ফ্রান্স-পর্তুগালের ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই
এক মাসের অপেক্ষার প্রহর শেষের পথে। আজ রাতেই জানা যাবে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা উঠতে যাচ্ছে কার হাতে। ফাইনালে স্বাগতিক ফ্রান্স আর পর্তুগালের লড়াই শেষে নতুন চ্যাম্পিয়নকে বরণ করে নেবে ইউরোপের ফুটবলাঙ্গন।
প্যারিসের বিখ্যাত স্তাদে দি ফ্রান্সে ফরাসিদের এগিয়ে না রেখে উপায় নেই। ফুটবল ঐতিহ্যে, সাফল্যে কিংবা সাম্প্রতিক ফর্মেও পর্তুগিজদের চেয়ে অনেক এগিয়ে ‘লা ব্লুজ’। বিশ্বকাপে একবার আর ইউরোতে দুবার শিরোপাজয়ী ফ্রান্স এবারের টুর্নামেন্টে খেলছে চ্যাম্পিয়নের মতোই। কোয়ার্টার ফাইনালে আইসল্যান্ডকে ৫-২ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পর সেমিফাইনালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে হারিয়েছে ২-০ গোলের সুস্পষ্ট ব্যবধানে।
আজকের ফাইনালে তাই ফ্রান্স ফেভারিট। পর্তুগালের বিপক্ষে তাদের অতীত রেকর্ডও দুর্দান্ত। দুদলের সর্বশেষ ১০টি মুখোমুখি লড়াইয়ে সবগুলোতে জিতেছে ফরাসিরা। তা ছাড়া ঘরের মাঠে সমর্থকদের হৃদয় উজাড় করা সমর্থন তো আছেই। গত নভেম্বরে প্যারিসে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলার শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি ফ্রান্স। দেশের মানুষের মুখে তাই হাসি ফোটাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ আন্তইন গ্রিজম্যান। টুর্নামেন্টে ছয় গোল করে সাড়া ফেলে দেওয়া এই ফরোয়ার্ড বলেছেন, ‘সব ম্যাচ জিতে শেষ অবধি পৌঁছে ফরাসিদের উল্লাসে ভাসানোর দায়িত্ব ছিল আমাদের। আশা করি শেষটাও সুন্দর হবে।’
এই গ্রিজম্যানের সঙ্গে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ব্যক্তিগত লড়াই বাড়তি উত্তেজনা এনে দিয়েছে ফাইনালে। মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালেও মুখোমুখি হয়েছিলেন দুজনে। সেদিন দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গ্রিজম্যানের পেনাল্টি মিসের মাশুল দিয়ে টাইব্রেকারে হার মেনেছিল আতলেতিকো মাদ্রিদ। টাইব্রেকারে শেষ শটে লক্ষ্যভেদ করে রিয়াল মাদ্রিদকে একাদশ শিরোপা উৎসবে মাতিয়ে তুলেছিলেন রোনালদো।
আজ প্যারিসের ফাইনালেও অধিনায়কের দিকে তাকিয়ে পর্তুগাল। এক যুগ আগে ইউরোর ফাইনালে উঠলেও গ্রিসের কাছে হেরে রানার্সআপের ট্রফি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল পর্তুগিজদের। রোনালদো অবশ্য সন্তুষ্ট থাকতে পারেননি। পরাজয়ের বেদনায় অঝোরে কেঁদেছিলেন সেই সময়ের ১৯ বছরের তরুণ।
এই ১২ বছরে অনেক কিছু পাল্টে গেছে পৃথিবীতে। সেদিনের রোনালদো আজ বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আর রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে অজস্র সাফল্যে উদ্ভাসিত তাঁর ক্যারিয়ার। কিন্তু জাতীয় দলকে আজও কোনো শিরোপা উপহার দিতে পারেননি। তিনবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার এবার স্বদেশকে উচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে দিতে মরিয়া। ফাইনালের আগে রোনালদো বলেছেন, ‘১২ বছর পর আমি আবারও ফাইনালে। আমি সে জন্য গর্বিত। আমি সব সময় পর্তুগালের হয়ে শিরোপাজয়ের স্বপ্ন দেখি। আশা করি এবার স্বপ্নপূরণ হবে।’