মাওলানার বয়ান, ভূমিকম্পের কারণ জিন্স পরা নারী
পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলামের চেয়ারম্যান মাওলানা ফজলুর রহমান বলেছেন, ‘ভূমিকম্প থেকে মুদ্রাস্ফীতি-সবই হয় জিন্স পরা নারীদের কারণে।’
দেশটির শীর্ষ এই ধর্মীয় নেতা গতকাল শুক্রবার স্থানীয় একটি হোটেলে দেওয়া ধর্মীয় বক্তৃতায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে ‘জিন্স পরিহিতা নারীদের’ বিরুদ্ধে সেনা অভিযান চালানোর অনুরোধ জানান।
জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলামের মুখপত্র শেখইয়ারমামি ডট কমে আজ শনিবার এ-সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশিত হয়। গতকাল দেওয়া বক্তব্যে ফজলুর রহমান নিষিদ্ধ-ঘোষিত কট্টরপন্থী দল তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) বিরুদ্ধে চলা সামরিক অভিযানের সমালোচনা করে বলেন, টিটিপি পাকিস্তানের শত্রু নয়। সেনাবাহিনীকে ঠিক করতে হবে পাকিস্তানের প্রকৃত শত্রু কারা।
ফজলুর রহমান বলেন, ‘টিটিপি আমাদের ভাই এবং রাষ্ট্রের প্রতি তাঁদের ক্ষোভ সমর্থনযোগ্য।’ টিটিপি নেতা আনসার আব্বাসির প্রশংসা করে তিনি আরো বলেন, ‘টিটিপি অতীতে আমাদের পথ দেখিয়েছে, ভবিষ্যতেও দেখাবে। দলটির আত্মঘাতী বোমা হামলা অন্যকিছু নয়, বরং আল্লাহর ক্রোধ। তাঁদের উচিত, দেশের প্রকৃত শত্রু জিন্স পরা নারীদের চিহ্নিত করে ধ্বংস করে দেওয়া।’
এর আগেও বিভিন্ন বিষয়ে ফতোয়া দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন মাওলানা ফজলুর রহমান। তাঁকে টিটিপির ধর্মীয় গুরু ও পরিকল্পনার প্রধান হিসেবে ২০০৭ সাল থেকেই সন্দেহ করে আসছে পাকিস্তানি গোয়েন্দা ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা। কিন্তু দেশটির জনগণের কাছে তাঁর অবস্থান ও জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী বলে তাঁর বিরুদ্ধে দেশটির সরকার কখনো কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান।
উল্লেখ্য, টিটিপি বা তেহরিক-ই-তালেবানকে পাকিস্তান ও বিশ্বব্যাপী এ সময়ের শীর্ষ সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে দেখা হয়। উগ্রবাদী ও নিষিদ্ধ এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রয়েছে অসংখ্য সশস্ত্র সদস্য। বর্তমানে পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে এ দলের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে আছে। পাকিস্তান সরকার ও আফগানিস্তানে নিয়োজিত ন্যাটো বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে তারা। তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের চালানো অসংখ্য সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত। এসব সন্ত্রাসী হামলায় মারা গেছে সামরিক বাহিনীর সদস্য ছাড়াও অগণিত নিরীহ বেসামরিক মানুষ। বিভিন্ন সময় এসব হত্যাকাণ্ডের দায় তারা স্বীকার করে নিয়েছে।