মধুচন্দ্রিমার দশ রাজ্যে
কদিন বাদেই বিয়ে। দাওয়াত খেয়েই ছুটি শেষ করবেন, নাকি এ বেলা দুজনে ব্যাকপ্যাক কাঁধে নিয়ে উড়াল দেবেন অজানার রোমাঞ্চে? সময় কিন্তু চটজলদি ফুরোয়। ব্যাংক ব্যালেন্স আর ক্রেডিট কার্ড সাপোর্ট করলে দূরদেশ যেতে দেরি কেন! মধুযাপনের ডেস্টিনেশন কোথায় কোথায় হতে পারে, একবার দেখেই নিন!
১. মালদ্বীপ
সৈকতের বালিয়াড়িতে সমুদ্রস্রোত আর নগ্নপায়ে সূর্যের আলো। এমনটা পছন্দ হলে মালদ্বীপ হতে পারে আপনার সঙ্গে মিলবে ভালো। কাছেপিঠে আছে বলে খরচাপাতির বহরটাও বিশাল পড়বে না বৈকি। আর হ্যাঁ, একান্ত আর নিরিবিলি সময় কাটানোর জন্য মালদ্বীপের জুড়ি মেলা ভার।
২. বেলিজ
নামটা শুনে খটকা লাগছে? লাগারই কথা। জেনে রাখুন, বেলিজ হচ্ছে সেন্ট্রাল আমেরিকার একটি দেশের নাম। আপনাদের যদি রোমান্সের সঙ্গে রোমাঞ্চের পিপাসাও বেশ থাকে, তবে কষ্ট করে এখানে চলে যান। ট্রপিক্যাল এই অঞ্চলে এলে আপনার কষ্ট ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাবে স্কুবা ডাইভিং আর রেইনফরেস্টে ক্যাম্পিংয়ের দুর্দান্ত অভিজ্ঞতায়। আর এমন যেখানে প্রকৃতি, সেখানে রোমান্স তো না জমেই যায় না!
৩. ভ্যানকুভার দ্বীপের টফিনো
একদম খাঁটি রোমান্টিক ডেস্টিনেশন বলতে যা বোঝায়, এ যেন ঠিক তাই। আরে বাবা, হানিমুন তো প্রেমের জন্যই! এ অঞ্চলটা যেন প্রেমপিয়াসীদের মনমর্জি বুঝেই গড়ে উঠেছে নিজমনে। সূর্যের আলো ছুঁয়ে যাওয়া মাইলের পর মাইল সমুদ্রসৈকত, আরেকদিকে অসীম পাহাড়। নিজেদের মতো সময় কাটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা প্রকৃতিই করে রেখেছে আনমনে।
৪. সেইন্ট লুসিয়া
হানিমুন কাপলদের জন্য আরেক ট্রেন্ডি গন্তব্য সেইন্ট লুসিয়া। নীলরঙা সমুদ্র, দূর্দান্ত ভেজিটেবল ফুড আইটেম আর সাগরপাড়ের পানীয়। নারিকেল গাছের নিচে দুজনে বসে পার করে দেওয়া অলস কিছু দুপুর। দিবাস্বপ্নকে সত্যি করতে এমন জায়গার কি বিকল্প হয়? গেলে দেখবেন, আর ফিরতেই ইচ্ছে করবে না!
৫. গ্রিস
গ্রিক পুরাণের বর্ণনায় মুগ্ধ হোন আর না হোন, হানিমুন ডেস্টিনেশনের সেরা দশের তালিকায় গ্রিসকে রাখতে হবে চোখ বন্ধ করে। ঐতিহ্যের দেশ, সৌন্দর্য্যের দেশ, রোমান্টিসিজমের তো বটেই। সান্তোরিনি, এথেন্স, ডেলফির মতো কত কত জায়গা আছে কেবল চেয়ে চেয়ে দেখবার!
৬. বালি
বালিদ্বীপে আপনার মধুচন্দ্রিমা হতে পারে নাচে-গানে আর উচ্ছল আনন্দে ভরপুর। দুজনে মিলে চুপটি করে বসে থেকে নয়, বালির সময় কাটবে ফুর্তিতে। সঙ্গে সেরা খানাদানার সম্ভার আপনার স্বাদের স্মৃতিভাণ্ডার করে তুলবে অফুরন্ত।
৭. ইতালির ফ্লোরেন্স
আপনি যদি ঐতিহ্য, প্রাচীনত্ব আর অসামান্য স্থাপত্যশৈলীর ভক্ত হয়ে থাকেন, ইতালির ফ্লোরেন্স নগরী আপনার জন্য সেরা অপশন। শৈল্পিক সব দালান-কোঠা, পাহাড়ি লাল-নীলের ছোঁয়া আপনার যাত্রাপথে এসে পড়বে অনবরত। আর সেই সঙ্গে দুর্দান্ত ইতালিয়ান কুইজিন। মধুচন্দ্রিমার সময়টা ঘুরেফিরে কাটাতে চাইলে ফ্লোরেন্সের তুলনা হয় না।
৮. কানাডার লেক লুই
সদ্যবিবাহিত যুগলদের জন্য দারুণ হানিমুন ডেস্টিনেশন কানাডার লুই। এখানে যাওয়ার সেরা সময় শীতকাল হলেও গরমের সময়েও এর জেল্লা নেহাত কম নয়। সবুজরঙা লেকটা যখন আপনার সামনে জীবন্ত বিভ্রম নিয়ে পড়ে থাকবে, নিজেকেও ঠিক বিশ্বাস করতে পারবেন না। আবার চোখ মেললেই দেখতে পাবেন কানাডিয়ান রকি পাহাড়ের রূপ। এই যাত্রা হতে পারে আপনার জীবনের সবচেয়ে সুখময় স্মৃতির ভাণ্ডার।
৯. তাহিতি
বহু বছর ধরে তাহিতি আরাধ্য এক হানিমুন ডেস্টিনেশন। খড়ের কুটির, নারিকেল গাছ, সুগন্ধী মৃদু হাওয়া— সব মিলিয়ে এই ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়ান দ্বীপটি যেন আপনার বিবাহ-পরবর্তী সময়টাকে মাথায় নিয়েই সাজিয়েছে নিজের রূপের ডালি। হলিউডি ছবির শুটিংও হয় বৈকি এ এলাকায়। তাহিতির সময় শুধু স্বপ্নের মতো কাটবার।
১০. কেনিয়া
জঙ্গলের রোমাঞ্চ, ক্যাম্পফায়ার, ঝলসানো মাংস, সিংহের ডাক, হাতির গর্জন, লণ্ঠনের আলোয় তাঁবুঘরের প্রেম। এমন স্বপ্ন বাস্তব হতে পারে কেনিয়ায়। অ্যাডভেঞ্চারে কি প্রেম হয় না? দিব্যি হয়! একটুও দ্বিধা থাকলে রবার্ট রেডফোর্ডের ‘আউট অব আফ্রিকা’ ছবিটি দেখে নিন, দেখবেন কেনিয়া ছাড়া অন্য কোথাও হানিমুনে যাওয়ার অপশনই পাবেন না!