হাওড়ায় সংঘর্ষ : সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ ঘোষণা
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিজেপির নেতা-নেত্রীদের কটূক্তির প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে গতকাল শুক্রবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলায় পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে আগামী সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত হাওড়ায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার ঘোষণা দেয় রাজ্য সরকার। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এক বিবৃতিতে জানান, হাওড়ার সাম্প্রতিক অস্থিরতা সামাল দিতে ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িক বন্ধ রাখার পদক্ষেপ নিয়েছে। রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে অনুরোধ করা হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এ সিদ্ধান্ত।
অতিরিক্ত মুখ্যসচিব জানান, হাওড়া সিটি পুলিশ এবং হাওড়া রুরাল পুলিশের আওতাভুক্ত জেলার সব এলাকাতে এই সিদ্ধান্ত বলবৎ হবে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার সময় এ নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের প্রক্রিয়া অবিলম্বে চালু হবে।
দিল্লির বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার সাম্প্রতিক বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার ডোমজুড়ের অঙ্কুরহাটি এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে রাস্তা অবরোধ করা হয়। এর জেরে জাতীয় সড়কে আটকা পড়ে অনেক গাড়ি। অবরোধ শুরু হয় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে। টায়ার জ্বালিয়ে ১১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। এর জেরে দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ।
ওই ঘটনার পর শুক্রবারও অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি ছিল হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায়। চেঙ্গাইলে রেল অবরোধের জেরে হাওড়া-খড়গপুর শাখায় দীর্ঘক্ষণ বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল। উলুবেড়িয়া মনসাতলায় বিজেপি গ্রামীণ অফিস ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিজেপিকর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়। পাঁচলায় দফায় দফায় অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা।
পরে ডোমজুর থানাতেও হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। ধুলাগড়ে উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি হয় অবরোধকারীদের। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ ওঠে আন্দোলনকারীদের একাংশের বিরুদ্ধে। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি সামলাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। উত্তপ্ত ছিল সলপের পরিস্থিতিও।
রাজ্যের মুখ্যসচিব জানান, পরিস্থিতি সামলাতে আপাতত সোমবার সকাল পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।