৩৭ বছরে পা রাখলেন তামিম

একটা সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটে স্ট্রাইক রেট শব্দটা শুনতে বড্ড বিলাসী মনে হতো। মাটি কামড়ে কটা রান করতে পারলে তা নিয়ে হইচই বাধার সেই সোনালি শৈশবে তামিম ইকবাল খান কী ভাবতেন, তা কেবল তিনিই জানতেন। বড় হয়ে সবাইকে তা জানানোর সুযোগ করে দেন এই ব্যাটার।
লঙ্কান ব্যাটসম্যান সনাৎ জয়াসুরিয়াকে আদর্শ মানেন তামিম। বাঁহাতি তারকা ওপেনার ছিলেন ধুন্ধুমার। তামিম কেন তার ব্যতিক্রম হবেন? ক্যারিয়ারের শুরুতে তাই পেয়েছিলেন ‘দুম দুম’তকমা। সকালের সূর্য দিনের পূর্বাভাস দেয় না বলে দুম দুম তামিম খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারছিলেন না।
লাল-সবুজ জার্সি প্রথমবার গায়ে চাপান ২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। মাত্র দুই ম্যাচ খেলেই ডাক পড়ে নবম বিশ্বকাপের আসরে। এর আগের বছর শ্রীলঙ্কায় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলে এসেছেন। ভারতীয় পেসার জহির খান তামিমকে ভুলবেন না কখনও। কচি এক বালকের ডরহীন চাহনি, ঔদ্ধত্যপনায় তুলোধুনা হওয়াটা এক অভিজ্ঞজনের কাছে মোটেই মধুর নয়। সেসব নিয়ে ভাবতে তামিমের বয়েই গেছে। ৫৩ বলে ৫১ রানের সেই ইনিংসের রথে চেপে বাংলাদেশের ক্রিকেট আকাশে যে ভ্রমণ শুরু করেছিলেন, তারপর প্রতি স্টপেজেই রেখেছেন প্রতিভার স্বাক্ষর।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় দলের হয়ে খেলা শুরু করা তামিম ইকবালের টেস্ট অভিষেক হয় ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। অভিষেকেই অনন্য। দুই ইনিংসে যথাক্রমে ৫৩ ও ৮৪ রান করে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটান। তারপর সময় কেটেছে। এরপর ক্যালেন্ডারে ২০১১ আসে। ইংল্যান্ডের লর্ডসে করেন প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্ট শতক। নাম ওঠান অনার্স বোর্ডে নাম। এরপর ম্যানচেস্টার। সেখানেও শতক। ব্যাক টু সেঞ্চুরি, এখানেও প্রথম তিনি। কাজের স্বীকৃতি পেতে দেরি হয়নি। উইজডেন সাময়িকীর বর্ষসেরা ক্রিকেটারের খেতাব মিলে যায়।
তামিমের রেকর্ডের ভাণ্ডারটা বেশ সমৃদ্ধ। তিন ফরম্যাটেই দেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক, সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি, একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে তিন ফরম্যাটেই শতক, টি-টোয়েন্টিতে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান, মুমিনুল হকের আগে টাইগারদের মধ্যে টেস্টে দ্রুততম হাজার রান।
শেষটা আরও সুন্দর করতে পারতেন। না হলেও তিনি উজ্জ্বল থাকবেন আপন আলোয়। জাতীয় দলের সাবেক এই ক্রিকেটার আজ বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) পা রেখেছেন ৩৭ বছর বয়সে। ১৯৮৯ সালের ২০ মার্চ ইকবাল খান ও নুসরাত খান দম্পতির ঘরে চট্টগ্রামে জন্ম নেন এই ব্যাটার। দেশসেরা ওপেনারকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।