সাব্বিরের শতকে পাকিস্তান পরাস্ত

এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বেশ কিছু সাফল্যের ভিড়ে তাঁর নামটিও উঠে এসেছে আলোচনায়। ছয়-সাত নম্বরে নামতেন বলে খুব বড় ইনিংস হয়তো খেলতে পারেননি। তবে যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, প্রতিভার আলো বিচ্ছুরিত হয়েছে তাঁর ব্যাট থেকে। পাকিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে সেই সাব্বির রহমানই বিসিবি একাদশের জয়ের নায়ক। দারুণ এক সেঞ্চুরি করে স্বাগতিক দলকে নাটকীয়ভাবে এক উইকেটের জয় এনে দেওয়ার কৃতিত্ব ২৩ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের।
ফতুল্লা স্টেডিয়ামে আজ বুধবার ২৬৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা বিসিবি একাদশের শুরুটা একদমই ভালো হয়নি। দলীয় নয় রানে ফিরে যান দুই ওপেনার। জাতীয় দলে নবাগত রনি তালুকদার রানের খাতাই খুলতে পারেননি। বিসিবি একাদশের অধিনায়ক নাসির হোসেন খেলেননি। তাঁর জায়গায় শেষ মুহূর্তে দলে আসা তামিম ইকবালও ব্যর্থ। বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচে ১৫৪ রান করা এই বাঁহাতি ওপেনারের অবদান নয় রান। প্রতিশ্রুতিশীল লিটন দাস (২২) আর মুমিনুল হকও (১২) জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হওয়ায় ৮১ রানে চার উইকেট হারিয়ে অস্বস্তিতে পড়ে যায় স্বাগতিক দল।
তবে সাব্বিরের আক্রমণাত্মক আর ইমরুলের দৃঢ়তাভরা ব্যাটিং স্বস্তি ফিরিয়ে আনে বিসিবি একাদশের সাজঘরে। পঞ্চম উইকেটে ১২৪ রানের জুটি গড়েন দুজনে। সাব্বিরের ৯৯ বলে খেলা ১২৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস গড়ে উঠেছে সাতটি চার ও আটটি বিশাল ছক্কায়। ইমরুলের ব্যাট থেকে আসে ৩৬ রান। এ দুজনের বিদায়ের পর সোহাগ গাজীর ঝড়ো ব্যাটিং স্বাগতিকদের জয়ের পথে এগিয়ে দেয়। ২৮ বলে ৩৬ রান করা সোহাগের আক্রমণাত্মক ইনিংসে ছিল চারটি চার ও একটি ছক্কা।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানকে ভালো সূচনা এনে দেন মোহাম্মদ হাফিজ ও নতুন অধিনায়ক আজহার আলী। উদ্বোধনী জুটিতে দুজনের অবদান ৬৬ রান। আজহার ২৭ রান করে বিদায় নিলেও হাফিজ খেলছিলেন আস্থার সঙ্গে। তবে সেঞ্চুরি থেকে ১৫ রান দূরে থাকতে বিদায় নিতে হয়েছে ওয়ানডের সাবেক এক নম্বর অলরাউন্ডারকে। হাফিজের ৭৯ বলে ৮৫ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংসে ছিল ১১টি চার ও ছয়টি ছক্কা।
২৮তম ওভারে অফস্পিনার শুভাগত হোমের বলে হাফিজের বিদায়ে স্কোর দাঁড়ায় ১৪৫/৩। এরপরই বোলার-ফিল্ডারদের নৈপুণ্যে ঘুরে দাঁড়ায় বিসিবি একাদশ। নবাগত মোহাম্মদ রিজওয়ানকে বোল্ড করেন শুভাগত। বিশ্বকাপে ভালো খেলা সরফরাজ আহমেদ রান আউট হয়ে যান সাব্বির আহমেদের সরাসরি থ্রোয়ে। ৪৪তম ওভারে আট উইকেটে ২০৩ রানে পরিণত পাকিস্তান অল্প রানে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল। তবে পাঁচ নম্বরে নামা ফাওয়াদ আলম আর শেষ ব্যাটসম্যান সাঈদ আজমলের দৃঢ়তা আড়াইশর ওপরে নিয়ে গেছে অতিথিদের। ৫৮ বলে ৬৭ রান করে অপরাজিত থেকে যান ফাওয়াদ। আজমলের অবদান অপরাজিত ১৬ রান। ৩৯ রানে তিন উইকেট নিয়ে শুভাগত স্বাগতিক দলের সেরা বোলার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পাকিস্তান : ৫০ ওভারে ২৬৮/৯ (হাফিজ ৮৫, আজহার ২৭, হারিস ২৩, রিজওয়ান ১৮, ফাওয়াদ ৬৭*, সরফরাজ ৬, সাদ ১, ওয়াহাব ৭, শফিক ৫, ইয়াসির ৯, আজমল ১৬*; শুভাগত ৩/৩৯, সোহাগ ১/১৬, শহীদ ১/৩৪, মুক্তার ১/৪০, তাইজুল ১/৪০, জুবায়ের ১/৫৬)
বিসিবি একাদশ : ৪৮.৫ ওভারে ২৭০/৯ (তামিম ৯, রনি ০, লিটন ২২, সাব্বির ১২৩, মুমিনুল ১২, ইমরুল ৩৬, শুভাগত ৫, মুক্তার ১, সোহাগ ৩৬, শহীদ ১২*, তাইজুল ৬*; জুনায়েদ ৪/৩৮, রাহাত ২/৫৪, ইয়াসির ১/৩৭, ওয়াহাব ১/৪০, আজমল ১/৪৫)।