জ্যামাইকা টেস্ট
বাংলাদেশকে হতাশ করে দ্বিতীয় দিন রাঙাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
জ্যামাইকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের বলার মতো সাফল্য একটি। প্রথম ইনিংসে বল হাতে নাহিদ রানার উইকেট প্রাপ্তি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওপেনার মাইকেল লুইসকে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়ে গোটা দিনে সফরকারীদের একবারই আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন নাহিদ। এই পেসারের উইকেটটি ছাড়া বাংলাদেশের পুরো দিন কেটেছে হতাশায়। জ্যামাইকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে রোববার (১ ডিসেম্বর) প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৩৭ ওভারে এক উইকেটে ৭০ রান। স্বাগতিকরা পিছিয়ে আছে ৯৪ রানে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট হয় ১৬৪ রানে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ২৫ রানে সাজঘরে ফেরেন লুইস। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১২ রান। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আর কোনো ভুল করেনি ক্যারিবীয়রা। অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রেথওয়েট ও কিচি কার্টি দিনের বাকিটা সময় পার করেন নির্বিঘ্নে। এই জুটি অবিচ্ছিন্ন আছে ৪৫ রানে। ২৪ ওভার ব্যাট করেছেন দুজন মিলে। ব্রেথওয়েট অপরাজিত ১১৫ বলে ৩৩ রানে। কার্টি অপরাজিত ৬০ বলে ১৯ রান। বাংলাদেশের পক্ষে একমাত্র উইকেটটি নেন নাহিদ।
বাংলাদেশের রান শতক ছোঁয়ার আগেই সাজঘরে ছয় ব্যাটার। সেখান থেকে দলের সংগ্রহ পার হয়েছে দেড়শ’র ঘর। টেলএন্ডারদের নিয়ে বাংলাদেশের ভরসা হয়ে ক্রিজে ছিলেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। তার ব্যাটে প্রথম ইনিংসে লড়ার মতো রান তোলার আশা দেখছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে, ব্যক্তিগত ৩৬ রানে দলের নবম ব্যাটার হিসেবে মিরাজ বিদায় নিলে সেই স্বপ্ন ফিকে হয়। শেষ পর্যন্ত জ্যামাইকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৭১.৫ ওভারে বাংলাদেশ থামে ১৬৪ রানে।
এর আগে ছয় উইকেটে ১২২ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশন শুরু করে বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলামকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন মিরাজ। তবে, ১৬ রান করে আলজারি জোসেফের শিকার হন তাইজুল। আট রান করা তাসকিন আহমেদকে বিদায় করেন জেইডেন সিলস।
জ্যামাইকা টেস্টের প্রথমদিন শনিবার (৩০ নভেম্বর) বাংলাদেশ শেষ করেছিল দুই উইকেটে ৬৯ রান নিয়ে। প্রথম দিন শেষ বিকেলটা বেশ দারুণ কাটে সফরকারীদের। যদিও, টস জিতে আগে ব্যাটিং নেওয়া বাংলাদেশ শুরুতে মাহমুদুল হাসান জয় ও মুমিনুল হককে দ্রুত হারায়। জয় তিন ও মুমিনুল শূন্য রানে বিদায় নেন কেমার রোচের শিকার হয়ে। কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া দলকে এরপর টেনে তোলেন সাদমান-শাহাদাত জুটি। তবে, রোববার (১ ডিসেম্বর) উইকেট ধরে রাখতে ব্যর্থ বাংলাদেশি ব্যাটাররা। দলীয় ৮৩ রানে শামার জোসেফের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন শাহাদাত হোসেন দিপু। তার ব্যাট থেকে আসে ২২ রান। দিপুর বিদায়ে ভাঙে সাদমানের সঙ্গে তার ৭৩ রানের জুটি।
ক্রিজে নামা লিটন দাস ব্যর্থ হন এদিনও। মাত্র এক রান করে জেইডেন সিলসের বলে কাভেম হজের তালুবন্দি হন লিটন। ৮৮ রানে চার উইকেট হারিয়ে বিপদ বাড়ে বাংলাদেশের। সেটি আরও ঘনীভূত হয় জাকের আলী অনিকের বিদায়ে। এক রান করে তিনি শিকার হন জোসেফের, উইকেটের পেছনে ক্যাচ নেন জশুয়া দা সিলভা। ৯৫ রানে পতন ঘটে বাংলাদেশের পঞ্চম উইকেটের। এরপর মিরাজ বাদে বাকিদের আসা-যাওয়ার মিছিলে আবারও মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশ। যেতে পারেনি বেশিদূর।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে মাত্র পাঁচ রান দিয়ে সিলস শিকার করেন চার উইকেট। শামার জোসেফ তিন এবং কেমার রোচ নেন দুই উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৭১.৫ ওভারে ১৬৪/১০ (জয় ৩, সাদমান ৬৪, মুমিনুল ০, দিপু ২২, লিটন ১, জাকের ১, মিরাজ ৩৬, তাইজুল ১৬, তাসকিন ৮, হাসান ৫*, নাহিদ ০; রোচ ১৫-২-৪৫-২, সিলস ১৫.৫-১০-৫-৪, শামার ১৫-৩-৪৯-৩, আলজারি ১৪-৩-২৯-১, গ্রিভস ৭-২-১৪-০, হজ ৪-০-১৪-০, ব্রেথওয়েট ১-০-১-০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস : ৩৭ ওভারে ৭০/১* (ব্রেথওয়েট ৩৩*, লুইস ১২, কার্টি ১৯*; হাসান ৭-২-১৬-০, তাসকিন ৮-৫-১১-০, নাহিদ ৯-০-২৮-১, তাইজুল ১০-৭-৭-০, মিরাজ ৩-১-২-০)