ঘসেটি বেগমের কুঠিবাড়ি

কাজের মাঝে যখন আপনি বিরক্ত, তখন নিজেকে সতেজ করতে ঢাকা থেকে দূরে কোথাও ঘুরে আসতে পারেন। একটু ইচ্ছে করলে ভালো সময় কাটাতে পারেন আপনি। ঢাকার বাইরে এমন সুন্দর কিছু জায়গা আছে কাটিয়ে আসতে পারেন উপভোগ্য কিছু মুহূর্ত। ঠিক তেমনি এক উপভোগ্য জায়গা নবাবী আমলের অনন্য স্থাপত্য নিদর্শন ঘসেটি বেগমের কুঠিবাড়ি।
নবাবী আমলের অনন্য স্থাপত্য নিদর্শন পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের শৌলা গ্রামে অবস্থিত। যা ঘসেটি বেগমের কুঠিবাড়ি নামেই পরিচিত। তবে নবাবী আমলের পরে এ বাড়িটিতে অনেকে নামাজ আদায় করতেন। যে কারণে এ কুটির বাড়িটি ঘসেটি বেগমের মসজিদ নামেও লোকমুখে শোনা যায়।
ঘসেটি বেগমের কুঠিবাড়ির পেছনের গল্প
জেলা শহর থেকে ৩৬ কিলোমিটার এবং উপজেলা শহর থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে ঘসেটি বেগমের কুঠিবাড়ির অবস্থান। প্রায় ২৮০ বছর পূর্বে বাংলা, বিহর ও উড়িষ্যার নবাব আলীবর্দী খানের মেয়ে ঘসেটি বেগম এ কুঠিবাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন বলে জানা যায়। তার অনুসারে ‘ঘসেটি বেগমের কুঠিবাড়ি’ হিসেবেই এটি পরিচিত লাভ করে। এ কুঠিবাড়ি নির্মাণকাল নির্দেশক কোনো শিলালিপি নেই। এটির সঠিক ইতিহাস কোথায় সংরক্ষিত নেই। স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী ধারণা করা হয় যে প্রায় ২৮০ বছর আগে এটি নির্মাণ করা হয়।

অনেকে বলেন, দাদার মুখ থেকে শুনে আসেছি সিরাজউদ্দৌলার খালা ঘসেটি বেগম এ অঞ্চলে ঘুরতে এসে এটি নির্মাণ করেছিলেন। তিনি কিছুদিন এখানে ছিলেনও। নবাবী আমলের আবসানের পর ব্রিটিশ আমলে এ বাড়িটিতে স্থানীয়রা নামাজ আদায় করতেন।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সড়ক ও নৌপথে সহজে যাওয়া যায়। সড়ক পথে ঢাকা ধোলাই পাড়া ও সায়দাবাদ থেকে যাত্রীবাহী (বাস) চেয়ারম্যান পরিবহন, অন্তরা পরিবহন, মুন পরিবহন, কিংস পরিবহন ও ডলফিন পরিবহনে সরাসরি বাউফলের কালাইয়া বন্দর বাসস্ট্যান্ডে আসা যাবে। এতে জনপ্রতি ভাড়া ৬০০ টাকা। কালাইয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে কুঠিবাড়ির দুরত্ব প্রায় ৯ কিলোমিটার। কালাইয়া - শৌলা বগি সড়কের শৌলা রহিম তালুকদার বাড়ির সামনে কুঠিবড়ি। অটোরিকশায় জনপ্রতি বাড়া ৫০ টাকা।

নৌপথে ঢাকা সদর ঘাট থেকে কালাইয়ার উদ্দেশে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টায় লঞ্চ ছাড়ে। রুটেশনে এমভি বন্ধন, ধুলিয়া ও ইগল লঞ্চ চলাচল করে। ডেকে ভাড়া ৬০০ টাকা। সিঙ্গেল কেবিন ১২০০ টাকা, ডাবল কেবিন ২২০০ টাকা। কালাইয়া লঞ্চঘাট থেকে কুঠিবাড়ির দুরত্ব আট কিলোমিটার। অটোরিকশায় জনপ্রতি ভাড়া ৫০ টাকা।
থাকা ও খাওয়া
কালাইয়া বন্দরে বাংলা ও চাইনিজ খাবারের হোটেল রয়েছে। থাকার জন্য বন্দরের ফলপট্টি রোডে মুন স্টার নামে একটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। থাকা ও খাওয়ার ব্যয় সাধ্যের মধ্যে। কেউ চাইলে কালাইয়া বন্দর থেকে চার কিলোমিটার দূরে বাউফল উপজেলা শহরে ও ৩৫ কিলোমিটার দুরে জেলা শহরে গিয়েও থাকতে পারবেন।