ইংলিশদের থামিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত
বারবার বৃষ্টির বাধা। ম্যাচ ঠিকঠাক গড়াবে কি না সেটা নিয়েও জাগে শঙ্কা। অবশেষে শঙ্কা উপেক্ষা করে গায়ানায় ঝড় তুললেন রোহিত শর্মা। সূর্য-পান্ডিয়ারাও দেখালেন ব্যাটিং ঝলক। তিন ব্যাটারে গড়ে দেওয়া ভারতের শক্ত পুঁজির সামনে দাঁড়াতেই পারল না ইংল্যান্ড। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করল রোহিত শর্মার দল।
গায়ানায় বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচটিতে ইংলিশদের ৬৮ রানে হারিয়েছে ভারত। ১১ বছরে আইসিসির টুর্নামেন্টে ভারতের ষষ্ঠ ফাইনাল এটি। যদিও শিরোপা জেতা হয়নি একটিতেও। এ ছাড়া ২০১৪ সালের পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে এই প্রথম গেল রোহিত শর্মার দল। এবার তাদের সামনে সুযোগ দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটানোর।
দিনের প্রথম সেমিফাইনাল জিতে প্রথমবারের মতো ফাইনাল নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার ভারতের বিপক্ষে আগামী ২৯ জুন শিরোপার লড়াইয়ে নামবে এইডেন মার্করামের দল।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম সেমিফাইনালটি হয়েছে একপেশে। দর্শকদের চোখ ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিতে। সেটিও হলো তেমনই। ভারতের দেওয়া ১৭১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে লড়াইও জমাতে পারেনি ইংল্যান্ড।
বল হাতে দাপট দেখানো কুলদিপ মাত্র ১৯ রান দিয়ে নেন তিন উইকেট। অক্ষর প্যাটেলও ২৩ রান দিয়ে নেন তিনটি উইকেট।
যদিও রান তাড়ার শুরুটা সতর্কভাবেই করেন জস বাটলার ও ফিল সল্ট। ২৬ রানে এই জুটি ভাঙেন অক্ষর প্যাটেল। অধিনায়ক বাটলারকে ২৩ রানে বিদায় করার পর ধস নামে ইংলিশদের। এরপর একে একে শুধু উইকেটই হারাতে থাকে ইংল্যান্ড।
কুলদিপ যাদব আর অক্ষর প্যাটেল মিলে চেপে ধরেন ইংল্যান্ডকে। এই চাপ সামলে আর খেলায় ফিরতে পারেনি তারা। ইংল্যান্ড থমকে যায় ১০৩ রানের মধ্যেই।
এর আগে গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে বৃষ্টির কারণে খেলা শুরু হয়েছে নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট পর। টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ইংল্যান্ড। দফায় দফায় বৃষ্টি মাড়িয়ে আগে ব্যাট করা ভারত ২০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান তোলে।
সেমির মহারণের দিন ফের ব্যর্থতার পরিচয় দিলেন বিরাট কোহলি। যার ব্যাটে একটা সময় নির্দ্বিধায় তাকিয়ে থাকত ভারত, সেই তিনিই এখন ব্যাটিং নিয়ে যেন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছেন। দলীয় ১৯ রানেই সাজঘরে ফেরেন কোহলি। ৯ বলে মাত্র ৯ রান করে বোল্ড হন রিচি টপলির বলে। ইংল্যান্ডকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন স্যাম কারান। বেয়ারস্টোর ক্যাচে পরিণত হয়ে ঋষভ পন্থ বিদায় নেন ছয় বলে চার রান করে।
রোহিত শর্মা অবশ্য ক্রিজে অনঢ়। সূর্যকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। ভারতের সংগ্রহ যখন আট ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে ৬৫, তখন ফের শুরু হয় বৃষ্টি। খেলা বন্ধ থাকে দীর্ঘক্ষণ। প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর শুরু হয় ম্যাচ। বৃষ্টির পর ইংলিশ বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে দেন রোহিত ও সূর্য। ৩৬ বলে অর্ধশতক তুলে নেন রোহিত। কারানকে মিড অনে মারা ছক্কায় ভারতও ছাড়ায় শতরান।
রোহিত-সূর্যের ৭৩ রানের জুটি ভাঙেন আদিল রশিদ। স্পিন ঘূর্ণিতে কুপোকাত করেন ভারতীয় অধিনায়ককে। বোল্ড হওয়ার আগে ৩৯ বলে ছয়টি চার ও দুই ছক্কায় ৫৭ রান করেন রোহিত। ফিফটির খুব কাছাকাছি গিয়েছিলেন সূর্যও। তবে, ৩৬ বলে চারটি চার ও দুই ছক্কায় ৪৭ রানে থামেন তিনি। জোফরা আর্চারের বলে ক্রিস জর্দানের তালুবন্দি হয়ে ফিরে যেতে হয় সূর্যকে।
সেট দুই ব্যাটার আউট হলে কিছুটা ব্যাকফুটে পড়ে যায় ভারত। থেমে আসে রানের চাকা। জর্দানকে টানা দুই ছয় মেরে খেলা জমিয়ে তোলা হার্দিক পান্ডিয়া টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ১৩ বলে ২৩ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে জর্দানের বলেই ধরা পড়েন কারানের হাতে। জর্দানের মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন শিভাম দুবে। শেষ দিকে রবীন্দ্র জাদেজার ৯ বলে ১৭ রানের ক্যামিওতে লড়ার মতো পুঁজি পায় ভারত।