এই ড্র জয়ের চেয়ে কম নয় : মুশফিক

ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ আর একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হারের পর বিধ্বস্ত পাকিস্তান একটু হাঁফ ছেড়েছিল টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে। খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের বেশির ভাগ সময় ম্যাচের লাগাম ছিল পাকিস্তানের হাতে। মোহাম্মদ হাফিজের প্রথম দ্বিশতকে ভর করে জয়ের আশা করেছিল মিসবাহ-উল-হকের দল। কিন্তু পাকিস্তানের জন্য জয় মরীচিকা হয়েই রইল।রেকর্ডবইয়ের পাতা উল্টে তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস গড়লেন দারুণ প্রতিরোধ। বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট ড্র করল ৩১২ রানের উদ্বোধনী জুটির সৌজন্যে। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের কাছে যে ড্র জয়ের চেয়ে কম কিছু নয়।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ব্যাট করেছিল ধীরগতিতে। একদিন ও এক সেশন ব্যাটিং করে সংগ্রহ করেছিল ৩৩২ রান। জবাবে মোহাম্মদ হাফিজের দ্বিশতকে ভর করে পাকিস্তান গড়ে ৬২৮ রানের পাহাড়। প্রথম ইনিংসে নেয় ২৯৬ রানের লিড। কিন্তু চতুর্থ দিন থেকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে অলআউট করে দিয়ে সেদিনই তুলে ফেলে ২৭৩ রান। সেটাও কোনো উইকেট না হারিয়ে। পঞ্চম দিনে টেস্ট ক্রিকেটে ১৩তম বারের মতো তিন শতাধিক রানের উদ্বোধনী জুটির কীর্তি গড়েন তামিম ও ইমরুল। টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২০৬ রান করেন তামিম। ইমরুলের ব্যাট থেকে আসে ১৫০ রান। সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকেও আসে অপরাজিত ৭৬ রানের মূল্যবান ইনিংস। এমনভাবে ঘুরে দাঁড়ানো দীর্ঘ ক্রিকেট-জীবনে কখনো দেখেননি বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, ‘আমার জীবনে এমন ঘুরে দাঁড়ানো দেখিনি। পাকিস্তানের মতো দলের বিপক্ষে ছেলেরা যা করেছে সেটা ইতিহাস।’ অন্যদিকে এই ড্রকে জয়ের চেয়ে কম মনে করছেন না মুশফিক, ‘আমরা টেস্টটা আধিপত্য নিয়ে ড্র করেছি। এটা জয়ের চেয়ে কম কি?’
টেস্টে এতদিন বাংলাদেশের পক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২০০ রানের ইনিংস ছিল মুশফিকের দখলে। শনিবার তামিম সেটাকে ছাড়িয়ে করেছেন ২০৬ রান। আর তিনি প্রথম অভিনন্দন পেয়েছেন অধিনায়ক মুশফিকের কাছ থেকেই। সংবাদ সম্মেলনে সেটা জানিয়ে মুশফিক বলেছেন, ‘তামিমের জন্য খুব খুশি হয়েছি। সবার আগে আমিই ওকে অভিনন্দন জানিয়েছি। ইমরুলের জন্যও এটা অনেক বড় অর্জন। ওদের জুটিটা অসাধারণ।’
ওয়ানডে সিরিজের পর প্রথম টেস্টের সাফল্য বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আরো সামনে নিয়ে যাবে বলে আশাবাদী মুশফিক, ‘আমার মনে হয় এখান থেকেই আমাদের ক্রিকেটের নতুন যুগ শুরু হবে।’ কোচ হাথুরুসিংহেও খুলনা টেস্টকে দেখছেন একটা মাইলফলক হিসেবে। তাঁর মতে, ‘এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটা বড় টার্নিং পয়েন্ট হবে।’