শর্ত না মানলে ইরানের ওপর ফের নিষেধাজ্ঞার চিন্তা ষড়শক্তির
পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরের পর শর্ত মেনে চলতে ব্যর্থ হলে, ইরানের ওপর থেকে তুলে নেওয়া জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাগুলো আবার কার্যকর হবে। ষড়শক্তির এক বৈঠকে আজ রোববার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে।
পারমাণবিক সংকট এড়াতে আসছে ৩০ জুনের মধ্যে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স ও জার্মানির চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। ষড়শক্তির মধ্যে কয়েকটি বিষয়ে আপত্তি থাকায় চুক্তিটি প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু আজকের সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে চুক্তিটির পথের বাধা অনেকটাই অপসারিত হলো।
এপ্রিল মাসের শুরুতে দুই পক্ষ একটি প্রাথমিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। চূড়ান্ত চুক্তির জন্য কয়েক দফা আলোচনা হলেও ষড়শক্তির আপত্তির মুখে বারবার তা পিছিয়ে যায়।
ইরানের সাথে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর মতবিরোধের প্রধান বিষয় ছিল এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারটি। ষড়শক্তির বক্তব্য ছিল, শর্ত না মানলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনরায় কার্যকর হবে। এই প্রস্তাবের পক্ষে ছিল পশ্চিমা দেশ তথা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্স। আর বিরোধিতা করেছিল রাশিয়া ও চীন।
পশ্চিমাদের দাবি, ইরান চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করলে নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটি ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। এ ব্যাপারে এক পশ্চিমা কূটনীতিকের সূত্রে রয়টার্স জানায়, এবার রাশিয়া ও চীনসহ ছয়টি রাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে একমত হয়েছে।
এক পশ্চিমা কূটনীতিক রয়টার্সকে বলেন, ‘রাশিয়া, চীনসহ ষড়শক্তির সবার মধ্যে ভালো ধরনের বোঝাপড়া হয়েছে। এখন দেখার বিষয় হলো, ইরান এতে রাজি হয় কি না।’
আরেক পশ্চিমা কর্মকর্তা ষড়শক্তির ‘একমত হওয়ার’ বিষয়টিকে অভিহিত করেছেন ‘আপাতত একমত হওয়া’ বলে, কারণ চূড়ান্ত কিছু নির্ভর করছে ইরানের ওপর।
ইরানের এক কূটনীতিক বলেছেন, তাঁরা ইরানের ওপর পুনর্নিষেধজ্ঞা জারির বিকল্প হিসেবে কায়েকটি উপায় নিয়ে ভাবছেন।
কিন্তু ইরানের ওপর পুনর্নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনাটি কীভাবে কার্যকর হবে, তা নিয়ে কর্মকর্তারা বিস্তারিত আলোচনা করেননি। নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপের ক্ষেত্রে রাশিয়া বা চীন যদি ভেটো দেয়, তখন যুক্তরাষ্ট্র বা নিরাপত্তা পরিষদের বাকি সদস্যদের কী হবে, তা নিয়ে কোনো দিকনির্দেশনা এখনো নেই।
পশ্চিমাদের অভিযোগ, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাতেই পরমাণু কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু ইরান বরাবরই সে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই তারা পরমাণু কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।