‘ভাই একটা টিকেট হবে’
সাজিদ রহমান, পিয়াস আকবর ও মীর আবদুল্লাহ-তিন বন্ধু মিলে এসেছিলেন বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি দেখতে। বেলা ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের বাইরে অপেক্ষা করলেও একটা টিকেটও পাননি তাঁরা। তাই গলায় কার্ড ঝুলানো কোনো সাংবাদিক অথবা বিসিবির কর্মকর্তার দেখা পেলেই জিজ্ঞেস করছেন, ‘ভাই একটা টিকেট হবে?’ ‘সোনার হরিণ’ টিকেটের দেখা তাঁরা পাননি। সাজিদ-পিয়াসদের মতো বহু দর্শককে ফিরতে হয়েছে হতাশ হয়ে, খেলা দেখার আশা জলাঞ্জলি দিয়ে ভগ্ন মনোরথে।
শুক্রবার ছুটির দিন ছিল বলে মিরপুর স্টেডিয়াম একেবারে কানায়-কানায় পরিপূর্ণ। টিকেট না পেয়ে কতজন যে মাঠে ঢুকতে পারেনি তার হিসাব করাই মুশকিল। কোনো-কোনো অত্যুৎসাহী ক্রিকেট-ভক্ত স্টেডিয়ামের বাইরে ফুটপাতে বসে রেডিওতে খেলা শুনে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়েছেন। প্রতিপক্ষের উইকেট পতনের আনন্দে মেতে উঠছেন।
স্টেডিয়ামের ভেতরে যাঁরা ঢুকতে পেরেছেন, তাঁদের মনে যেন বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। একে তো বাংলাদেশ এখন সাফল্যের শিখরে, তার ওপরে ছুটির দিন। এমন দিনে টিকেট পাওয়ার সৌভাগ্য কজনের হয়! সেই সৌভাগ্যবানদের একজন উত্তর বাড্ডা থেকে আসা পলাশ মাহবুব। ক্লাব হাউস নর্থ গ্যালারির একটা টিকেট তিনি পেয়েছেন অতিকষ্টে। অবশ্য সেজন্য তাঁকে গুনতে হয়েছে তিন গুণেরও বেশি টাকা। ৩০০ টাকার টিকেট কিনেছেন ১০০০ টাকায়। তবে এত বেশি টাকা দিয়ে টিকেট কিনলেও খেলা দেখার সুযোগ পেয়েই পলাশ খুশি।
পলাশ যখন মাঠে ঢুকছেন, তখন ১০ রানে তিন উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে দিশেহারা। ম্যাচের শুরুতে বাংলাদেশের সাফল্যের সাক্ষী হতে না পারলেও তাঁর খুব একটা আক্ষেপ নেই। কারণ তিনি মুস্তাফিজুর রহমানের খেলা দেখতে এসেছেন, ‘শেষ ওয়ানডেতে মুস্তাফিজ পাঁচ উইকেট নেওয়ার পরই আমি প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আজ বেলা ১২টায় মাঠে চলে এসেছি। এত আগে আসার জন্যই বোধহয় টিকেটটা পেয়েছি। কিন্তু অনেকে আমার চেয়ে বেশি টাকা দিয়েও টিকেট পাননি। ভালো লাগছে মাঠে বসে মুস্তাফিজের দুটি উইকেট শিকার দেখতে পেরেছি বলে।’
ওয়ানডে সিরিজে অবশ্য টিকেটের জন্য এমন আকুলতা দেখা যায়নি। বাংলাদেশ জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করলেও কোনো ম্যাচেই স্টেডিয়ামে এমন উপচে পড়া ভিড় ছিল না। টি-টোয়েন্টি আর শুক্রবারের জন্যই হয়তো শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এমন টিকেটের হাহাকার।