বার্সেলোনায় মেসি এখন রোনালদিনিয়োর ভূমিকায়
এখন হয়তো তাঁকে ঘিরে আগের মতো হৈচৈ নেই। কিন্তু একসময় রোনালদিনিয়ো ছিলেন বিশ্বসেরা ফুটবলার। ২০০৪ ও ২০০৫ সালে টানা দুবার ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার জিতে নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন অন্য উচ্চতায়। লিওনেল মেসি যোগ দেওয়ার আগে তাঁকে ঘিরেই সাজানো হতো বার্সেলোনার রণকৌশল। এখন নিজের ভূমিকায় মেসিকে দেখে দারুণ খুশি রোনালদিনিয়ো। মেসি যেভাবে নেইমারকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন, তা নিয়েও তিনি আনন্দিত।
২০০৪ সালে বার্সেলোনার যুব দল থেকে মূল দলে যোগ দেওয়ার সময় মেসি নেহাতই এক তরুণ ফুটবলার ছিলেন। তবে শুরুতেই তাঁকে ‘ছোট ভাই’য়ের মতো বুকে টেনে নিয়েছিলেন রোনালদিনিয়ো। দুজনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক মাঠেও প্রতিফলিত হয়ে বার্সাকে এনে দিয়েছিল অনেক সাফল্য।
সেসব দিনের কথা আজো ভুলতে পারেননি রোনালদিনিয়ো। ভারতের চেন্নাইয়ে প্রিমিয়ার ফুটসাল টুর্নামেন্ট খেলতে এসে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘মেসি যখন বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিল, তখন সে একদম বাচ্চা ছেলে। আমি অবশ্য তখনই তার মধ্যে প্রতিভার স্ফুলিঙ্গ দেখতে পেয়েছিলাম। আমি তার সঙ্গে খেলাটা দারুণ উপভোগ করতাম। শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও আমাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আমি মেসিকে যেমন সাহায্য করেছিলাম, বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার পর নেইমারকে মেসি ঠিক তেমনই সাহায্য করেছে। আমি এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত। একজন সিনিয়র খেলোয়াড়ের কাছে দল তো তেমন প্রত্যাশাই করে।’
১৪ বছর আগে ব্রাজিলের পঞ্চম বিশ্বকাপ জয়ে বিশাল অবদান রাখা রোনালদিনিয়ো রিও অলিম্পিকে নেইমারদের সাফল্যের ব্যাপারে আশাবাদী। অলিম্পিক ফুটবলে আজ পর্যন্ত ব্রাজিল শিরোপা জিততে পারেনি। তবে রোনালদিনিয়োর আশা, ঘরের মাঠে তাঁর উত্তরসূরিরা বিমুখ করবে না স্বদেশের মানুষকে, ‘আমাদের দলটা ভারসাম্যপূর্ণ। অতীতের মতো বর্তমান ব্রাজিল দলেও অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে। অতীতের সঙ্গে বর্তমানের একটাই শুধু বড় ধরনের পার্থক্য দেখতে পাচ্ছি। এখন জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা খুব কম সময়ই একসঙ্গে খেলার সুযোগ পায়। আর তাই সামর্থ্যের সেরাটা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে তাদের জন্য।’
ফুটবল মাঠে রোনালদিনিয়োর অনেক কীর্তি। তবে একটা ‘বিশেষ’ কীর্তি আজো আলোড়িত করে ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়। ২০০২ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফ্রিকিক থেকে এক অবিশ্বাস্য গোল করেছিলেন তিনি। গোলরক্ষক ডেভিড সিম্যানের মাথার ওপর দিয়ে জালে ঢোকা গোলটাই শেষ পর্যন্ত জয় এনে দিয়েছিল ব্রাজিলকে। অসাধারণ গোলটি সম্পর্কে রোনালদিনিয়োর স্মৃতিচারণ, ‘ইংল্যান্ড ম্যাচের জন্য আমরা খুব ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। অনেক ভিডিও দেখে ওদের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করেছিলাম আমরা। আমি জানতাম যে ফ্রিকিকের সময় সিম্যান একটু এগিয়ে আসতে পছন্দ করে। তার পরে যা হয়েছিল, তা আসলে সহজাত। ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিপক্ষের দুর্বলতা কাজে লাগানোই তো প্রত্যাশিত।’