তুরস্ক-সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়াল

এক সপ্তাহ পার হলো তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের। যে সময়টা পাল্টে দিয়েছে হাজার হাজার তুর্কি ও সিরিয় নাগরিকের জীবনধারা। এখনও সেখানে চলছে উদ্ধার কার্যক্রম। জীবিতদের পাওয়া যাচ্ছে, বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। যদিও মারাত্মকভাবে ভেঙে যাওয়া রাস্তা আর শীতকালের প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় উদ্ধার কাজ ও জরুরি সাহায্য পৌঁছানো ভীষণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
গত সোমবার ভোররাতে সাত দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে তুরস্কের ১০টি শহরের কয়েক হাজার বহুতল ভবন ধসে পড়ে। পাশাপাশি সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোরও হয়েছে একই অবস্থা।
রোববার হিসেবে দুদেশে ভূমিকম্পের আঘাতে মৃতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যার বিচারে এটি এখন এই এলাকায় কয়েক যুগের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
মারাত্মকভাবে ভেঙে যাওয়া রাস্তা আর শীতকালের প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় উদ্ধার কাজ ও জরুরি সাহায্য পৌঁছানো ভীষণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বেসামরিক নাগরিকরা অভিযোগ করেছে, তারা নিজেরাই নিজেদের মধ্যে যতটুকু পারা যায় সাহায্যসামগ্রী বিতরণ করছেন।
গাজিয়ান্তেপে প্রতিবেশিদের সাহায্য করতে খোলা একটি রেস্টুরেন্ট থেকে এক থালা গরম নুডুলস নিয়ে ক্ষুধার্ত আহমেত নামের ৬৪ বছরের একজন বয়স্ক লোক বললেন, ‘আমরা ভূমিকম্পে না মরলেও ক্ষুধা আর ঠাণ্ডায় মারা যেতে পারি।’
গাজিয়ান্তেপের এক তৃতীয়াংশ লোক গৃহযুদ্ধের কারণে সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসা সাধারণ মানুষ। তবে, জাতিস্বত্তা আলাদা হলেও সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে তুরস্কের নাগরিকদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকছেন তারা। এই ধ্বংসযজ্ঞ যেন তুর্কি আর সিরিয়দের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে শিখিয়েছে।
গাজিয়ান্তেপ শহরে তুরস্কের পরিবার মন্ত্রণালয়ের অধীনে সমাজকর্মী হিসেবে কাজ করছেন এজগি আলা নামে একজন নারী। এ প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘আমরা সবাই সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা এক সঙ্গে আছি, একে অন্যকে সাহায্য করছি আর যা কিছু পাচ্ছি নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিচ্ছি।’