তাইওয়ান পরিস্থিতির কারণেই কী ইউক্রেন যুদ্ধ পর্যবেক্ষণে চীন?
ইউক্রেনে চলা যুদ্ধ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীন। মূলত, কীভাবে নিম্ন কক্ষপথে থাকা স্টারলিঙ্কের স্যাটেলাইটগুলো ও কাঁধ থেকে ছোঁড়া জাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্র থেকে ট্যাংক এবং হেলিকপ্টারকে রক্ষা করা যায় সে জন্যই ইউক্রেন যুদ্ধ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে দেশটি। চীনের সামরিক গবেষকদের বরাতে আজ বুধবার (৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
লন্ডনভিত্তিক সংবাদ সংস্থাটি জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ করছে চীনের সামরিক গবেষকরা। এশিয়ায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে এমনটি করছে চীন। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের ১০০টি ও প্রতিরক্ষা জার্নালে প্রকাশিত ২০টি প্রতিবেদনে পর্যালোচনা করে এই দাবি করেছে রয়টার্স। ওইসব প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ও টেকনোলজি যাচাই করছে চীনের সামরিক গবেষকরা। কারণ, ওইসব টেকনোলজি ও অস্ত্র চীনের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। আর তারা এমনটি করবে সম্ভাব্য তাইওয়ান যুদ্ধে।
চীনা ভাষায় প্রকাশিত গণমাধ্যমগুলো ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলাগুলো পর্যবেক্ষণ করছে। একইসঙ্গে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) সঙ্গে সংযুক্ত শতাধিক গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, দেশটির অস্ত্র প্রস্তুতকারীরা ও সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে।
রয়টার্স বলছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার অবস্থান বা ব্যর্থতা নিয়ে চীন কোনো নেতিবাচক মন্তব্য বলছে না। তারা যুদ্ধ বন্ধে শান্তি আলোচনার কথা বলছে। তবে, চীনের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে রাশিয়ার ব্যর্থতা স্পষ্ট করছে।
গবেষকদের পর্যবেক্ষণ নিয়ে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এমনকি চীনের সামরিক ঊর্ধ্বতনদের চিন্তাভাবনা সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে পারছে না রয়টার্স।
চীনের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত দুজন ও দেশটির প্রতিরক্ষা গবেষণা নিয়ে সংযুক্ত এক কূটনৈতিক বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের নেতৃত্বে চীনের কমিনিউস্ট পার্টির সেন্ট্রাল সামরিক কমিশন বিষয়টি তদারকি করছেন।’ বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘তাইওয়ানের পরিস্থিতির সঙ্গে ইউক্রেনের ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। এ সত্ত্বেও ইউক্রেন যুদ্ধে চীন গভীরভাবে অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে রেখেছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মার্কিন কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের দ্রুত আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া দেখে তাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। আগ্রাসন হলে বিশ্ব ঐক্যের পথে চলে যাবে।’