পাকিস্তানের ক্রিকেটে আবার ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ
ইংল্যান্ডের কাছে ৩-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হেরে এমনিতেই পাকিস্তান হতাশ। তার সঙ্গে ম্যাচ পাতানোর গুঞ্জন শুরু হওয়ায় পাকিস্তানের ক্রিকেটাঙ্গন আবারো বিপাকে। ইংল্যান্ডের পত্রিকা ডেইলি মেইলের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স ‘সন্দেহজনক’ ছিল। তবে শারজায় অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে কোনো ‘গোলমাল’ হয়নি বলে দাবি করেছেন পাকিস্তানের কোচ ওয়াকার ইউনিস।
শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান গুটিয়ে যায় মাত্র ২০৮ রানে। রান আউট হন অধিনায়ক আজহার আলী, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও শোয়েব মালিক। অল্প রানের পুঁজি নিয়ে ফিল্ডিংও ভালো করতে পারেনি পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। ডেইলি মেইল জানিয়েছে, এসব কারণে আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগ ইতিমধ্যে ম্যাচটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
তবে এ ধরনের অভিযোগ দৃঢ়তার সঙ্গে অস্বীকার করেছেন ওয়াকার, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তবে এখানে-সেখানে এ বিষয়ে যে কথাবার্তা হচ্ছে সেটা জানি। আমার পাকিস্তান দল ও খেলোয়াড়দের সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা আছে। সেই ম্যাচে কিচ্ছু হয়নি।’
তৃতীয় ওয়ানডেতে ২০৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২২তম ওভারে চার উইকেটে ৯৩ রানে পরিণত হয়ে হারের শঙ্কায় পড়ে যায় ইংল্যান্ড। তবে এরপর আর কোনো ক্ষতি হয়নি তাদের। নয় ওভার হাতে রেখেই ছয় উইকেটের সহজ জয় পেয়ে যায় অতিথিরা।
ওয়াকারের মতে, এমন হার দুর্ভাগ্যজনক। তবে শিষ্যদের পারফরম্যান্স নিয়ে সন্তুষ্ট পাকিস্তানের কোচ, ‘হ্যাঁ, আমরা ম্যাচটা হেরেছি। খেলায় হার-জিত থাকেই। আমরা যেভাবে হেরেছি তা দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু আমার ছেলেদের নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। তাদের নিয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট।’
তবে ওয়াকার কোনো গোলমাল না দেখলেও শারজার ম্যাচটি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘তিনটা রান আউট, সন্দেহজনক কিছু শট... এমনটা আগে কখনো দেখিনি। তারা নিশ্চয়ই আমাদের বোকা মনে করছে!’ পরে অবশ্য টুইটটা মুছে দেন ভন।
কিন্তু পাকিস্তান ক্রিকেটের যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গেছে বলে মনে করেন শাহরিয়ার খান। ভনের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সভাপতির মন্তব্য, ‘আমার মনে হয় তিনি (ভন) একটা ভুল বার্তা দিয়েছেন। এটা খুব খারাপ ব্যাপার। আমরা আইসিসিতে এ নিয়ে কথা বলব। টুইটটা তিনি পরে মুছে দিলেও ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়েই গেছে।’
পাকিস্তানের ক্রিকেটে ম্যাচ পাতানোর কেলেঙ্কারি নতুন কিছু নয়। ২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরে স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন পাকিস্তানের সে সময়ের অধিনায়ক সালমান বাট এবং দুই পেসার মোহাম্মদ আসিফ ও মোহাম্মদ আমির। ২০০০ সালে ম্যাচ পাতানোয় জড়িত থাকার দায়ে আজীবন নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সাবেক অধিনায়ক সেলিম মালিক। একই অভিযোগে ওয়াকার ইউনিস, মুশতাক আহমেদ, ওয়াসিম আকরামদেরও জরিমানা দিতে হয়েছিল। ২০১০ সালে ইংলিশ কাউন্টিতে স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে আজীবন নিষিদ্ধ হয়েছেন লেগস্পিনার দানেশ কানেরিয়াও।