তিন দশকের অপেক্ষা মাড়িয়ে পাকিস্তানিদের ক্রিকেট উৎসব

দীর্ঘ ২৯ বছর আগের কথা। ১৯৯৬ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কো-হোস্ট হিসেবে আইসিসির টুর্নামেন্টে নাম ছিল পাকিস্তানের। এরপর পুরুষ দলের ক্রিকেটে একে একে ২৭টি টুর্নামেন্ট আয়োজন করে ফেলেছে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
আয়োজিত হয়ে গেল—ওয়ানডে বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নসহ নারী ও বয়সভিত্তিক দলের বহু টুর্নামেন্ট। যুবাদের বিশ্বকাপ, বাছাইপর্বও আইসিসির তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হয়।
তবে তার কোনোটিতেই আয়োজক হওয়ার স্বাদ পায়নি পাকিস্তানিরা। অবশেষে সেই অপেক্ষা ফুরাচ্ছে। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে আইসিসি ক্রিকেট উৎসবে আয়োজক হিসেবে ফিরছে পাকিস্তান।
আগামীকাল রোববার থেকে মাঠে গড়াবে মিনি বিশ্বকাপ খ্যাত—আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। যার আয়োজক হিসেবে আছে পাকিস্তান। ভারত দেশটিতে খেলতে আসবে বলে সহ-আয়োজক হিসেবে আছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
করাচিতে গ্রুপ ‘এ’ দলের ম্যাচ দিয়ে কাল শুরু হচ্ছে এই ক্রিকেট উৎসবের। প্রথম ম্যাচেই মাঠে নামছে স্বাগতিক পাকিস্তান, প্রতিপক্ষ ‘এ’ গ্রুপে থাকা নিউজিল্যান্ড।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর বৈশ্বিক ইভেন্টের ক্রিকেট ফেরার আনন্দ ছুঁয়েছে দেশটির স্থানীয় মানুষদের। ৭৭ বছর বয়সী আব্দুল রাজ্জাকের কাছে ক্রিকেট ঘরের মাঠে ফেরা অনেকটা নিজের জন্মদিনের আনন্দের মতো। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশের প্রতিটি মানুষের অন্তরে ক্রিকেট জড়িয়ে আছে। জঙ্গী হামলা আমাদের কাছ থেকে সব কেড়ে নিয়েছিল (ক্রিকেট আনন্দ)। আমি মুখিয়ে আছি যে আবারও আমাদের দেশে বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট ফিরেছে। এই ক্রিকেট ফেরার দিনটা আমার কাছে আমার জন্মদিনের মতোই মনে হচ্ছে।’
পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রমিজ রাজার মতে, এবারের টুর্নামেন্টটি আয়োজন পাকিস্তানের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জের ব্যাপার।
সাবেক এই পিসিবিপ্রধান এএফপিকে বলেছেন, ‘বিশ্ব ক্রিকেট কমিউনিটিতে অবস্থান সৃষ্টির জন্য এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হতে আমাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং স্টেপ। সেই সঙ্গে এটি আমাদের জাতির জন্য গর্বের হবে ও একটা শক্ত বার্তা দেবে বিশ্বকে। এটা আমাদের বৈশ্বিকভাবে আমাদের ভাবমূর্তি তৈরিতেও সাহায্য করবে।’
সবমিলিয়ে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে রং ছড়ানোর অপেক্ষা পাকিস্তান। সব প্রস্তুতিও শেষ আয়োজকদের। এবার অপেক্ষা শুধু মাঠের ক্রিকেটের। রাত পোহালের যার প্রতিচ্ছবি দেখতে পাবেন বিশ্ব ক্রিকেটের হাজারও ভক্তরা।