ফুলের রাজ্য গদখালী
ফুলের প্রতি মানুষের আকর্ষণ ও ভালোবাসা চিরন্তন। তাই আপনি চাইলে ঘুরে আসতে পারেন বাংলাদেশের মধ্যে এক টুকরো ফুলের রাজ্য গদখালী থেকে। সকালে ফুলের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখতে পারেন।
যশোর জেলার ঝিকরগাছা ও শার্শা থানার প্রায় পাঁচ হাজার বিঘা জমিজুড়ে শুধু রঙের সমাহার। মনে হবে, সব রং মেশানো এক বিস্তীর্ণ গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। এখানে চাষিরা তাঁদের জমিতে শুধু ফুলই চাষ করে থাকেন। এসব এলাকায় বাতাসে ফুলের সৌরভ আর প্রজাপতির ডানার সৌন্দর্য যেন অপূর্ব এক সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছে।
সারা দেশে ফুল সরবরাহ করা হয় এই গদখালী পাইকারি বাজার থেকে। বিয়েসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামে প্রতিদিনই ফুলের চাহিদা থাকলেও বিশেষ দিনগুলোতে এর চাহিদা বেড়ে যায় অনেক গুণ বেশি। বর্ষবরণ, একুশে ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা দিবস ছাড়াও শুধু ভালোবাসা দিবসেই প্রায় ৫০ কোটি টাকার ফুল কেনাবেচা হয়।
এসব এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন হচ্ছে রজনীগন্ধা, গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, গ্লাডিউলাস, জিপসি, রডস্টিক, কেলেনডোলা, চন্দ্রমল্লিকাসহ ১১ ধরনের ফুল।
১৯৮২ সালের দিকে শের আলি সরদার রজনীগন্ধা ফুল চাষের মাধ্যমে এ দেশে ফুল চাষ শুরু করেন। এরপর নানা জাতের ফুল এসে জায়গা করে নেয় পুরো গদখালী। প্রথম দিকে বছরের নির্দিষ্ট কয়েক মাসে ফুল চাষ হলেও এখন প্রায় সারা বছরই ফুল চাষ হয়ে থাকে। এখানে উৎপাদন করা হচ্ছে নানা জাতের ফুল। আমাদের দেশের ৭০-৭৫ ভাগ ফুলের চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে যশোর থেকে।
থাকা-খাওয়া
দুপুরে খাওয়ার জন্য পাইনশারাতে ভাতের হোটেল আছে। তা ছাড়া গদখালী বাজারেও কয়েকটা হোটেল পাবেন। ঝিকরগাছা বাজারে ভালো মানের খাবার পাবেন কবির হোটেলে। রাতে থাকতে হলে আপনাকে অবশ্যই যশোরে যেতে হবে।
আসা-যাওয়া
রাজধানীর গাবতলী বাসস্ট্যান্ড বা আব্দুল্লাহপুর থেকে যশোরের উদ্দেশে কয়েকটি বাস ছেড়ে যায়। ভাড়া নন-এসি ৪৫০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ৮০০ টাকা।
ট্রেন :
সকাল : ঢাকা স্টেশন থেকে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ছেড়ে যায়, ভাড়া ৪৫৫ টাকা জনপ্রতি।
সন্ধ্যা : ৭টায় চিত্রা এক্সপ্রেস, ভাড়া ৪৫৫ টাকা জনপ্রতি।
মধ্যরাত : বেনাপোল এক্সপ্রেস ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন থেকে রাত ১১টা ৪৮ মিনিট।
যশোর থেকে আসার ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেস রাত ১১টা ৩০ মিনিট।
চিত্রা এক্সপ্রেস সকাল ১০টায় যশোর থেকে
বেনাপোল এক্সপ্রেস ঝিকরগাছা থেকে দুপুর ১টা ২০ মিনিট।