জার্মানিকে হারিয়ে ফাইনালে ফ্রান্স
২০১৪ বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল ফ্রান্সকে। দুই বছর পর ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে ফরাসীদের প্রতিপক্ষ সেই জার্মানি। ঘরের মাঠে প্রতিশোধের সুযোগটা নষ্ট করেনি ‘লা ব্লুজ’। আন্তইন গ্রিজম্যানের দুবারের লক্ষ্যভেদে ২-০ গোলে জিতে ফাইনালে উঠে গেছে স্বাগতিকরা। আগামী রোববার শিরোপা লড়াইয়ে ফ্রান্সের প্রতিপক্ষ পর্তুগাল।
বৃহস্পতিবার রাতে মার্সেইয়ের স্তাদে ভেলোদ্রোমে ম্যাচের শুরুতে প্রাধান্য ছিল ফ্রান্সের। সপ্তম মিনিটে পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে ভালো একটা সুযোগ পেয়েছিলেন গ্রিজম্যান। তবে তাঁর গড়ানো শট ঠেকাতে সমস্যা হয়নি জার্মান গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যারের।
তবে এরপরই আস্তে আস্তে ম্যাচের লাগাম হাতে নিয়েছে জার্মানরা। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের মুহুর্মুহু আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়লেও কোনোরকমে বেঁচে যাচ্ছিল ফরাসীরা। সেজন্য স্বাগতিকদের গোলরক্ষক হুগো লরিস কৃতিত্বের দাবীদার। বেশ কয়েকটি বিপজ্জনক আক্রমণ ঠেকিয়ে নিজেদের পোস্ট অক্ষত রেখেছেন তিনি।
৪২ মিনিটে অবশ্য খেলার ধারার বিপরীতে দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল ফ্রান্স। জেরোম বোয়াটেংয়ের ভুলে বল পেয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন অলিভিয়েরজিরুদ। তবে পেছন থেকে ছুটে এসে জিরুদকে দুর্দান্ত ট্যাকল করে সে যাত্রা দলকে রক্ষা করেছেন বেনেডিক্ট হুভেডেস।
কিন্তু ‘লা ব্লুজ’কে ঠেকাতে পারেনি জার্মানি। বিরতির ঠিক আগে কর্নার থেকে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে হ্যান্ডবল করেছেন বাস্টিয়ান শোয়াইনস্টাইগার। সঙ্গে সঙ্গে রেফারির পেনাল্টির বাঁশি। নয়্যারকে পরাস্ত করে স্বাগতিকদের এগিয়ে দিতে ভুল হয়নি গ্রিজম্যানের।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পিছিয়ে থাকা জার্মানি নয়, বরং এগিয়ে থাকা ফ্রান্স ঝাঁপিয়ে পড়েছে প্রতিপক্ষের ওপর। কিন্তু জিরুদ আর গ্রিজম্যানের দুটো ভালো শট ঠেকিয়ে দিয়েছে জার্মান ডিফেন্স। এরপর জার্মানি অনেক চেষ্টা করেও ফ্রান্সের দুর্ভেদ্য ডিফেন্সে ফাটল ধরাতে পারেনি।
বরং ৭২ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ‘লা ব্লুজ’-এর জয় নিশ্চিত করে দিয়েছেন গ্রিজম্যান। বক্সের মধ্যে জোশুয়া কিমিচের ভুলে বল পেয়ে ক্রস করেছিলেন পল পগবা। নয়্যার কোনোরকমে হাত ছোঁয়ালেও বল এসে পড়েছে সুযোগসন্ধানী গ্রিজম্যানের পায়ে।সুযোগসন্ধানী এই ফরোয়ার্ডের লক্ষ্যভেদ দ্বিতীয়বারের মতো আনন্দে ভাসিয়ে দিয়েছে ফরাসীদের।
দুই মিনিট পর অবশ্য ভুলের প্রায়শ্চিত্ত প্রায় করেই ফেলেছিলেন কিমিচ। কিন্তু জার্মানির দুর্ভাগ্য, কিমিচের দুর্দান্ত ফ্রিকিক ফ্রান্সের গোলরক্ষককে পরাস্ত করলেও বল বেরিয়ে গেছে পোস্ট ছুঁয়ে।
বাকি সময়ে অনেক চেষ্টা করেও গোলের দেখা পায়নি জার্মানি। শেষ বাঁশির কয়েক সেকেন্ড আগে অবশ্য একটা গোল প্রায় করেই ফেলেছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু শ্কোদ্রান মুস্তাফির ক্রস থেকে কিমিচের হেড অসামান্য দৃঢ়তায় ঠেকিয়ে দিয়েছেন লরিস।