ব্যাটিং স্বর্গে বাংলাদেশকে কঠিন চ্যালেঞ্জ দক্ষিণ আফ্রিকার
ওয়াংখেড়ের মাঠ বরাবরই ব্যাটিং স্বর্গ। যে কোনো দলই টস জিতলে ব্যাটিংই চাইবে। বাংলাদেশও তাকিয়ে ছিল টসের দিকে। কিন্তু টস ভাগ্য হলো না। আগে ব্যাট করে যথারীতি ঝড় তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। কুইন্টন ডি কক-ক্লাসেনদের ব্যাটিংয়ের সামনে রীতিমতো ধোয়া দেখে বাংলাদেশ। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে –রানের কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল এইডেন মার্করামের দল।
বিশ্বকাপে আজ সোমবার (২৪ অক্টোবর) বাংলাদেশের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৮২ রান তুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৭৪ রান কুইন্টন ডি ককের।
আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ সাবধানে করে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে উইকেটের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বাংলাদেকে। সপ্তম ওভারেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি পেসারের ডেলিভারিটি ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন হেনড্রিকস। কিন্তু লাইনে যেতে পারেননি। বল গিয়ে আঘাত হানে স্টাম্পে। ৩৩ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি। হেনড্রিকস করেন ১৯ বলে ১২ রান।
দ্বিতীয় জুটিও স্থায়ী হয়নি। জ্বলে উঠার আগেই রাসি ফন ডার ডাসেনকে বিদায় করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশি অফ স্পিনারকে মোকাবিলায় লাইন মিস করেন ডাসেন। সঙ্গে সঙ্গে আবেদন তোলে বাংলাদেশ। তাতে সাড়া দিয়ে আঙুল তোলেন আম্পায়ার। ৩৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা, ডাসেন করেন ১।
শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকার জোড়া উইকেট নেবার স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি বাংলাদেশের। বরং বাংলাদেশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে ওঠেন কুইন্টন ডি কক ও এইডেন মার্করাম। তৃতীয় উইকেটে দুজন মিলে গড়েন ১৩১ রানে শক্ত জুটি। ৩১তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন সাকিব। ফিরিয়ে দেন মার্করামকে।
বাংলাদেশ অধিনায়কের অফ স্টাম্পের ওপর ঝুলিয়ে দেওয়া বলে শট খেলেন মার্করাম। তবে টাইমিং মেলেনি। উল্টো ডিপ এক্সট্রা কভার থেকে কিছুটা সামনে ক্যাচ হয়ে যায়। দৌড়ে এসে তা লুফে নেন লিটন দাস। ৭ বাউন্ডারিতে ৬৯ বলে ৬০ রান করে থামেন দক্ষিণ আফ্রিকার ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক।
মার্করামের পর ক্লাসেনকে নিয়ে জুটি বাধেন কুইন্টন। তুলে নেন নিজের সেঞ্চুরি। সাকিবের বলে সিঙ্গেল নিয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছে যান ডি কক। ১০১ বলে চার ছক্কা ও ছয় চারে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন তিনি। এই সেই সঙ্গে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ তিনটি সেঞ্চুরি করা রেকর্ড গড়েন ডি কক।
সেঞ্চুরির পর আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন ডি কক। ছুটতে থাকেন ক্লাসেনকে নিয়ে। ১০১ বলে সেঞ্চুরি করা ডি কক পরের ২৮ বলে করেন দেড়শ। সাকিবদের রীতিমতো তুলোধুনো করে শেষ পর্যন্ত ১৭৪ রানে থামেন ডি কক। ১৪০ বলে ১৫ চার ও ৭ ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংস।
ডি কক ফেরার পর ঝড় তোলেন ক্লাসেন। ডেভিড মিলারের সঙ্গে জুটি বেধে দক্ষিণ আফ্রিকাকে রানের পাহাড়ে নেওয়ার বাকি কাজ সারেন ক্লাসেন। শেষ পর্যন্ত ৪৯ বলে ৯০ রান করেন তিনি। তার সঙ্গে মিলার করেন ৩৪ রান।
বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে সমান একটি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান, শরিফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ। শুধু হাসান মাহমুদ নেন দুটি উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা ৫০ ওভারে ৩৮২/৫ (ডি কক ১৭৪, হেনড্রিকস ১২, ডাসেন ১, মার্করাম ৬০, ক্লাসেন ৯০, মিলার ৩৪, মার্কো ১ ; সাকিব ৯-০-৬৯-১, মুস্তাফিজ ৯-০-৭৬-০, নাসুম ৫-০-২৭-০, শরিফুল ৯-০-৭৬-১, মিরাজ ৯-০-৪৪-১, মাহমুদউল্লাহ ৩-০-২০-০, হাসান ৬-০-৬৭-২)।