফিফার সভাপতি হতে চেয়েছিল। কিন্তু সামনে এগিয়ে আসার সাহস তার ছিল না। অথচ এখন দেখুন, আমরা কোথায় এসে দাঁড়িয়েছি। সবকিছুর জন্য প্লাতিনিই দায়ী।’
অবৈধ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে ব্ল্যাটারের পাশাপাশি ফুটবলবিষয়ক সব ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন প্লাতিনি। তবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ফিফা সভাপতি নির্বাচনে অন্যতম ফেভারিট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে ফ্রান্সের এই ফুটবল কিংবদন্তিকে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে প্লাতিনি নিজেকে আবারো নির্দোষ দাবি করে বলেছেন, ‘সব দিক চিন্তা করলে বিশ্ব ফুটবলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমিই সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি।’ তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভুল প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত ফিফা সভাপতি নির্বাচনে দাঁড়ানোর ছাড়পত্র পাবেন না প্লাতিনি।