যেসব কারণে ট্রাম্পের পরাজয়
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোটের দিন বলেছিলেন, ‘জিতে যাওয়া সহজ। হেরে যাওয়া সহজ নয়।’ এখন সেই হারই মেনে নিতে হবে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্পকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক সাত কোটিরও বেশি ভোট পেয়েছেন ট্রাম্প। জয় পেয়েছেন নিজের প্রিয় অঙ্গরাজ্য টেক্সাস, ফ্লোরিডাসহ ২৪টিতে। এতকিছুর পরও অতি আত্মবিশ্বাসী ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদ ট্রাম্পকে কেন এই পরাজয় দেখতে হচ্ছে, তা নিয়ে বিশ্লেষণী প্রতিবেদন করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
দীর্ঘ সময়ের ভোট গণনা শেষে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে জয়ের মধ্য দিয়ে হোয়াইট হাউসে যাওয়া নিশ্চিত করেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। এ বছরে ট্রাম্পের নানাবিধ দুর্বলতার কথা যেসব বিশ্লেষক বলেছেন, তাঁদের সবাই অবশ্য তাঁর রাজনৈতিক শক্তির জায়গাও স্বীকার করে নিয়েছেন।
বিবিসি জানায়, রাজনৈতিক ভিত শক্ত থাকলেও করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ব্যর্থতা এবং এই মহামারিকে গুরুত্বের সঙ্গে না নেওয়া ট্রাম্পের পরাজিত হওয়ার বড় একটি কারণ হতে পারে। সপরিবারে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিজেও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। দেশে দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেই করোনা মহামারিকে সব সময় তুচ্ছজ্ঞান করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এ ছাড়া বর্ণবাদ-সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে নিয়মিত আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করেছেন ট্রাম্প। বিভিন্ন সময়ে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদকেই উসকে দেওয়া বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। টুইট পোস্টেও বহুবার এমন বিতর্কিত অবস্থান নিয়েছেন ট্রাম্প।
শ্বেতাঙ্গ পুলিশ সদস্যদের হাতে অন্যায়ভাবে কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনার পরও শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হননি রিপাবলিকান এই নেতা।
ডেমোক্র্যাট সমর্থক চাক হাওয়েনস্টেইন বিবিসিকে বলেন, ‘মানুষজন বিরক্ত। দেশে স্বাভাবিক অবস্থা দেখতে চায় তারা। একটু ভদ্রতা দেখতে চায় মানুষ। এই ঘৃণা বন্ধ হোক, এটাই কামনা। দেশ আবারও ঐক্যবদ্ধ হোক। এসব চাওয়াই জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট বানিয়েছে।
২০১৬ সালে ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন চাক হাওয়েনস্টেইন। এবার দিয়েছেন জো বাইডেনকে।
আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে চারজন প্রেসিডেন্টের একজন ট্রাম্প, যাঁরা দ্বিতীয় মেয়াদে জিততে পারেননি। এ ছাড়া দ্বিতীয় মেয়াদে পপুলার ভোটে হেরে যাওয়া একমাত্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শক্ত নেতৃত্বের মাধ্যমে মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলা করেও নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারতেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যেমন অর্থনৈতিক মহামন্দা কাটিয়ে উঠতে নেতৃত্ব দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন ডি রুজভেল্ট। এ ছাড়া টুইন টাওয়ার হামলার পর ইরাক-আফগানিস্তানে যুদ্ধ লাগিয়েও জনপ্রিয়তার সঙ্গে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ।