এবার ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের ভাগ্য নির্ধারণ ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে
তিন দিনের ব্যবধানে দেউলিয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দুই ঋণদাতা ব্যাংক। এবার সেদিকেই ঝুঁকছে সুইজারল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক ক্রেডিট সুইস। আগামী ৩৬ ঘণ্টায় নির্ধারিত হবে ব্যাংকটির ভাগ্য। কারণ, ভয়ে ব্যাংকটি থেকে অর্থ তুলে নিচ্ছে তাদের গ্রাহকরা। আজ শনিবার (১৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সিএনএন।
প্রতিবেদনে মার্কিন গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জরুরিভাবে পাঁচ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েও নিজেদের শেয়ারদর ধরে রাখতে পারেনি ক্রেডিট সুইস ব্যাংক। সপ্তাহান্তরে তাদের শেয়ারদর ২৫ শতাংশ কমেছে।
আর্থিক পরিষেবা সংস্থা মর্নিংস্টারের তথ্য মতে, গত সোমবার থেকে বুধবারের মধ্যে ইউরোপীয় ও মার্কিন বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকটি থেকে তুলে নিয়েছেন ৪৫ কোটি ডলার।
এদিকে, ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের শেয়ারদর রেকর্ড পরিমাণে কমার পর গত বুধবার রাতে সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বল্প সময়ের জন্য অর্থ সংকটে থাকা ব্যাংকটিকে কেনার কথা বলে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেছিল, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন আশ্বাসের পর শুক্রবারের মধ্যে ব্যাংকটি তারা ধাক্কা কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠবে। তবে, তেমনটি হয়নি। উল্টো ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের প্রতিদ্বন্দ্বী আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউএসবি সুইজারল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যাংকটি কেনার কথা বলেছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স ও দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমস বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্টের বরাতে জানায়, সুইজারল্যান্ডের আর্থিক খাতের নীতি নির্ধারকরা সোমবারের মধ্যে ক্রেডিট সুইস ও ইউএসবিকে একটি চুক্তি পৌঁছানোর কথা জানায়। এতে করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দেশটির ব্যাংকিং সিস্টেমের ওপর নির্ভরতা ফিরে আসবে। আর দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছিল, সমস্যা সমাধানে এই সপ্তাহের মধ্যে ব্যাংক দুটি বারবার আলোচনায় বসবে। তবে, এ বিষয়ে রয়টার্সের জবাবে কোনো মন্তব্য করেনি ক্রেডিট সুইস ও ইউএসবি।
বিশ্বের সর্বোচ্চ শক্তিশালী ৩০ ব্যাংকের মধ্যে ক্রেডিট সুইস একটি। তবে, কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন ভুল পদক্ষেপের জন্য বছরের পর বছর ধরে ক্ষতির সম্মুখীন রয়েছে ব্যাংকটি। সর্বশেষ ১২ মাসে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম কমেছে ৭৫ শতাংশের বেশি। কিন্তু, চলতি মাসেই ব্যাংকটি থেকে আস্থা হারিয়ে মূলধন তুলে নিচ্ছে বিনিয়োগকারীরা।
গত মঙ্গলবারে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে ১৬৭ বছরের পুরনো ক্রেডিট সুইস ব্যাংক। ওই প্রতিবেদনে নিজেদেরে বস্তুগত দুর্বলতার কথা জানায় ব্যাংকটি। এমনকি নিজেদের ঝুঁকি চিহ্নিত করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে বলে স্বীকার করে।