৩৪২ রানে থামল আফগানিস্তান

চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন শেষে তাইজুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘ম্যাচ এখনো প্রত্যাশার বাইরে চলে যায়নি।’ দ্বিতীয় দিন বল হাতে সেটার প্রতিফলন নিজেই দেখালেন। ৫ উইকেটে ২৭১ রানে দিন শুরু করা আফগানিস্তান শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন তিনি। আসগর আফগানকে মুশফিকের হাতে ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়ে দেন। সেঞ্চুরির দুয়ার থেকে ৮ রান দূরে থাকতেই সাজঘরে ফেরেন আসগর। ৯২ রানে আউট হন তিনি। ১৭৪ বলের ইনিংসটিতে ছিল তিনটি বাউন্ডারি ও দুটি ছ্ক্কা।
আসগরের পর জাজাইকেও টিকতে দেননি তাইজুল। পাঁচ ওভার বাদে জাজাইকে সরাসরি বোল্ড করেন বাঁহাতি এই স্পিনার। ফেরার আগে ৪১ রান করেন জাজাই।
পরের শিকার অবশ্য অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের। ৯ রানে কায়েস আহমেদকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম উইকেটের দেখা পান অধিনায়ক। পাঁচ রানের মাথায় সাকিবের বলে কাটা পড়েন ইয়ামিনও। তার মধ্যে অবশ্য সফরকারীদের রানের গতি বাড়িয়েছেন রশিদ খান। ৬১ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলে দলকে বেশ ভালো পুঁজি এনে দেন অতিথি অধিনায়ক। রশিদ খানকে ফিরিয়ে আফগান শিবিরে শেষ আঘাত হানেন মেহেদী মিরাজ। তাতে দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন পর্যন্ত ব্যাট করতে ৩৪২ রানে থামে আফগানিস্তানের প্রথম ইনিংস।
বাংলাদেশের পক্ষে বল হাতে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন তাইজুল। নাঈম ১৩ ওভারে ৪৩ রান খরচায় দুই উইকেট তুলে নেন। ৬৪ রান দিয়ে সমান দুটি উইকেট নেন সাকিব। আর একটি করে উইকেট পান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদী মিরাজ।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম দিনে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামা বাংলাদেশ শুরুতে বেশ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছে। আফগানিস্তানকে বিপদে ফেলতে একটু ব্যতিক্রমী বোলিং আক্রমণ সাজান অধিনায়ক সাকিব। প্রথম চার ওভারে তিনজন স্পিনার ব্যবহার করেন তিনি। তাতে সাফল্যও আসে। আফগানদের দলীয় ১৯ রানের মাথায় তাইজুলের হাত ধরে আসে প্রথম সাফল্য। বাঁহাতি স্পিনারের দারুণ এক বলে ইহসানউল্লাহকে ব্যক্তিগত ৯ রানে বোল্ড করে নিজের শততম টেস্ট উইকেট তুলে নেন তিনি। এর মাধ্যমে টেস্টে ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে দ্রুততম উইকেট সেঞ্চুরি করেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
দ্বিতীয় ঘণ্টায়ও আফগান শিবিরে আঘাত হানেন তাইজুল। ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানকে (২১) লংঅফে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তিনি। লাঞ্চের আগমুহূর্তে বৈচিত্র্যের জন্য মাহমুদউল্লাহকে আক্রমণে আনেন সাকিব। বল হাতে এসেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। তুলে নেন আফগানদের তৃতীয় উইকেট।
তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া আফগানদের হাল ধরেন রহমত শাহ। তুলে নেন টেস্ট ক্রিকেটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। এর আগে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও পঞ্চাশ ছাড়ানো দুটি ইনিংস খেলেছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় সেশনে আসগরকে নিয়ে দারুণ সময় পার করেন তিনি।
তরুণ স্পিনার নাঈম হাসান তৃতীয় সেশনের শুরুতে জোড়া আঘাত হানলে বাংলাদেশ কিছুটা সময়ের জন্য ম্যাচে ফিরেছিল। তবে ষষ্ঠ উইকেটে দারুণ দৃঢ়তা দেখান আসগর ও আফসার জাজাই জুটি। দুজনে মিলে ৭৪ রানের জুটি গড়ে শুধু দলের বিপর্যয়ই এড়াননি বড় সংগ্রহের পথ দেখান। দিন শেষে আসগর ৮৮ ও আফসার ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন।