স্পেনের লক্ষ্য সবাইকে ছাড়ানো, ইংল্যান্ডের প্রথম শিরোপার আশা
স্পেনের কোচ লুইস লা দে ফুয়েন্তেকে আধুনিক ফুটবল কোচিংয়ের অন্যতম দার্শনিক বলা চলে। সময়ের প্রতিভাবান কোচ লিওনেল স্কালোনি কিংবা গত মৌসুমে ইউরোপিয়ান ফুটবলে তোলপাড় তোলা জাভি অ্যালানসো তারই শিষ্য। শিষ্যরা সফল। স্কালোনি-অ্যালানসো দুজনই ইতিহাস গড়েছেন। ফুয়েন্তের সামনে ইতিহাস গড়ার কিছু নেই। আছে অপ্রতিরোধ্য এক স্পেনকে পূর্ণতা এনে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ। যেখানে তাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত গ্যারেথ সাউথগেট ও তার ইংল্যান্ড দল।
জার্মানির বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে আজ রোববার (১৪ জুলাই) দিনগত রাতে মুখোমুখি হবে স্পেন ও ইংল্যান্ড। লড়াইটা ইউরো শিরোপা জেতার। ফাইনালের ৯০ মিনিট, অতিরিক্ত সময়ে গড়ালে আরও আধঘণ্টা মিলিয়ে ১২০ মিনিটের অপেক্ষা ইউরোপের নতুন রাজা খুঁজে পাওয়ার। ফাইনাল বলে কথা, কেউ কাউকে ছাড় দেবে না এক চুল।
স্পেনের লক্ষ্যটা পরিষ্কার। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চতুর্থ ইউরো জেতা। তিনটি করে ট্রফি নিয়ে জার্মানির সঙ্গে শীর্ষে আছে তারা। যদিও, অবিভক্ত জার্মানরা ইউরো জিতেছে কেবল একবার। পশ্চিম জার্মানি জিতেছিল দুটি। ১৯৬৪ সালে প্রথম ইউরো জয়ের পর দ্বিতীয়বার ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে স্পেনের লেগেছিল ৪৪ বছর। ১৯৬৪ সালে ইউরোর দ্বিতীয় আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় লা রোজারা। এরপর ২০০৮ সালে এসে আবারও চ্যাম্পিয়ন হয়। পরেরবার ২০১২ তেও শিরোপা যায় স্প্যানিশ সাম্রাজ্যে। তারপর আর জেতা হয়নি, পরের দুই আসরে ফাইনালেই উঠতে পারেনি তারা।
ইংল্যান্ডের অপেক্ষাটা দীর্ঘ। ফুটবলের আবিষ্কারকরা এখন পর্যন্ত জানে না, ইউরো জয়ের স্বাদ কেমন। টুর্নামেন্টের ইতিহাস ৬৪ বছরের। লম্বা সময়ে ফাইনালেই উঠতে পেরেছে কেবল একবার। গত ইউরোর ফাইনালে ইতালির কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় থ্রি লায়ন্সদের। শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে আবারও ইউরোর ফাইনালে তারা। সাউথগেটের শিষ্যদের সামনে লড়াইটা শোককে সুখে পরিণত করার। ইংল্যান্ডের জন্য এটি প্রতিশোধেরও। গত বছর নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ট্রফি নিজেদের করে নিয়েছিল স্পেন। দল ভিন্ন হলেও দেশ তো একই।
ফাইনাল প্রসঙ্গে স্পেন কোচ ফুয়েন্তে বলেন, ‘আমি খুশি। এখানে এসে (ফাইনাল) নেতিবাচক কিছু ভাবার সময় নেই। ভাবনায় শুধুই ভালোটা। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠা অনেক বড় অর্জন। ফাইনালে আমাদের শান্ত থাকতে হবে। ছোট ছোট বিষয়গুলোতে নজর রাখতে হবে। সেরা কিছু পাওয়ার জন্য নিংড়ে দিতে হবে সবটা।’
ইংলিশ কোচ সাউথগেটের মতে, ‘আমার খেলোয়াড়দের ফাইনাল নিয়ে বাড়তি কিছু বলার নেই। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যেন ঠিকভাবে সব হয়। স্পেন তাদের নিজস্ব ঘরানায় খেলে। আমাদের তাই বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। যার যার কাজ ঠিকমতো করাটা সবার জন্য জরুরি।’
ইউরোর শিরোপার লড়াইটা অবশ্য সহজ হবে না কারো জন্যই। হাই প্রেসিং ফুটবল, বলের নিয়ন্ত্রণ, মাঝমাঠের দখল মিলিয়ে দুদলই দুর্দান্ত খেলেছে আসরজুড়ে। স্পেনের আছে তরুণ তুর্কি লামিনে ইয়ামাল, দানি ওলমো। ইংল্যান্ডে পরীক্ষিত হ্যারি কেইনের পাশে জুড বেলিংহাম। যারা কয়েক সেকেন্ড সময় পেলে বদলে দিতে পারেন পাশার দান।