বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য সব সড়কবাতি বন্ধ রাখবে শ্রীলঙ্কা
জ্বালানি আমদানি করার মতো পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা না থাকায় সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কার কোথাও কোথাও দৈনিক সর্বোচ্চ ১৩ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। আজ বৃহস্পতিবার দেশটির বিদ্যুৎমন্ত্রী পবিত্র ভান্নিয়ারাচ্চি জানিয়েছেন, এ পরিস্থিতি মে মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশটির বিদ্যুৎমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, সংকটময় এ পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য সব স্ট্রিট লাইট (সড়কবাতি) বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
‘বিদ্যুৎ সংরক্ষণে সহায়তা করার জন্য আমরা এরই মধ্যে কর্মকর্তাদের সারা দেশের রাস্তার আলো বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি,’ সাংবাদিকদের বলেছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধার করা ৫০ কোটি ডলারের ডিজেলের একটি চালান শনিবার ভারত থেকে আসবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী পবিত্র ভান্নিয়ারাচ্চি।
বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, ‘এই চালান আসার পর আমরা লোডশেডিংয়ের সময় হ্রাস করতে পারব। কিন্তু তারপরও বৃষ্টি না আসা পর্যন্ত, যার জন্য মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের আর কিছু করার নেই।’
তীব্র জ্বালানি সংকটের মধ্যে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনও হ্রাস পাওয়ায় দেশজুড়ে বুধবার থেকে প্রতিদিন রেকর্ড ১০ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু কোথাও কোথাও সর্বোচ্চ ১৩ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং চলছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
আমদানির বিল পরিশোধে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র ঘাটতির কারণে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এবারই সোয়া দুই কোটি মানুষের দেশ শ্রীলঙ্কাকে সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।
তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেটর চালানোর জ্বালানি না থাকায় চলতি মাসের শুরু থেকে দেশটিতে প্রতিদিন ৭ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হচ্ছিল। দেশটির মোট চাহিদার ৪০ শতাংশের বেশি আসে জলবিদ্যুৎ থেকে, কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় বেশিরভাগ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জলাধারে পানি বিপজ্জনক মাত্রায় নেমে আসায় চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে চরম ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
দেশটির বেশিরভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় কয়লা ও তেল থেকে। এ দুটোই আমদানি করতে হয়; কিন্তু তার বিল পরিশোধে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা এখন শ্রীলঙ্কার রিজার্ভে নেই।