বিশ্বকাপ ফুটবলে বাছাইপর্ব নিশ্চিত করল বাংলাদেশ
ফাইনাল অব দ্য ইয়ারে বিজয় দেখল বাংলাদেশ। মালদ্বীপকে ২-১ গোলে হারিয়ে পৌঁছাল বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইপর্বে। আজ মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ঢাকার কিংস অ্যারেনায় প্রথমার্ধের ১-১ সমতা চাপে ফেললেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ঘুচে যায় তা। পরে সেই ধারা অব্যাহত রেখে জয় ছিনিয়ে নেয় লাল-সবুজের দল।
১-১ সমতা নিয়ে বিরতিতে যাওয়া বাংলাদেশ বিরতি থেকে ফিরেই পায় গোলের দেখা। ৪৬ মিনিটে সাদউদ্দিনের আড়াআড়ি শট মালদ্বীপ গোলরক্ষক হোসেন শরীফ ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি শটে গোল করেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। তাতে উল্লাসে মাতে কিংস অ্যারেনার ১০ হাজার দর্শক। দ্বিতীয় গোলের পর আগ্রাসী বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ রেখে দুই প্রান্ত থেকে আক্রমণ চালান জামাল-সাদরা।
৫৮ মিনিটে সোহেল রানা লাল কার্ড দেখলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। তবু, আক্রমণ থামায়নি তারা। ৬৪ মিনিটে জামাল-রাকিব-সোহেলের ছোট ছোট পাসে প্রতিপক্ষের রক্ষণের ফাঁক খোঁজার চেষ্টা করে হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা। তবে, তা ফল আনেনি। বরং ৬৬ মিনিটে হামজা মোহাম্মদের দূরপাল্লার শট বার ঘেঁষে যায়। ৭১ মিনিটে আইসাম ইব্রাহিমের শট ঠেকিয়ে দেন বাংলাদেশি গোলরক্ষক মিতুল মারমা। ৭২ মিনিটে আবারও রক্ষা করেন মিতুল। ৮৬ মিনিটে বাম প্রান্ত থেকে রাকিব হোসেন বল বাড়িয়ে দেন মজিবুর রহমান জনির কাছে। তবে, ওয়ান টু ওয়ানে মালদ্বীপ গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন জনি।
ম্যাচের যোগ করা সময়ে মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে প্রায় ঢুকে পড়েছিলেন বক্সে। ওয়ান টু ওয়ানে তাকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন মালদ্বীপের আহনাফ রশিদ। উভয় দলই পরিণত হয় ১০ জনের দলে। শেষ দুই মিনিটে আর কোনো গোল না হলে ২-১ ব্যবধানে জয় পায় বাংলাদেশ।
এর আগে প্রথমার্ধে ঘরের মাঠ কিংস অ্যারেনায় বাংলাদেশ শুরুটা করেছে মালদ্বীপের চাপ সামলে। ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিটে বেশ কয়েকটি আক্রমণ করে মালদ্বীপ। দ্বিতীয় মিনিটেই গোল পেতে পারত তারা। রক্ষণভাগের খেলোয়াড় শাকিল আহমেদ প্রতিপক্ষের আক্রমণ বাঁচিয়েছেন কর্নারের বিনিময়ে। সপ্তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত বাংলাদেশও। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে মালদ্বীপের বক্সের কাছে চলে যান অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। সেটি ক্লিয়ার করেন মালদ্বীপের ডিফেন্ডাররা।
তবে, ১১ মিনিটে আর শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। বাম প্রান্ত দিয়ে উড়ে আসা বল একদম বাইলাইনের কাছাকাছি থেকে অসাধারণ ক্রস মালদ্বীপের বক্সে থাকা রাকিব হোসেনের উদ্দেশে পাঠান ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। সেই ক্রসে ওয়ান টাচে গোল করেন রাকিব। ম্যাচে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
গোল পেয়ে উজ্জ্বীবিত বাংলাদেশ বাড়ায় আক্রমণের গতি। ১৪ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে জামালের ক্রসে ফাহিম শট নেন। কিন্তু, তার ড্রপড শটটি কোনোমতে ঠেকিয়ে দলকে বাঁচান মালদ্বীপ গোলরক্ষক হোসেন শরীফ। ২০ মিনিটে বিপদ হতে পারত বাংলাদেশের। হামজা মোহাম্মদ তিনজনকে কাটিয়ে ডি বক্সে ঢুকে পড়েন। তার শট ব্লক করে লাল-সবুজদের রক্ষা করেন শাকিল। ৩২ মিনিটে আবারও হামজার প্রচেষ্টা। এবার বাংলাদেশের রক্ষাকর্তা গোলরক্ষক মিতুল মারমা।
৩৪ মিনিটে বাংলাদেশ আরও একটি আক্রমণ করে। আবারও ডান প্রান্ত থেকে জামালের ক্রস। গোলদাতা রাকিব এবার ফাহিমের মতোই ড্রপড শট নেন। বারে লেগে প্রতিহত হয় সেটি। এর মিনিট দুই পর কর্নার থেকে মালদ্বীপকে এগিয়ে নেন আইসাম ইব্রাহিম। ৩৬ মিনিটে হামজার কর্নার কিকে ইব্রাহিমের হেডে সমতায় ফেরে সফরকারীরা। প্রথমার্ধের বাকি সময় আর কোনো গোল না হওয়ায় ১-১ সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় দুদল।
বাংলাদেশের কোচ ও খেলোয়াড় ঘোষণা দিয়েছিলেন, মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচটি হতে চলেছে ফাইনাল অব দ্য ইয়ার। বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নিজেদের সেরাটাই দিয়েছেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।